Friday, May 3, 2024

Haldia: ‘শশ্মান’ হতে বসা হলদিয়া নিয়ে চাপে মমতা! তুলোধুনা করলেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: নিজের দলের নেতাদের তোলাবাজি আর খেয়োখেয়িতে কার্যত শশ্মান হতে বসেছে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল। উৎপাদন কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন শিল্পসংস্থাগুলি, এমনকি একদিনের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেছে কারখানা। কৃত্তিম শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করে কারখানাগুলির ওপর চলছে জুলুমবাজি। অবস্থা এতটাই খারাপ যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই শীর্ষ শ্রমিক নেতাকে জেলে ভরেছে পুলিশ, বহিস্কার করেছে দল। কিন্তু তারপরেও হুঁশ ফেরেনি তৃনমূলের। দুই নেতাকে বহিস্কারের ২দিনের মধ্যেই শিলান্যাস ফলকে কেন নাম নেই এই অভিযোগ তুলে সেই নেতার অনুগামীরা ভাঙচুর করেছে একটি প্রকল্পের শিলান্যাস ফলক। দলীয় নেতা কর্মীদের এই অবাঞ্ছিত দুর্বৃত্তায়ন থেকেই কী চাপে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? অন্তত তেমনটাই মনে হয়েছে বৃহস্পতিবার রাজ্যের শীর্ষ আমলা ও পুলিশ কর্তাদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে। যেখানে নজিরবিহীন ভাবেই তাঁকে তুলোধুনা করতে দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ সুপার অমরনাথকে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠকে পূর্ব মেদিনীপুরের এসপির উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এসপি কোথায়? লুকিয়ে আছে? তোমার জেলা নিয়ে অভিযোগ পাচ্ছি। কাউকে কাউকে সাজিয়ে পরিকল্পিতভাবে হিংসা বাঁধানোর চেষ্টা হচ্ছে। অনেকদিন বলেছি, কিছু করোনি, আমাকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। কোনও কোনও রাজনৈতিক নেতা ইন্ধন দেয়, তাই হিংসার ঘটনা ঘটে। কাজ করতে ভয় লাগছে? তোমাকে রাজ্যপাল কি ফোন করেন? রাজ্যপাল কি ফোন করে বলছেন এটা করবে না, ওটা করবে না? এরকম করালেও তুমি বলবে না, তুমি কিন্তু রাজ্য সরকারের।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ তুমি তোমার মতো কাজ করবে, ভাল কাজ করবে বলে ওখানে দিয়েছিলাম। হলদিয়ায় অভিযোগ পেলাম, বাধ্য হয়ে ২জনকে গ্রেফতার করে সরাতে হয়েছে। ওরা এক্সাইড, ধানুকা ইন্ডাস্ট্রির কাজে অসুবিধে করছিল। কাজ করতে অসুবিধে মনে হলে আমাকে সরাসরি জানাও। কেউ বলে দেবে, এটা করবে না, ওটা করবে না, সেটা শুনবে না।’ উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রী যে ঘটনার কথা বলেছেন সেই ঘটনায় ‘শ্রমিক অসন্তোষ’ থেকে একদিন উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছিল হলদিয়া এক্সাইড। অন্যদিকে তার কয়েকদিন আগেই হলদিয়ার একটি সার কারখানার এক কর্মকর্তা একটি সরকারি অনুষ্ঠানে সরাসরি দুই মন্ত্রীকে অভিযোগ করেছিলেন, কৃত্তিম শ্রমিক অসন্তোষ ঘটিয়ে তাঁদের উৎপাদিত দ্রব্য লোডিং আনলোডিং বন্ধ রাখা হয়েছে আর সেই কারণে তাঁরা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন কারন গুদামে আর সার রাখার জায়গা নেই।’

শুধু ওই কোম্পানিই নয়, হলদিয়াতে আইওসির মত বৃহৎ প্রতিষ্ঠানকেও চরম জুলুমবাজির শিকার হতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। ছোট কারখানাগুলির অবস্থা আরও খারাপ। চলতি সরকার ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক কারখানায় তালা ঝুলছে। নতুন করে বিনিয়োগ করতে রাজি নয় বড় কারখানাগুলি। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, কারখানা স্থাপনের জন্য জমি নিয়েছিলেন এমন অনেক কোম্পানি পিছিয়ে গেছেন কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ থেকে। কারখানা গুলিতে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমছে। অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে শাসকদলের একগোষ্ঠীর সঙ্গে অন্য গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বেও ভুগতে হচ্ছে কারখানাগুলিকে। নিজেদের দলের ওপর নিজেদেরই নিয়ন্ত্রণহীনতার হতাশাই যেন এদিন ক্রোধ হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের ওপর।

- Advertisement -
Latest news
Related news