Friday, May 17, 2024

পশ্চিম মেদিনীপুরে জীবিত বৃদ্ধার ডেথ সার্টিফিকেট দিল গ্রাম পঞ্চায়েত

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: সম্পত্তি হাতানোর উদ্দেশ্য নিয়ে এক জীবিত বৃদ্ধার মৃত শংসাপত্র বানানোর অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই জালিয়াতিতে গ্রাম পঞ্চায়েতেরও ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ। কোনও রকম যাচাই না করেই কিভাবে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এই ধরনের শংসাপত্র প্রদান করল তাই নিয়ে চাঞ্চল্যকর তৈরি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা থানা এলাকার আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। জানা গেছে ৭৪ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধার নাম অন্নপূর্ণা পাঁজা। তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরেরই চন্দ্রকোনা থানা এলাকার ধরমপুর গ্রামে। বৃদ্ধার বাপের বাড়ি গড়বেতা থানার ফতেগড় গ্রামে যা কিনা ওই আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

ধরমপুর গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে স্বামী রাসবিহারী পাঁজা ও তিন ছেলের সংসারে বহাল তবিয়তেই রয়েছেন বৃদ্ধা অন্নপূর্ণা পাঁজা। অন্নপূর্ণা পাঁজার ছেলেদের দাবি,গড়বেতার ফতেগড় গ্রামে তার দাদুর(অন্নপূর্ণার বাবা) কিছু সম্পত্তি, জমি জায়গা আছে। দাদুর দুই মেয়ে তার একজন মারা গিয়েছেন এবং বর্তমানে অপর মেয়ে অন্নপূর্ণা পাঁজা তথা তাদের মা জীবিত রয়েছেন। দাদুর কোনও ছেলে না থাকায় এবং বর্তমানে তাদের মা অন্নপূর্ণা পাঁজাই বাপের বাড়ির পড়ে থাকা সম্পত্তির উত্তরাধিকার বলে দাবি বৃদ্ধা অন্নপূর্ণা পাঁজার ছেলেদের।

সম্প্রতি সেই সম্পত্তি হাতানোর চেষ্টা করছেন ফতেগড় গ্রামের বাসিন্দা সুদর্শন মল্লিক। এই সুদর্শন মল্লিকই অন্নপূর্ণাকে মৃতা বলে চালানোর চেষ্টা করছেন। তিনি ইতিমধ্যেই গড়বেতার আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তাদের মা অন্নপূর্ণা পাঁজার নামে ডেথ সার্টিফিকেট বের করেছেন, এছাড়াও বিভিন্ন দপ্তর থেকে ভুয়া শংসাপত্র বের করছেন যাতে অন্নপূর্ণার বাপের বাড়ির অংশে সম্পত্তি হাতানোর চেষ্টা করেছেন। কিছু দিন আগেই সুদর্শন মল্লিক তাদের মায়ের বাপের বাড়ির জমি জায়গা নিজের নামে করার জন্য গড়বেতা ৩ নং ব্লকের বিএলআরও দপ্তরে জমির রেকর্ডের জন্য আবেদন করেন। সেই ঘটনার সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গিয়েই ধরা পড়ে এই জালিয়াতি। এরপরই বিষয়টি নজরে আসে বৃদ্ধা অন্নপূর্ণা পাঁজার ছেলেদের।

এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরই এই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। প্রথমত: বৃদ্ধা যেহেতু গড়বেতা এলাকার বাসিন্দাই নয় সেখানে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এই ধরনের শংসাপত্র দিতেই পারেনা। আর যদি দিয়েই থাকে তাহলেও প্রশ্ন হল যাচাই না করেই কী করে এই ধরনের শংসাপত্র দিল? প্রশ্ন তুলেছেন ওই বৃদ্ধার পরিবার। আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উমা রানী মাল জানিয়েছেন,”জন্ম মৃত্যুর সার্টিফিকেট আমরা দিতে চাইনা কিন্তু পঞ্চায়েত সদস্যরা চাপ দেয় সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সদস্যদের কথায় কিছু ক্ষেত্রে দিয়ে দিতে হয়।এক্ষেত্রে যদি ভুল হয়ে থাকে তাহলে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে আলোচনা করে খতিয়ে দেখতে হবে।

অন্যদিকে অভিযুক্ত সুদর্শন মল্লিকের বক্তব্য , অন্নপূর্ণা পাঁজা সম্পর্কে তার পিসি হন,তার বাপের বাড়ির পড়ে থাকা একটি জমি আগে তারা নিজেরা চাষ করতো কিন্তু পয়সা নিয়ে তারা জমিটি আমাকে ছেড়ে দেয় বহু বছর ধরে সে চাষ করছে সেটি।সেই জমির কাগজ না থাকায় সে আবেদন করে কিন্তু দপ্তর থেকে মঞ্জুর করেনি বলে জানান সুদর্শন মল্লিক। অভিযোগ সুদর্শনের বিরুদ্ধে এই জালিয়াতির অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে বৃদ্ধার ছেলেরা করলেও এখনও অবধি কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে।

- Advertisement -
Latest news
Related news