নিজস্ব সংবাদদাতা: ৭৩ তম প্রজাতন্ত্র দিবসে ভয়াবহ দুর্ঘটনারব স্বাক্ষী থাকল দুর্গাপুর (Durgapur)। একটি বৈধ খোলামুখ খনিতে কয়লার চাঙড় ধসে পড়ে অন্ততঃ ৪জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরও অবস্থা গুরুতর বলেই জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ভোররাতে ঘটনাটি ঘটে লাউদোহার মাধাইপুর খোলামুখ খনিতে (Open Coal Mine)। এই খনিতে কয়লা খনি থেকে কয়লা চুরি করতে গিয়েই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই পরিবারের ৫সদস্য ছাড়াও আরও ৫জন গিয়েছিল কয়লা চুরি করতে। একটি পাশে বিরাট একটি কয়লার চাঁই ধসে পড়ে ৫ জনের ওপর। সব্বাই ভারি ওই চাঁইয়ের তলায় চাপা পড়ে যান। অন্যদিকে থাকা বাকি ৫জন ছিটকে পালাতে সক্ষম হন। তাঁরাই লোকালয়ে গিয়ে খবর দিলে পুলিশ ও স্থানীয় জনতা ছুটে আসে। কয়লাখনি কর্তৃপক্ষর ভারী যন্ত্রাংশ দিয়ে চাঁই সরানোর কাজ শুরু হয়। পাশের দিকে থাকায় অপেক্ষাকৃত কম আহত কিশোরকে আগে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এরপর একে একে ৪টি মৃতদেহ। এঁদের মাথা, হাড়গোড় গুঁড়িয়ে গেছে।
বিক্ষোভের আশঙ্কায় ঘটনাস্থলে আসে বিশাল সংখ্যক পুলিশ।এলাকার বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, যেদিন থেকে খোলামুখ খনি হয়েছে, তখন থেকেই এখানে কয়লা চুরি হচ্ছে। প্রতিদিন ভোর রাতে চলে অবৈধভাবে কয়লা প্রচারের চেষ্টা। প্রশাসন চুরি বন্ধে আগে ব্যবস্থা নিলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা। মৃতের পরিবারের এক আত্মীয় জানান, চুরি নয়, পড়ে থাকা কয়লা সংগ্ৰহ করেন তাঁরা। তাঁরা খুবই গরিব। এলাকায় কোনও কাজ কারবার নেই। তাই কিছু রোজগারের আশায় খনিতে যান। যদি অল্পবিস্তর কয়লা পান, তা বিক্রি করে কয়েকদিন চলে যাবে তাঁদের। সকালে খবর পান, খনিতে ধস নেমেছে। কয়েকজন মারাও গেছেন। খবর পেয়ে দেখতে যান। তখনই দেখেন, তাঁর পরিবারের সদস্যরাই মারা গেছেন।
খবর পেয়ে পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তিনি বলেন, অবৈধভাবে কয়লা কাটতে ১০ জন গিয়েছিল। তার মধ্যে ৫ জন প্রাণে বেঁচে বেরিয়ে যায়। আর ৫ জন চাপা পড়ে যায়। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও এমনটা করে চলেছে এরা। এই অবৈধভাবে কয়লা কাটার ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা তিনি দেখছেন। স্থানীয় গরীব মানুষগুলির দাবি, কাজকর্ম না জুটলে এভাবেই মরতে হবে তাঁদের। যাঁরা চুরি চুরি বলে চিৎকার করছেন তাঁরা কাজ দিয়ে দেখুননা চুরি বন্ধ হয় কিনা?