Monday, May 20, 2024

Medinipur: পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘সিপিএম’ করার অপরাধে জরিমানা! ‘পার্থ’ চাপে সুদ সহ টাকা ফেরৎ দিচ্ছে তৃনমূল

- Advertisement -spot_imgspot_img

শশাঙ্ক প্রধান: ২০১১, সরকারে আসার পর শুরু হয়েছিল জরিমানা করার রাজনীতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন থানা এলাকায় সিপিএম করার অপরাধে জরিমানা দিয়ে গ্রামে টিকতে হয়েছিল লাল পতাকার সমর্থকদের। কেশপুর, গড়বেতা, গোয়ালতোড়, ডেবরা প্রভৃতি জায়গা থেকে উঠে এসেছিল তেমনই অভিযোগ। সেই জরিমানা দিতে গিয়ে জমিজায়গা ঘটিবাটি বিক্রি করতে হয় বহু মানুষকে। অভিযোগ জরিমানা মেটাতে জমি জায়গা বিক্রি করে দিলে পরিবার কী ভাবে বাঁচবে সেই আশঙ্কায় আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। ১১ বছর পর শুরু হয়েছে উলটপুরান। তৃনমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাহাড় প্রমান টাকা উদ্ধার হওয়ার পর ফুঁসছে গোটা রাজ্য। গ্রামে গ্রামে চাপ বাড়ছে শাসক দলের নেতাদের প্রতি। দাবি উঠেছে জরিমানার টাকা, কাটমানির টাকা ফেরৎ দাও।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

এখন বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষের চাপে পড়ে শুরু হয়েছে টাকা ফেরৎ দেওয়া, এমন কী সুদ সমেত। এরকমই ঘটনা নজরে এলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা থানা এলাকায়। যা নিয়ে এখন জমজামাট ডেবরার রাজনৈতিক পরিবেশ। জানা গেছে ডেবরা ব্লকের ৭ নং মলিহাটী অঞ্চলের নরহরিপুরে। ২০১১ সালে পরিবর্তনের পর সিপিএম করার অপরাধে মলিহাটী অঞ্চলের প্রায় ১৬৫ জন সিপিএমের কর্মীর কাছ থেকে জরিমানা স্বরুপ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দিতে হয়েছিল মোটা টাকা। জীবন বাঁচাতে কেউ বন্দক দিয়েছিলেন সোনা কেউবা চড়া সুদে টাকা নিয়ে দিয়েছিল শাসক দলের নেতাদের।

গত তিন দিন ধরে সেই টাকা ফেরৎ দেওয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে টাকা ফেরৎ দেওয়া হয়েছে
চকমধু ও নরহরিপুর গ্রামের ফেরৎ পেয়েছেন মাধব সামই (৫ হাজার টাকা), কিংকর মান্না (৩০ হাজার টাকা) ,মদন জানা (১৫ হাজার টাকা) ,মানস পাল (৯৮ হাজার টাকা)। জানা গিয়েছে মোট ১৬৫ জনের মধ্যে এই চারজন পেয়েছে টাকা। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বাকি ১৬১টি জনের টাকা কয়েকটি ধাপে দিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি ১১ বছরের সুদও দিয়ে দেওয়া হবে বলে আশস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সিপিএম নেতাদের দাবি ওই দুটি বুথের তৃনমূল কর্মীদের নিয়ে আমরা একটি সভা করেছিলাম। তাঁদের বলেছিলাম, “যে টাকা আপনারা জরিমানা বাবদ নিয়েছিলেন তা ফেরত দিয়ে দিলে আমরা এই নিয়ে আন্দোলনে যাবনা কিন্তু ফেরৎ না দিলে গনআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ওরা বলেছেন ধাপে ধাপে সবার টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। চারজনের টাকা এখনও অবধি ফেরত দিয়েছে ওরা।”

টাকা ফেরৎ দেওয়ার সঙ্গে অবশ্য তৃনমূলের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন স্থানীয় তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি অসিত বেরা। তাঁর বক্তব্য, “এই ঘটনার সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগ আছে বলে আমার জানা নেই। কেউ যদি ব্যক্তিগত ভাবে টাকা নিয়ে থাকে সেটা দলকে জানিয়ে করেনি। আপাতত এখন অব্দি আমার কাছে এ ধরনের কোনও খবর নেই। আমার মনে হয় কেউ বা কারা তৃণমূল কংগ্রেসের বদনাম করার এই কুৎসা বদনাম ছাড়ানোর চেষ্টা করছে।”

জরিমানা দিতে বাধ্য হয়েছেন এমন সিপিএম সমর্থকরা জানিয়েছেন, গরিব থেকে মধ্যবিত্ত এমন পরিবার গুলি থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছিল ৫ হাজার থেকে ২লক্ষ টাকা অবধি। লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছিল স্থানীয় তৃনমূল বুথ সভাপতি হীরালাল সামুইয়ের নেতৃত্বে। একটি হত দরিদ্র পরিবার মাধব সামুইয়ের স্ত্রী পূর্ণিমা সামুই বলেছেন, “ওরা এসে ৫হাজার টাকা ফেরত দিয়ে গেছে ঠিকই কিন্তু আমি মাসিক ৩ টাকা সুদে ওই টাকা ধার করে হীরালাল সামুইকে তুলে দিয়েছিলাম আর ৫ হাজার টাকা সুদ সহ ১০ হাজার টাকা মিটিয়ে ছিলাম। সেদিন ওদের কাছে হাতে পায়ে পড়েছিলাম একটু সময় দেওয়ার জন্য। ওরা সময় দেয়নি বলেছিল কাল সকালের মধ্যে জরিমানা না দিলে আমার স্বামীর মুন্ডু কেটে ফুটবল খেলবে। স্বামীকে বাঁচাতে চড়া সুদে টাকা ধার করতে হয়। ওই সুদের টাকাও ফেরত দিতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছি ওদের।”

- Advertisement -
Latest news
Related news