নিজস্ব সংবাদদাতা: ”রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে মিডিয়া অদ্ভূত রকমের নীরব। নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে রাজ্য যেখানে বর্বরতা, বীভৎসতা, অমানবিকতার শিকার হচ্ছে সেখানে দাঁড়িয়ে এই সমস্ত কিছু দেখার পরও মিডিয়া, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ অদ্ভুদ ভাবে নীরবতা পালন করছে। কী দেখছি আমরা? হিংসা, লুট, খুন, বলাৎকার, অগ্নিসংযোগ, মানুষের সম্পত্তি ধ্বংস করা হচ্ছে। মিডিয়া নীরব।” বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের বন্দর শহর হলদিয়ায় শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলির কর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে যোগ দিতে এসে পশ্চিমবাংলার সংবাদমাধ্যম সম্পর্কে এমনই আক্ষেপ ব্যক্ত করে গেলেন রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
রাজ্যপাল শিল্পকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকের পাশাপাশি বন্দর ও শিল্পকারখানা পরিদর্শনের পর শিল্প কর্তাদের সাথে একটি বৈঠক করেন। তারপরই মিলিত হন সাংবাদিকদের সঙ্গে। সেখানেই রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মিডিয়ার এই নীরবতা প্রসঙ্গে আক্ষেপ জানিয়ে রাজ্যপাল আরও বলেছেন, ” যখন মিডিয়া নীরবতা পালন করে, তখন সে কার্যক্ষমতা হারায়, তার মস্তিস্ক কাজ করেনা। যে কারণেই কিছু সংবাদমাধ্যম এতটাই অথর্ব হয়ে পড়েছে যে, মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার ঘটনায়, অমানবিক বর্বরতার পরও তার প্রতিফলন ঘটতে দেখা যাচ্ছেনা সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে।”
রাজ্যপাল বলেন, ” মিডিয়ার কাছে আমার আবেদন আপনারা এটা বোঝার চেষ্টা করুন যে, সারা পৃথিবী জুড়ে পরিবর্তন আসছে, ভারতের উত্থান হচ্ছে, ভারত এগুচ্ছে। সেই অগ্রসর ভারতের অংশীদার হতে হলে রাজ্যের এই বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন আবশ্যিক। সেই পরিবর্তনে সরকারের পাশাপাশি আপনাদেরও ভূমিকা আছে।” এরপরই রাজ্যপাল এটা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে পরিস্থিতিকে এড়িয়ে না গিয়ে তাকে যদি প্রকাশ্যে আনা যায় তবেই পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব।
এদিন বহরমপুরে এক প্রেমিকাকে প্রেমিকের নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করার ঘটনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা রাজ্যপালের মতামত জানতে চাওয়া মাত্রই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়ে রাজ্যপাল বলেছেন, “এব্যাপারে আমি কিছুই বলতে চাইনা। কারন যারা নির্বাচনোত্তর হিংসা, খুন, অগ্নিসংযোগ যা কিনা বাংলার ইতিহাসে কোনও দিন ঘটেনি নিয়ে একটা শব্দও লেখেননি তাঁদের এই বিষয়ে কিছু এখুনি কিছু বলছিনা। বলছিনা এই কারনেই যে তার আগে আমি মিডিয়ার সঙ্গে একটি দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছি। সেই বন্ধনের একটাই উদ্দেশ্য সত্যকে উদঘাটন করা, সত্যকে প্রকাশ্যে আনা। আমি এ নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আবার বৈঠক করব।”
এদিন বাবুল সুপ্রিয়কে বিধায়ক হিসাবে শপথ বাক্য না পাঠ করানোর বিষয়ে রাজ্যপালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সংবিধান আমাকে এবিষয়ে আমাকে সুস্পষ্ট ক্ষমতা দিয়েছে। আমি সেই দায়িত্ব অন্যকে অর্পণ করতে পারি, করেওছি। ভুলে যাবেননা যে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছি।