নিজস্ব সংবাদদাতা: ‘মরন সড়ক’ রয়ে গেল মরন সড়কেই! সপ্তাহ পের হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুর্ঘনাপ্রবণ স্থান গুলি পরিদর্শন করে গেছেন রাজ্য পুলিশ ও আধিকারিকরা। ৮১ টা ব্ল্যাক স্পট আর বছরে কয়েক’শ মৃত্যু নিয়ে রাজ্যের মধ্যে সর্বাধিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। কিভাবে দুর্ঘটনা কমানো যায় তা খতিয়ে দেখতেই ছিল সেই পরিদর্শন কিন্তু মাত্র ৭ দিনের মধ্যেই মৃতের তালিকায় একই দিনে যুক্ত হল আরও ৪ টি নাম। মঙ্গলবার দুটি পৃথক দুর্ঘটনায় জেলায় মৃত্যু হল ওই ৪ জনের, দুর্ঘটনার ঠিকানায় সেই মরন সড়কই।
এদিন দুপুরে প্রথম দুর্ঘটনা ঘটেছে ভগবানপুর থানা এলাকায়। দুরন্ত গতিতে রাস্তার পাশে থাকা একটি পাকা বাড়ির দেওয়াল ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ল ২ যুবক, এবং ঘটনাস্থলেই মৃত দুজনই। একই সাথে মর্মান্তিক ও ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা দেখে শিউরে উঠেছেন এলাকার মানুষজন। দুপুর ১ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর থানা এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত দুই যুবকের নাম শাহনাজ খান এবং শেখ আশফাফ। তাঁদের দুজনেরই বাড়ি স্থানীয় বচ্ছিপুর গ্রামে।
জানা গেছে বেপরোয়া গতিতে বাইক ছুটিয়ে বছর বাইশের ওই দুই যুবক এগরা-বাজকুল রাজ্য সড়ক ধরে যাচ্ছিল ভগবানপুর থেকে বাজকুলের দিকে। ওই রাস্তার যাদবপুরের কাছে একটি সামান্য বাঁকের মুখে বাইক চালক সোজা বাইক নিয়ে ধাক্কা মারে রাস্তার পাশে থাকা ইট দিয়ে গাঁথা একটি দোকানে। বাইকের গতি এতটাই তীব্র ছিল যে দেওয়াল ভেঙে বাইক সমেত দু’জনেই ঢুকে পড়ে দোকানের ভেতরে। পুরো দেওয়াল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ওদের ওপর।
স্থানীয় বাসিন্দারা দুজনকেই উদ্ধার করে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিনই রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ দ্বিতীয় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে দিঘা মোহনা কোস্টাল থানার অলঙ্কারপুর বাসস্ট্যান্ডে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃতরা হল ঠাকুমা নিরদা প্রামাণিক(৬৭) ও তাঁর নাতনি শ্রেয়সী প্রামাণিক (১০)। অলঙ্কারপুর গ্রামে তাঁদের বাড়ি। রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে দিঘার ইসকন মন্দিরে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে স্থানীয় বাসিন্দা রবীন্দ্র নায়কের বাইকে চেপে বাড়ি ফেরার সময় ঘটে দুর্ঘটনাটি। দিঘা থানার ওসি দীপক চক্রবর্তী বলেন, ‘ অলঙ্কারপুর বাসস্ট্যান্ডে উত্তম পালের স্ট্যাচুর কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আচমকা বাইক থেকে পড়ে যান বাইক চালক। তিনি বাইকের বাঁ দিকে পড়ে যান। আর বাইকের পিছনে থাকা ঠাকুমা ও নাতনি পড়ে যান ডানদিকে সড়কের ওপর। সে সময় রামনগরের দিক থেকে আসা দিঘাগামী একটি ডাম্পার ওই ঠাকুমা এবং নাতনির ওপর দিয়ে চলে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁদের দিঘা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।