Monday, May 20, 2024

Keshpur: পুলিশকে ‘আধঘন্টা থানায় থাকার’ পরামর্শ দিয়ে কেশপুরে বিপাকে তৃনমূলই ! দুই গোষ্ঠীর ব্যাপক সংঘর্ষ, পুলিশ না থাকলে থাকবেনা তৃনমূল বলল বিরোধীরা

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: পুলিশকে আধঘন্টা থানায় ঢুকে এ.সির ঠান্ডা বাতাস খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর তৃনমূলের নেতা মহম্মদ রফিক। বলেছিলেন, পুলিশ যদি আধঘন্টা থানার ভিতরে ঢুকে বসে থাকে তবে বিরোধীদের চোটপাট একাই সামলে নেবে তৃনমূল। কিন্তু ঘটল উল্টো ঘটনাই। মহম্মদ রফিকের ওই পরামর্শে উৎসাহিত তৃনমূলের দুই গোষ্ঠী এমনই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল যে সামাল দিতে ছুটতে হল সেই পুলিশকেই। তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দুই পক্ষের একাধিক ব্যক্তি। মঙ্গলবার সকাল অবধি পুলিশ ১৩জনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। জানা গেছে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা সবাই-ই তৃনমূল কর্মী সমর্থক। ঘটনাকে কটাক্ষ করে বিরোধীদের বক্তব্য, পুলিশ আধঘন্টা থানায় ঢুকে থাকলে কেশপুর থেকে তৃনমূল দলটাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

জানা গেছে সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন অংশের সঙ্গেই কেশপুরে একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেছিল কেশপুর ব্লক তৃনমূল কংগ্রেস। কেশপুর বাজার ও সংলগ্ন এলাকায় এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মহম্মদ রফিক। কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে ১০০ দিনের প্রকল্প বাবদ বরাদ্দ টাকা বন্ধ করে দেওয়ার প্ৰতিবাদ স্বরূপ এই মিছিলের আয়োজন করা হয় বলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃনমূল কংগ্রেসের পক্ষে জানানো হয়। মিছিলে কেশপুর ব্লকের নেতাদের পাশাপাশি জেলা নেতৃত্বের তরফ থেকে মহম্মদ রফিক এই মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন। রফিক একদা কেশপুরের নেতা হলেও গত দেড় দশক ধরেই মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা। মিছিল শেষে কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি তিনি কেশপুরে বিরোধীরা অশান্তি পাকাচ্ছে এমন ইঙ্গিত করে বলেন, পুলিশের জন্যই কেশপুরে বিরোধীরা রেহাই পেয়ে যায়। “পুলিশ বরং আধঘন্টার জন্য থানার এসি রুমে ঢুকে গিয়ে ঠান্ডা বাতাস খাক। আমরা তৃনমূলের কর্মীরা খেলব, ভয়ঙ্কর খেলা খেলব।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের এমন কী কেশপুর তৃনমূলের একাংশও বলেছেন, মহম্মদ রফিকের ওই বক্তব্য উত্তেজিত করেছিল দলীয় কর্মীদের একাংশকে। এমনিতেই কেশপুর বরাবরই রাজনৈতিক উত্তেজনার জায়গা। রফিকের বক্তব্যে সেই উত্তেজনা আরও বাড়ে। মিছিল শেষে সবাই বাড়ি চলে যায়। রাত্রি বেলায় প্রথম সংঘর্ষের খবর আসে শাঁকপুর থেকে যা পরবর্তীতে পাশের গ্রাম গরগজপোতায় ছড়িয়ে পড়ে। তৃনমূলের দুটি গোষ্ঠী একে অপরের বিরুদ্ধে বাঁশ, লাঠি নিয়ে আক্রমনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দফায় দফায় রাতভর সংঘর্ষের খবর আসতে থাকে কেশপুর থানায়। থানা থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটারের মধ্যে দুই গ্রাম। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে কেশপুর থানা থেকে পুলিশের বাহিনী গিয়ে পৌঁছায় ঘটনাস্থলে। দেখা যায় পুলিশের সামনেই এক পক্ষ অন্য পক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে নারী পুরুষ উভয়কেই। ঘটনায় ৬/৭ জন আহত হন যাঁদের মাথায় কিংবা শরীরের অন্য অংশে আঘাত রয়েছে। পরে পুলিশ কঠোর অবস্থান নিয়ে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

ঘটনার পেছনে মহম্মদ রফিকের উস্কানি মূলক বক্তব্যকেই দায়ী করেছেন কেশপুর বিজেপির নেতা তন্ময় ঘোষ। ঘোষ বলেন, ” রফিক পুলিশকে নিষ্ক্রিয় থাকার আহ্বান জানিয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর খেলার হুমকি দিয়েছিলেন বটে কিন্তু এটা বুঝতে পারেননি যে ভূতপ্রেতকে জাগাতে গেলে ওঝারও বিপদ আছে। কেশপুরে যদি পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকে তবে তৃণমূলকে নিশ্চিহ্ন করতে বিরোধীদের প্রয়োজন হবেনা, তৃনমূল নিজেরাই যথেষ্ট। পুলিশ ছিল বলেই বেঁচে গেল তৃনমূল নিজেই। গোটা কেশপুর তৃনমূল নেতাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আগ্নেয়গিরির ওপর বসে রয়েছে। এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অস্ত্র শান দিচ্ছে অন্য গোষ্ঠী।” তৃনমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুদাইদ জানিয়েছেন, ” ওটা গোষ্ঠী সংঘর্ষ নয়, পাড়াগত সংঘর্ষ। এখন বেশিরভাগ মানুষই তো তৃনমূল তাই হয়ত তৃনমূল বলে দেখা হচ্ছে। এর সঙ্গে রফিকের বক্তব্যের কোনও যোগসূত্র নেই। আমরা তো বিধানসভা নির্বাচন থেকেই থেকে খেলা হবে শ্লোগান দিয়ে আসছি।”

- Advertisement -
Latest news
Related news