নিজস্ব সংবাদদাতা: জোড়া নিম্নচাপের ফলায় বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গ বিশেষ করে সমুদ্র উপকূল। মায়ানমারে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত ইতিমধ্যেই ছুঁয়ে ফেলেছে বঙ্গীয় দক্ষিণপূর্ব উপকূল। অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত আরও একটি নিম্নচাপ দিঘা ছুঁইছুঁই। যার ফলে অতি গভীর নিম্নচাপ এরপর ওড়িশার বালেশ্বর ও বাংলার সাগর দ্বীপের মধ্যে দিয়ে আজ সন্ধেয় প্রবেশ করবে স্থলভাগে। তারপর ক্রমশ উত্তর ওড়িশা, বাংলা ও ঝাড়খণ্ড পেরিয়ে ছত্তীসগঢ়ের দিকে এগোবে। এই নিম্নচাপ পুরোপুরি খড়গপুর, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের ওপর বেশ কিছুক্ষণ সক্রিয় থাকায় সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টির পরিমান বাড়বে ওই তিন শহর ও সংলগ্ন এলাকায়। ফলে রাতভর বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বইবে ওই এলাকায়।
অন্যদিকে জোড়া নিম্নচাপের ফলায় সমুদ্র উপকূল কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঝড়ো হওয়ার সাথে ভারী বৃষ্টি চলছে উপকূলের জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলি বিশেষ করে সুন্দরবন, ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, নামখানা, বকখালি, দিঘা, শংকরপুর, মন্দারমনি, তাজপুর, খেজুরি, নন্দীগ্রাম, হলদিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে। উথাল পাথাল হচ্ছে সমুদ্র।তারই প্রতিক্রিয়ায় মাছ ধরতে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে ডুবল ট্রলার। ঘটনায় নিখোঁজ -নামখানা এলাকার ১৮ জন মৎস্যজীবী। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, ১৬ অগাস্ট অর্থাৎ মঙ্গলবার ‘এম ভি সত্যনারায়ণ’ নামে একটি ট্রলার মাছ ধরতে কেঁদো দ্বীপের উদ্দেশে রওনা দেয়। তাতে মোট ১৮ জন মৎস্যজীবী ছিলেন। জানা যাচ্ছে, নিম্নচাপ সংক্রান্ত আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তা পেয়ে গভীর সমুদ্র থেকে ফিরে আসছিল ওই মাছ ধরার ট্রলারটি। ওই সময়েই আচমকা কেঁদো দ্বীপের কাছে চরে ধাক্কা লেগে উল্টে যায় ট্রলারটি। মোট ১৮ জন মৎসজীবীর তারপর থেকে কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা। ইতিমধ্যেই নামখানা ও ডায়মন্ড হারবার থেকে উদ্ধারকারীরা একাধিক ট্রলার নিয়ে দুর্ঘটনাস্থলের দিলে রওনা দিয়েছেন। খবর পাঠানো হয়েছে ভারতীয় কোস্ট গার্ড (Indian Coast Gurd) বাহিনীর কাছেও। ওই ১৮ নিখোঁজ মৎস্যজীবীর খোঁজ চালাচ্ছে এনডিআর এফ৷ দীঘা, মন্দারমনিতে আবহাওয়া বিরূপ থাকার কারণে ট্যুরিস্টদের সমুদ্রে নামতে দেওয়া হচ্ছে না৷
আলিপুর আবহাওয়ার দফতর জানিয়েছে, মায়ানমার উপকূলের তৈরি হওয়া অতি শক্তিশালী নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ স্থলভাগে প্রবেশ করেছে সব মিলিয়ে এই দুই পরিস্থিতির জেরে লাগাতার বৃষ্টিতে ভাসতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের জেলাগুলি৷ যে কারনে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় জারি হয়েছে অরেঞ্চ অ্যালার্ট৷ সমুদ্র উপকূলবর্তী দুটি জেলায় রেড অ্যালার্টও জারি করা হয়েছে৷ আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিমি গতিতে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। অন্তত শনিবার অবধি কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে তুমুল বৃষ্টি হবে৷