Friday, May 17, 2024

Midnapore: বাঙালির খোঁজে নিমগ্ন মেদিনীকন্যা! ইতিহাস গবেষণায় দান করলেন নিজের বাড়ি

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: জীবনভর খুঁজেছেন বাঙালিকে, বাঙালির উৎসকে! ইতিহাস পড়ুয়া মাত্রই জানেন যে, বাঙালি কোনও অবিমিশ্র জাতি নয়, তার উৎসে রয়েছে গঙ্গা বিধৌত নিম্ন উপত্যকার বিভিন্ন জাতির সংমিশ্রণ। কারা সেই আদি জাতিসমূহ যারা মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে অধুনা বাঙালি নামক জাতি স্বত্ত্বায়? জীবনভর খুঁজছেন তাকেই খুঁজে চলেছেন এই মেদিনী বিদুষী কন্যা। পাশাপাশি আরও কিছু খোঁজ করতে করতে এখন ৯১ বসন্তে এসে ঠেকেছেন। এই খোঁজের সন্ধান করতে করতে অবকাশ হয়নি সংসার করার। কিন্তু তার জন্য কোনও আফসোস নেই। বরং গর্ব এটাই যে জীবনভরের সঞ্চয় দিয়ে গড়ে তোলা মেদিনীপুর শহরের একটি অভিজাত পল্লীর তিনতলা বাড়িটি দান করে দিলেন ইতিহাস গবেষণার জন্য।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

সম্প্রতি মেদিনীপুর কলেজ (স্বশাসিত) পালন করেছে কলেজের দেড়শত বছর। এই দেড়শ বছরে কলেজ প্রাক্তনী অধ্যাপিকা অন্নপূর্ণা চট্টোপাধ্যায়ের এই দানই হয়ে রইল বাঙালির পরমপ্রাপ্তি। তখন কার রেওয়াজ অনুযায়ী মেদিনীপুর মিশন গার্লস থেকে মাধ্যমিক পাশের পর ‘ইন্টার মিডিয়েট’, যা কিনা অনেকটাই এখনকার উচ্চমাধ্যমিক পড়েছিলেন মেদিনীপুর কলেজে। তারপর প্রেসিডেন্সি হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর। এরপর পিএইচডি করতে গিয়ে বেছে নিলেন বাঙালির উৎস খোঁজাকে। সেই শুরু। ১৯৬৪ থেকে ১৯৯৫ রাজা নরেন্দ্রলাল খান মহিলা মহাবিদ্যালয় বা গোপ কলেজের অধ্যাপিকা। তাঁর নিবিড় গবেষণা আর ইতিহাস প্রেমের ঐশ্বর্য্য, জ্ঞানের অফুরান সম্পদের জন্য তাঁকে এশিয়াটিক সোসাইটির সম্মানিত সদস্যা নির্বাচন করা হয় যা কিনা যে কিনা পান্ডিত্যের অসামান্য স্বীকৃতি। শুধু বাড়ি নয়, তার হাজার চারেক বই, গবেষণা লব্ধ সমস্ত তথ্য, বই যাবতীয় সামগ্রী দান করে দিলেন ডঃ চট্টোপাধ্যায়।

প্রাক্তন অধ্যাপিকা বলেন,  ‘আমরা চার বোন, তিন ভাই। আমি নিজে বিয়ে করিনি। আমার এক ভাই, দুই বোন মারা গেছেন। আমি এই বাড়িতে একাই থাকি। দেখাশুনোর জন্য এক জন মহিলা সঙ্গে থাকেন। বাড়িটি রেখে কী হবে? বছর তিনেক আগে এই বাড়িটি মেদিনীপুর কলেজ কে দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। রেজিস্ট্রিও করে দিয়েছি। কলেজের ১৫০ বছরে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলিল তুলে দিলাম। আমার ইচ্ছে আমার বাড়িটি কলেজের অধীনে ইতিহাস গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা হোক।’

উল্লেখ্য মেদিনীপুর শহরের ক্ষুদিরাম নগরের মাইকো গলি এলাকায় ১৯৯৮ সালে বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি। যার বাজার মূল্য এখন কোটি টাকা ছাড়িয়ে। মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, ” এই সব প্রাক্তনীরাই আমাদের কলেজের সম্পদ। তাঁর ইচ্ছাপূরণের জন্য আমরা চেষ্টা করে যাব।”

- Advertisement -
Latest news
Related news