নিজস্ব সংবাদদাতা: এবার সরকারি কর্মচারীদের মতই কোয়ারেন্টাইন লিভ বা নিভৃতবাসের ছুটি পাবেন স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক বা শিক্ষা কর্মীরাও। অর্থাৎ সরকারি কর্মচারীদের মতই পরিবারের কেউ করোনা আক্রান্ত হলে স্কুল-কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিভৃতবাসকেও ছুটি হিসেবে গণ্য করা হবে।

৪ঠা জানুয়ারি, মঙ্গলবার এমনই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল বিকাশ ভবন থেকে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিদ্যালয় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনোও স্তরের শিক্ষক শিক্ষিকা কিংবা শিক্ষাকর্মী যিনি নিয়মিত এবং পুরোদমে কর্মরত (Regular or Whole Time) এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এরজন্য তাঁদের সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক, পৌরসভার চিকিৎসক কিংবা কোনও রেজিস্টার চিকিৎসকরের সার্টিফিকেট দাখিল করতে হবে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে সাধারণভাবে এই ছুটির মেয়াদ হবে ২১ দিন তবে ব্যতিক্রমী বিষয় হলে ৩০দিন অবধি এই ছুটি অনুমোদন করা যেতে পারে। এই ছুটি তাঁদের মূল ছুটি থেকে কাটা হবেনা। তাঁদের বেতন এবং ভাতার ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়বেনা। অতিমারী পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখে সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ার পরিবেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা নজরে রেখে এবং স্বাস্থ্যকল্যাণ দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা স্বাপেক্ষে মোট ৫টি সংক্রমনের ক্ষেত্রে এই কোয়ারেন্টাইন লিভ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
ওই পাঁচটি ক্ষেত্র হল সার্স (SARS), মার্স( MARS), করোনা (Covid 19), আ্যভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (H5NI)/নোভেল ইনফ্লুয়েঞ্জা, Crimean Congo Haemorrhagic Fever (CCHF)। এই পাঁচটি ক্ষেত্রে উপযুক্ত চিকিৎসকের সার্টিফিকেট সহ নিজের প্রাতিষ্ঠানিক প্রধানের কাছে আবেদন করতে হবে শিক্ষক শিক্ষিকা অধ্যাপক অধ্যাপিকা কিংবা শিক্ষাকর্মীদের। তিনি অনুমোদন করলেই এই ছুটি পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
উল্লেখ্য এই ধরনের ঘোষণা সরকারি কর্মচারীদের জন্য আগেই ঘোষণা করেছিল সরকার কিন্তু তার মধ্যে সরকার পোষিত বা সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত স্কুলগুলির শিক্ষকদের ক্ষেত্রে সে বিষয়ে কোনও উল্লেখ করা হয়নি। শিক্ষক মহলের বক্তব্য ছিল , তাঁদের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশিকা জারি করতে হবে। তাঁদের পরিবারের লোকেরাও করোনা আক্রান্ত হতেই পারেন। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের কেউ স্কুলে গেলে তাদের থেকে করোনা সংক্রমণ হতে পারে। ফলে স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের নিভৃতবাসে থাকতে হবে। এই আশঙ্কা প্রকাশ করে ছুটির দাবি তুলেছিলেন বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন।
এই ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক সংগঠনগুলি। রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধানদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসস’য়ের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি জানিয়েছেন, আমরা আগে থেকেই শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মীদের জন্য এই পৃথক বিজ্ঞপ্তি জারি করার দাবী তুলেছিলাম। রাজ্য শিক্ষা দপ্তর সেই দাবী মেনে নেওয়ায় তাঁদের ধ্যন্যবাদ জানাচ্ছি। এই ঘোষণা শিক্ষক সমাজকে শুধু আশ্বস্ত করবে তাই নয় এরফলে অযথা বিতর্ক ও আইনি জটিলতা থাকার সম্ভাবনাও দূর হল।