Sunday, May 19, 2024

midnapore: পরিকাঠামো নেই, জালিয়াতি শিক্ষক তালিকায়! চাকরি যেতে পারে জেনেও মুখ খুললেন কেশপুর সরকারি আইটিআই কলেজের অধ্যক্ষ

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: ” আমাদের ওয়েল্ডিং মেশিনই নেই তবুও আমরা ওয়েল্ডিং ট্রেডে ছাত্র পড়াই। আমাদের খাতায় কলমে শিক্ষক দেখানো হয়েছে ২০ জন কিন্তু ১২ জনের নামই ভুয়ো, তাঁদের কোনও অস্থিত্ব নেই। আমি জানি এসব বলার জন্য আমার চাকরি চলে যাবে অথবা আমাকে বদলি করা হবে কিন্তু আমি আর পারছিনা। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে, শিক্ষার স্বাৰ্থে আমাকে এই কথা বলতেই হচ্ছে।” সারা রাজ্য জুড়ে সরকার যখন কারিগরী শিক্ষার ঢোল পেটাতে ব্যস্ত তখন সেই শিক্ষার প্রকৃত মুখোশ উন্মোচন করে দিলেন একটি সরকারি কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কেশপুর গভর্নমেন্ট আইটিআই কলেজের অধ্যক্ষ সেক মহম্মদ নাসিম আলি।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

পিটিপি মডেলের নামে রাজ্য সরকার ট্রাস্টের মাধ্যমে যে কারিগরি আই টি আই কলেজ চালাচ্ছেন তার সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ কিভাবে লুট হচ্ছে তারই জ্বলন্ত তথ্য উঠে এল আই.আই.টি খড়্গপুর (IIT Kharagpur) থেকে এম.টেক করা সেক মহম্মদ নাসিম আলির ক্ষোভ থেকে। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, মাসের পর মাস শিক্ষকের অভাবে পঠন পাঠন বন্ধ। প্রতিদিন টাকা খরচ করে এসে কলেজে সময় কাটাতে হয় এমন পড়ুয়াদের। চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করতে হয় কখন একটা ক্লাস বা প্র্যাক্টিক্যাল হবে। এখানে দুটো খাতা রাখা থাকে সরকারের তরফে কোনও দল পরিদর্শনে এলে আমাকে বলা হয় ওই জাল খাতা দেখতে। আমারই চোখের সামনে একের পর এক দূর্নীতি সহ জালিয়াতির ঘটনাগুলি ঘটতে থাকে। প্রতিকারের দাবী জানিয়ে একাধিক চিঠি ও মিটিংয়ে বলা হয় কিন্তু সব কিছুই চাপা পড়ে যায়।

শুধু পড়ুয়া নয়, এখানে বঞ্চনার শিকার শিক্ষক ও কর্মীরাও। শিক্ষকদের মাসে মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার চুক্তি করানো হয় আদতে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি অনুযায়ী যা ৬০ হাজার টাকা হওয়া উচিত। তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ বেতন চুক্তি করা হলেও মাত্র ৬ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয় প্রতিমাসে। দিনে ২০০ টাকায় কাজ করেন শিক্ষকরা তাও একদিন না এলে টাকা কেটে নেওয়া হয়। উল্লেখ্য কেশপুরের এই কলেজে তিনটি শিফটে নয়টি বিভাগ চলে। সাড়ে চারশ পড়ুয়া। প্রতি বিভাগে নয়জন করে শিক্ষক থাকার নিয়ম কেন্দ্রীয় গাউড লাইন অনুসারে। তবেই কারিগরি বিভাগ চলার অনুমোদন পায়। ৫৪ জন শিক্ষক থাকার কথা। সে জায়গায় ট্রাস্টের মাধ্যমে ২০ জন শিক্ষক আছে বলে সরকারী খাতায় নিয়োগপত্র সহকারে দেখানো হয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত ১২ জন এমন শিক্ষককের কোনো হদিশ নেই।

উল্লেখ্য, নিয়মিত ক্লাস না হওয়ায় পড়ুয়ারা অধ্যক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালে তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে অধ্যক্ষ বলেন, আমি জানি আমার চাকরি চলে যেতে পারে কিন্তু আমি এ কথা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য রাখছি। আমার সরকারের প্রতি ক্ষোভ নেই। সরকার হয়ত জানেনই না পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে চলা এই প্রতিষ্ঠানগুলির পরিচালন কমিটি কীভাবে ছাত্রদের, পড়ুয়াদের ঠকিয়ে চলেছে।” উল্লেখ্য রাজ্যে এমন ১৩টি সরকারী কলেজ ট্রাস্টের অধীনে চলে। প্রায় সব জায়গাতেই এমনই লুঠ চলে বলে অভিযোগ।

- Advertisement -
Latest news
Related news