নিজস্ব সংবাদদাতা : আপনার সঙ্গেও এরকম ঘটনা হয়েছে হয়ত কিংবা হতে পারে যে কোনও দিন। প্রথমে হোয়াটস আ্যপে কিংবা ম্যাসেঞ্জারে কোনও মহিলার হাই, হ্যালো ম্যাসেজ। তারপর আপনার কাছে হোয়াটস আ্যপ নম্বর চেয়ে নিয়ে হোয়াটস আ্যপ কল। কিছুক্ষণ পর মহিলা নগ্ন হতে শুরু করলেন। দু’চারটা কথার পর ফোনটি কেটে গেল। এরপর আপনার হোয়াটস আ্যপ নম্বরে আসতে শুরু করল কিছু অদ্ভুদ ছবি যেখানে দেখা যাবে ওই নগ্ন মহিলার সঙ্গে আপনি মিলে মিশে একাকার।

সেক্সটর্শন চক্রের ফাঁদে পড়ে বেশ কিছু টাকা খুইয়েছেন দিঘার এক যুবক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে হোয়াটস অ্যাপে সেক্সটর্শন চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে দিঘা মোহনা কোস্টাল থানার অন্তর্গত অলঙ্কারপুরের বাসিন্দা এক যুবক বেশ কিছু টাকা খুইয়েছেন। তারপরই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই যুবক। পুলিশ সাথে সাথে ওই যুবককে অপরাধীদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রাখার পরমার্শ দেয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এই ধরনের ফাঁদে পা দিয়ে যাতে টাকা ট্রান্সফার না করেন, সে ব্যাপারে যুবককে সতর্ক করেছে সংশিলষ্ট থানার পুলিশ।
পুলিশ বলছে ইদানিং এ ধরনের অপরাধের প্রবণতা বাড়ছে। এ নিয়ে মানুষকে সতর্কও করছে তারা। পুলিশ জানিয়েছে পেশায় চা-পানের দোকানদার ওই যুবকের কাছে মঙ্গলবার রাত ১০ টা নাগাদ একটি অচেনা নম্বর থেকে তাঁর হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কল আসে। সেই কল রিসিভ করার পর এক মহিলার নগ্ন ভিডিও দৃশ্য দেখতে পান তিনি। কিছুক্ষণ পর সেই কল কেটে যায়। তারপর অন্য আর একটি নাম্বার থেকে ওই মহিলার নগ্ন ভিডিও দৃশ্যের সঙ্গে তাঁর মুখের ছবি লাগিয়ে হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও পাঠানো হয়। যুবকের অভিযোগ, অপরাধী ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ৩ হাজার টাকা দাবি করে।
যুবক জানিয়েছেন, ‘ প্রথমবার ভয় পেয়ে, কিছু না বুঝে আমিও গুগল পে মারফত টাকা পাঠিয়ে দিই। তারপরও একের পর এক ফোন আসতে থাকে টাকা চেয়ে। এরপরই আমি পুলিশের দ্বারস্থ হই।’ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কিছুক্ষেত্রে সেক্সটর্শন চক্রের অপরাধীরা শুরুতে ফেসবুকের মাধ্যমে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। বন্ধুত্ব করার পর ফোন নম্বর বিনিময় করে। তারপরই হোয়াটস অ্যাপে ভিডিও কল করে মহিলার নগ্ন ছবি দেখিয়ে অশালীন কিছু ছবি ও ভিডিয়ো রেকর্ড করে নেয়। পরবর্তীতে তা দেখিয়ে এবং ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করে।
পুলিশ জানিয়েছে, মানুষ প্রথমে প্রলোভনে এই ফাঁদে পা দেয় আর তারপর সামাজিক সুনাম কিংবা আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধবের কাছে হেয় প্রতিপণ্ন হওয়ার ভয়ে টাকা দিয়ে রফা করতে চায়। মানুষের এই দুর্বলতাকে হাতিয়ার করে ধারাবাহিক ভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে এই অপরাধী চক্রটি। পুলিশের পরিস্কার পরামর্শ এই ধরনের ঘটনা ঘটলে কোনও রকম দ্বিধা ছাড়াই পুলিশের সাহায্য চান। পুলিশ সব রকমের সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছে।