নিজস্ব সংবাদদাতা: কিষানদার গ্রেফতারের বদলা নিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে দেশের বৃহত্তম রেল জংশন খড়গপুর রেল স্টেশনকে। পাশাপাশি চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গল অধ্যুষিত থানা এবং ঝাড়গ্রাম জেলাতেও । প্রজাতন্ত্র দিবসের একদিন আগে থেকেই খড়গপুর রেল স্টেশন জুড়ে চলছে জোরদার তল্লাশি অভিযান।

তল্লাশি অভিযানে যৌথ ভাবে সামিল হয়েছে জিআরপি অথবা রাজ্য রেল পুলিশ এবং রেলের নিজস্ব সুরক্ষা বাহিনী আরপিএফ। স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি চলছে খড়গপুর রেলস্টেশনের এক থেকে আট নম্বর প্ল্যাটফর্ম। প্ল্যাটফর্মের আনাচে কানাচে তো বটেই স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা দূরপাল্লার ট্রেনের কামরায় কামরায় চলছে তল্লাশি। মেটাল ডিটেক্টর ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে স্টেশনের ভেতর এবং স্টেশন চত্বরের বাইরেও খোঁজ চলছে সন্দেহভাজন কোনও কিছুর অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তা দেখার।
উল্লেখ্য, ১৯ নভেম্বর সকালে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা জেলার কান্দ্রা থানা এলাকায় এক টোল প্লাজাতে দুধ সাদা স্করপিও গাড়ি থেকে প্রবীণ মাওনেতা কিষান দা এবং তাঁর স্ত্রী শীলা মারান্ডি সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। এরপরই মাওবাদীদের তরফে ১৫ থেকে ১৯ নভেম্বর এই পাঁচদিন ‘প্রতিরোধ দিবস’ পালনের আহ্বান জানানো হয়েছিল মাওবাদীদের পক্ষ থেকে। কিন্তু তারপর মাওবাদীরা চুপচাপ বসে থাকবে এমনটা মনে করছেনা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বরং স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্রদিবসের মত দিনগুলিকে তাঁরা কালোপতাকা উত্তোলন, হিংসাত্মক কাজের জন্য বেছে নেয়। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রজাতন্ত্র দিবস যা কিনা কিষান-দা গ্রেফতারের পর প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবস তাই মাওবাদী অধ্যুষিত ছত্তিসগড়, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানার মতো রাজ্যে বিক্ষিপ্ত হিংসার আশঙ্কা রয়েছে।
ইতিমধ্যেই মাওবাদীদের এই আশঙ্কা মাথায় রেখে, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য গোয়েন্দাদের একাধিক এজেন্সি এরাজ্যের পুলিস প্রশাসনকে সতর্ক করেছে। এরাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার মতো জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে পুলিস প্রশাসনকে বাড়তি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিশেষকরে, ঝাড়খণ্ড-বাংলা সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা থাকছে।
এদিন ভোররাত থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের জঙ্গল অধ্যুষিত থানার জাতীয় ও রাজ্য সড়কের পাশাপাশি গ্রামীন সড়ক যোজনার রাস্তাগুলিতেও বিশেষ ভাবে টহল দিতে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। রাজ্যের দুই প্রবেশমুখ ঝাড়খন্ড সংলগ্ন চিচড়া ও ওড়িশা সীমান্তের সোনাকনিয়া এলাকায় বিশেষ নাকা চেকিং করছে রাজ্য পুলিশের বাহিনী। দুই জেলার সমস্ত টোলপ্লাজা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ নাকা চেকিং চালাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ। বিভিন্ন বাস টার্মিনাস, রেলস্টেশন জুড়ে চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।