নিজস্ব সংবাদদাতা : গোটা বাংলা জুড়ে যখন শাসকদলের বিরুদ্ধে সমস্ত কিছু একাই দখল করার প্রবণতার অভিযোগ উঠেছে তখন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি এক সমবায় সমিতি পরিচালন সমিতির নির্বাচনে উল্টো ছবি দেখা গেল। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃনমূল ও সিপিএম মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিদের জোট দখল নিল একটি সমবায় সমিতির পরিচালন কমিটির যাকে আদতে বাম-তৃনমূল জোট বলেই কটাক্ষ করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনা কাঁথি ৩ ব্লকের ভাঁইটগড়-নাচিন্দা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির। বাম-তৃণমূলের নেতৃত্বরা এই জোটে অংশ নেওয়ায় ঘটনায় রাজনীতির ছোঁয়া লেগেছে। বিষয়টিকে বাম-তৃণমূলের জোট বলে চালাতে চাইছে বিজেপি। যদিও তা মানতেই নারাজ জোটের নেতৃত্বরা।
এই সমবায়ের প্রার্থী হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন কাঁথি পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সিপিএম কর্মাধ্যক্ষ বাসুদেব পয়ড়্যা। পয়ড়্যার বক্তব্য, সমবায় একটি সরাসরি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান। এখানে মধ্যবিত্ত, গরিব সমস্ত শ্রেণীর মানুষই কৃষি বা ব্যবসা সংক্রান্ত লোন নিয়ে থাকেন। সেই মানুষের রাজনৈতিক মত যাইহোক না কেন অর্থনৈতিক স্বার্থ একই। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক পরিচালন সমিতি না হলেই ভালো হয়।
কাঁথি ৩ পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান তৃণমূল খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমৃতাংশু প্রধানের বক্তব্য, ‘একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি বড় কথা নয়, সমবায় আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্ট সমবায়ীদের নিয়ে প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এখানে রাজনীতি না দেখাই ভাল। শতাব্দী প্রাচীন এই সমবায়ের ইতিহাসই বলছে, বিগত ৫০ বছর ধরে ঠিক এভাবেই জোট গড়েই সমবায় পরিচালনা করেছেন স্থানীয় সমবায়ীরা। আর সমবায়ীদের সেই যৌথ পরিচালন কমিটির হাত ধরে শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে সমবায়ের।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সমবায় এলাকার ৩ টি জোনের ৪৫ টি আসনের পরিচালন কমিটির ভোটকে ঘিরে একটি করে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৮ ফেব্রুয়ারি। ৪৫ টি আসনে সমসংখ্যক মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। ১০ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন ছিল। তাই ওই ৪৫ জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন সমবায় সমিতির অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার। ঘটনা যাইহোক না কেন বাংলার বুকে ছুরি-কাটারি সম্পর্ক দুটি রাজনৈতিক দলের এই কাছাকাছি আসাকে সুনজরেই দেখছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের বক্তব্য এরফলে লোন নেওয়া দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বৈষম্যের সুযোগ অনেকটাই কমে গেছে।