Monday, May 20, 2024

Midnapore: পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে ফের লালআগুন ! ৪৯ লাশের শোক বুকে নিয়েই বনাধিকারে দাবিতে সোচ্চার পীড়াকাটা

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: অবৈধ ভাবে জঙ্গলমহলের জমি হস্তান্তর, বন ভূমি এলাকায় উচ্ছেদ, কাঠ সহ জঙ্গলের নানা সম্পদের নির্বিচার লুট, অবৈধ মোরাম খাদানের রমরমা ইত্যাদি বন্ধ করা, হাতির আক্রমনে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার লালপতাকা দখল নিল পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকা। জেলার ৯টি রেঞ্জ দপ্তর ও ২৯টি বীট দপ্তরে বিক্ষোভ ডেপুটেশন সহ পথ অবোরোধে উত্তাল হলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহল। আর এরমধ্যেই সর্বাধিক লাল পতাকার ঢেউ আছড়ে পড়তে দেখা গেল শালবনী থানা এলাকার পীড়াকাটা এলাকায়। যা রীতিমত উচ্ছসিত করেছে বামপন্থী নেতৃত্বকে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

সারা ভারত কৃষক সভার ডাকে এদিন বিক্ষোভ সমাবেশ ও পথ অবরোধ হয়েছে জঙ্গল, জলাভূমির অধিকার, এক টাকার বিনিময়ে জমির সত্ত্ব আদায়, ২০০৬ সালের বনাধিকার আইন কার্যকর সহ এক গুচ্ছ দাবীতে। আর এই অবরোধ আন্দোলনে নজরকাড়া জমায়েত নতুন করে অক্সিজেন জুগিয়েছে শালবনীর পীড়াকাটা যা থেকে জঙ্গলমহলের গরিব দরিদ্র জনতা ফের লাল শিবিরে ফিরছেন বলে মনে করছেন পশ্চিম মেদিনীপুর সিপিএম নেতৃত্ব।

জেলার এক নেতা জানিয়েছেন, ‘গত একযুগে ধ্বংস হয়ে গেছে জঙ্গলমহলের গরিব মানুষের অর্থনীতি। বনাঞ্চলের ভেষজ সম্পদ, কেন্দুপাতা, বাবুই ঘাস ও তার দড়ি, শালপাতা ও তার থালা প্লেট বিক্রি করার সুযোগ নেই। বনজ রসদ ক্রয় করার কেন্দ্র বাম আমলে যা শক্তিশালী করা হয়েছিল জেলার সেই ১৯ টি ল্যাম্পস (Large area multipurpose Societies)গত আট বছর ধরে বন্ধ। সমবায় সহ এমন ল্যাম্পস কেন্দ্র গুলিকে লাটে তুলে জঙ্গল মহলের মানুষের রুটি রুজির সংকেট নামিয়ে আনা হয়েছে। এই ভাবে সরকার ভূখা পেটের নাড়ি ধরে টান দিয়েছে। মানুষ বুঝতে পারছেন মা-মাটি-মানুষের অবদান! তাই ফের লালঝান্ডার তলায় সমবেত হচ্ছেন তাঁরা।’

আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন, ‘একদিকে জঙ্গল লুঠ, অন্যদিকে রুটি রুজির সংকটের পাশাপাশি চাষের জমি থেকে লোকালয়ে হাতির হানায় প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে ফসল হানি, জীবন হানি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ঘরবাড়ি। কিন্তু সঠিক সময়ে মিলছেনা ক্ষতি পূরণ। গত সাত বছরে হাতির হামলায় ৪২ জনের মৃত্যু। ঘরবাড়ি নষ্টের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্ত্রীর বেতন লাখ টাকা ছড়িয়েছে কিন্তু হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেননা।’

সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক মেঘনাদ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘ এই সেই জঙ্গলমহল যেখানে লাল পতাকা হাতে নিয়ে লাল পতাকা নামানোর কাজ শুরু করেছিল খুনি মাওবাদীরা। এক হাতে লাল পতাকা নামিয়ে অন্যহাতে ঘাসফুলের পতাকা তুলেছিল আর এরজন্য তাঁরা পুরো জঙ্গলমহলে ৪০০ মানুষকে খুন করেছিল। শালবনী আর পীড়াকাটায় ৪৯জন বামকর্মীকে খুন করেছিল। সেই কথা মানুষ ভুলে যাননি। মানুষ দেখছেন মাওবাদীদের হাত ধরে ক্ষমতায় আসা সরকারের চেহারা। আর তাই ঢল নেমেছে জনতার। আজ আমরা শুধু মাত্র দাবী পত্র পেশ করে সরকার ও প্রসাশনকে ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করে গেলাম। এরপরও যদি ঘুম না ভাঙে তাহলে দাবী পূরনের লক্ষ্যে সাড়া অবরোধ বিক্ষোভ সহ অচল করা হবে প্রসাশনিক ক্ষেত্রের সমস্ত দপ্তর সে ভূমি দপ্তর সহ বীট ও রেঞ্জ দপ্তর।’ হাজির ছিলেন সৌগত পন্ডা, শ্যাম পান্ডে সহ কৃষক সভার জেলা নেতৃত্ব বৃন্দ।

- Advertisement -
Latest news
Related news