নিউজ ডেস্ক : আগামী শনিবার থেকে ডুয়ার্সের মধ্যে দিয়ে চলবে পর্যটন উপযোগী ভিস্তাডোম(vistadome) ট্রেন। ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসাকে আরও চাঙ্গা করার জন্যই এই অত্যাধুনিক ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলদপ্তর। বর্তমানে এই দৃষ্টিনন্দন বাহারি ট্রেনকে ছুটতে দেখা যায় কোঙ্কন রেলপথে। এবার ডুয়ার্সের পথেও দেখা মিলবে ভিস্তাডোম ট্রেনের। অত্যন্ত বিলাসবহুল ও স্বচ্ছ ট্রেনের কোচ তৈরি হয়েছে পর্যটকদের কথা ভেবেই যাতে ট্রেনের ভেতর থেকেই তাঁরা দর্শন করতে পারেন ডুয়ার্সের অপরূপ সৌন্দর্য। অথচ সেই ট্রেনের স্টপেজই নেই ডুয়ার্স পর্যটনের অন্যতম স্থান মাদারিহাট। প্রতি শুক্র, শনি এবং রবিবার চলা এই ট্রেনটির দাঁড়াবে মাত্র ৬টি জায়গায়। আর তার মধ্যে নেই মাদারিহাট। যেন পর্যটন ম্যাপ থেকেই ছেঁটে ফেলা হয়েছে মাদারিহাটকে। যে কারনে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী ও অধিবাসীরা। বুধবার মাদারিহাট রেলস্টেশনে ভিস্তাডোম কোচের স্টপেজের দাবি নিয়ে প্রায় এক ঘন্টা ধরে ধরনায় বসেন মাদারিহাটের এলাকাবাসী।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ রেলের তরফে মাদারিহাটবাসীকে বঞ্চিত করা হয়েছে এই অত্যাধুনিক পর্যটন পরিষেবা থেকে। উল্লেখ্য রেলের তরফে ডুয়ার্স পর্যটনের কথা মাথায় রেখেই নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে আলিপুরদুয়ার জংশন অবধি অত্যাধুনিক কাঁচ দিয়ে তৈরি কোচ বিশিষ্ট একটি ভিস্তাডোম ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডুয়ার্স এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য l সেই ট্রেনের স্টপেজ দাওয়া হয়েছে সেবক, মালবাজার , হাসিমারা, রাজাভাতখাওয়া ও আলিপুরদুয়ার, এই ৬টি জায়গায়। অথচ আশ্চর্যজনক ভাবে ডুয়ার্সের সবথেকে বড় পুরনো এবং সবথেকে জনপ্রিয় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া মাদারিহাট রেলস্টেশন স্টপেজ দেওয়া হয়নি এই দাবি নিয়ে মাদারিহাট রেল স্টেশনে ডেপুটেশন প্রদান করেন এলাকাবাসী পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী শিলিগুড়ি জংশন বা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে এই কোচটি প্রতিদিন সকালে সেভক হয়ে আলিপুরদুয়ারে পৌঁছবে। আবার আলিপুরদুয়ার থেকে ফিরে আসবে। ৪৪ আসন বিশিষ্ট এই কোচটির বড় একটি অংশ ঘেরা থাকবে স্বচ্ছ কাচে। যাতে ডুয়ার্সের অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য কোচে বসেই পর্যটকরা উপভোগ করতে পারেন। মাদারিহাটের পর্যটন ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, “এখানকার পর্যটন শিল্পের প্রতি অনবরত বিমাতাসুলভ আচরণ করছে রেল দপ্তর l তাঁরা জানেন যে মাদারিহাট একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। অথচ সেখানে স্টপেজ না থাকায় বহু পর্যটক মাদারিহাট এড়িয়ে যাবেন। কারন তাঁরা এখানে নামতে বা এখান থেকে ট্রেন ধরার সুযোগ পাচ্ছেননা। আমাদের দাবি ইতিমধ্যে মানতে হবে এবং ভিস্তাডোম ট্রেনের স্টপেজ দিতে হবেl”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিস্তাডোম কোচে বেশকিছু বিশেষত্ব থাকে। বাইরের দৃশ্য সহজেই যাতে দেখা যায়, তার জন্য এই কোচের জানালা অনেক বড় হয়। কোচের ছাদটিও স্বচ্ছ থাকে। যাতে পর্যটকরা আশপাশের সবকিছুই পরিষ্কার দেখতে পান। ভিস্তাডোম কোচের ভিতরে যাত্রীদের যে আসন থাকে, সেগুলি ১৮০ ডিগ্রি ঘোরে। ফলে যাত্রীরা ইচ্ছেমতো যেকোনও দিকে ঘুরতে পারেন। প্যান্ট্রিকার থাকবে। এছাড়াও বিমানের মতো এখানে কনটেন্ট অন ডিমান্ড থাকবে। অর্থাৎ ল্যাপটপ বা মোবাইলে যদি কেউ কোনও সিনেমা দেখতে চান, তার ব্যবস্থাও রাখা হবে। কোচে ইন্টারনেট পরিষেবা মিলবে। কোচের পিছনের অংশে গ্যালারি থাকবে।