শশাঙ্ক প্রধান : দোকান বন্ধ করার আগে প্রায় সব দোকানের মালিকই ধুপ জ্বালিয়ে আসেন। দেবতার উর্ধ্বে প্রার্থনা যেন আগামীকালের ব্যবসা, কেনাকাটা ভালো হয়। কিন্তু সেই ধুপই যে সর্বনাশের কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে তা কে জানত? বুধবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার অন্তর্গত একটি মুদী দোকানে আগুন লাগার ঘটনার কারন হিসাবে এরকমই একটি সম্ভবনা খুঁজে পাচ্ছে পিংলা পুলিশ।

কানাইলাল জানিয়েছেন, ‘ রোজকার মতই প্রায় ৯টা নাগাদ দোকান বন্ধ করার আগে আমি ধুপ দিয়ে দেবতাকে প্রণাম করেছি। আমার বাড়ি সামান্য কিছুটা দুরেই। বাড়ি পৌঁছানোর কিছুক্ষনের মধ্যেই দোকানে আগুন লাগার কথা আমাকে ফোন করে জানান স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়ার। আমাদের সেন পাড়া এলাকাটি যথেষ্ট বড়। এখান থেকেই বালতি নিয়ে প্রায় ৫০জন মিলে ছুটে যাই। ইতিমধ্যে স্থানীয়রাও হাজির হয়েছিলেন। প্রথমে স্থানীয় ডোবা থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তির সাবমার্শিবল পাম্প চালু করে দেন জলের জন্য। সবাই মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল কিন্তু ততক্ষণে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। তবে আশার কথা সবার এই চেষ্টার ফলে আশেপাশের দোকানগুলো রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এমনিতেই রাত ৯টার আগে থেকেই বাজার ফাঁকা হতে শুরু করে। তার ওপর বুধবার রাত ৮ টা থেকে কুয়াশার প্রকোপ বাড়তে থাকায় বাজার একটু আগেই বন্ধ হতে শুরু করেছিল। ঠিক ওই সময় আমরা কয়েকজন মিলে ওই জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলাম। এমন সময় আমাদের চোখে পড়ে দোকানে আগুনের অস্তিত্ব। চিৎকার চেঁচামেচি করে লোক জোগাড় করি। এরপর স্থানীয় কিছু ব্যক্তি বালতি ইত্যাদি জোগাড় করে নিজেরাই স্থানীয় একটি ডোবা থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। কিন্তু আগুনের ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে প্রচন্ড তাপের জন্য দোকানের আশেপাশে যাওয়া যাচ্ছিলনা। অনেক দুর থেকেই জল দিতে হচ্ছিল। ফলে জলও পর্যাপ্ত দেওয়া সম্ভব হচ্ছিলনা। ফলে দোকানটি পুরোপুরি পুড়ে যায়। তবে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে এই দোকানের লাগোয়া একটি মিষ্টি দোকান ও পান কাম ফাস্টফুড স্টলকে।
স্থানীয় জনতার সঙ্গে সহায়তার জন্য হাজির হয়েছিলেন স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়ার। খবর পেয়ে হাজির হয়ে যান পিংলা থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক সুদীপ ঘোষাল ও অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক, কর্মীরা। আগুন নেভানোর কাজে তদারকি করেন। পুলিশ জানিয়েছে, এই এলাকার সমৃদ্ধ মুদী দোকান এটি। এতজনের প্রচেষ্টা স্বত্বেও পুরোপুরি আগুন নেভাতে সময় লেগেছে প্রায় আধঘন্টা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান দোকানে জ্বেলে রাখা ধুপ থেকেই এই ঘটনা ঘটতে পারে। শর্টসার্কিট হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। দোকানে থাকা ভোজ্য তেল, ডালডা বা ঘি জাতীয় পদার্থ থাকায় আগুন ছড়িয়েছে হু হু করে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। “