নিজস্ব সংবাদদাতা: বুধবার দুপুর দু’ টার মধ্যে পদত্যাগ করতে চলেছেন খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার। আর তারপরই তাঁর বেআইনি সম্পত্তি বিষয়ক তদন্ত করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাতে চলেছেন বিদ্রোহী কয়েকজন কাউন্সিলর। আর সেই তথ্য সম্বলিত নথিপত্র জোগাড় করছেন পুরসভার তিন বিদ্রোহী কাউন্সিলর। এই কাজে ওই তিন কাউন্সিলরকে সাহায্য করছেন খড়গপু্র পুরসভার এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান, এক ভাইস চেয়ারম্যান এবং একজন প্রাক্তন কাউন্সিলর। অর্থাৎ শুধু পদত্যাগেই প্রদীপের শনি কাটছে এমনটা মনে হচ্ছেনা। তাঁরা প্রদীপকে আরও সংকটে ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন যাতে কোনও ভাবেই প্রদীপ সরকার আর ফিরে আসার সুযোগ করে নিতে পারেন।
দলের দ্বিতীয় কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই প্রদীপ সরকারকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। কিন্তু সোমবার কলকাতায় চলে যান প্রদীপ। মঙ্গলবারও ইস্তফা দেননি প্রদীপ। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানান পুরসভার কিছু আর্থিক বিষয় ঠিকঠাক বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর ফিন্যান্স আফিসারের সঙ্গে বসা দরকার। বিষয়টি জানার পরই তৎপরতা বেড়ে যায় বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের একাংশের। তাঁদের আশংকা হয় প্রদীপ বোধহয় এই সুযোগে তাঁর বেআইনি কোনো বিষয় ম্যানেজ করে নিতে চাইছেন। তাঁরা বিষয়টি জেলার এক নেতাকে জানান। এদিন সন্ধ্যাবেলায় ফের প্রদীপকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন অজিত মাইতি। অজিত মাইতি আরও জনিয়ে দেন বুধবার পদত্যাগ না করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল। প্রদীপ সিদ্ধান্ত নেন বুধবার দুপুর দুটোর মধ্যেই পদত্যাগ করছেন বলে জানিয়ে দেন।
কিন্তু এতেই প্রদীপের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটা মনে করার কারণ নেই বরং তাঁকে আরও সংকটে ফেলার জন্য প্রস্তুতি চলছে প্রদীপ বিরোধীদের মধ্যে। ২০১৫ সাল থেকে প্রদীপ সরকার তাঁর নিজের অথবা তাঁর ঘনিষ্ঠদের নামে কোথায় কোথায় স্থাবর সম্পত্তি করেছেন তাঁর তালিকা তৈরি করছেন তাঁরা। প্রদীপ সরকারের বর্তমান বাসভবন যা কয়েক বছরের মধ্যে তৈরি হয়েছে, জাতীয় সড়কের পাশে তাঁর জায়গা আছে এমনকি জেলার বাইরেও নাকি তাঁর জমি রয়েছে এমনই সব তালিকা বানাচ্ছেন তাঁরা। পাশাপাশি খড়গপু্র শহরের বেশ কয়েকটি বেআইনি কাজে প্রদীপ সরকার অনুমতি দিয়েছেন এমনও প্রমাণ তাঁদের কাছে আছে এমন দাবিও করেছেন তাঁরা।
ওই বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের একাংশের দাবি ভবিষ্যতে প্রদীপ সরকার যাতে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে উঠতে না পারে তারই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। প্রদীপ পদত্যাগ করার পরই পরই এমনই কয়েকটি অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁদের মতে, ইতিমধ্যেই প্রদীপের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ গ্রহন করেছে পুলিশ, এরপরেও আরও কয়েকটি অভিযোগ দায়ের করতে চলেছেন তাঁরা।