নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপু্র ২ ব্লকের চাঙ্গুয়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন প্রায় সাড়ে তিনশ গাছ রাতারাতি কেটে পাচারের চেষ্টা রুখে দিলেন গ্রামবাসীরা। ঘটনার জেরে গ্রেফতার করা হয়েছে এক ব্যাক্তিকে যিনি দাবি করেছেন যে ওই গাছগুলি কাটার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছ থেকে বরাত পেয়েছিলেন। যদিও তেমন কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গারামপুর গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ধৃত ওই ব্যাক্তির নাম সেক আবদুল। এখনও অবধি প্রায় ১৫ টি কাটা গাছ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় গ্রামবাসী যেমন চন্দন চক্রবর্তী, সুভাষ হেমব্রমরা বলেন, “বুধবার হঠাৎই আমাদের গ্রামীন রাস্তার ধারে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে লাগানো গাছ কাটতে দেখি আমরা। দেখতে পাই প্রচুর লোক নিযুক্ত করে এক ব্যাক্তি গাছগুলি কাটতে শুরু করেছে। আমরা সেক আবদুল নামে ওই ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসা করি কার অনুমতি নিয়ে আপনি গাছ কাটছেন। ওই ব্যাক্তি বলে পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়ে সে গাছ কাটছে। যদিও আমরা যখন পঞ্চায়েত প্রধানকে জিজ্ঞাসা করি তখন তিনি বলেন যে তিনি কোনও অনুমতি দেননি। এরপরই আমরা ওই ব্যাক্তিকে গাছ কাটা বন্ধ করতে বলি। ওই ব্যাক্তি তখনকার মত গাছ কাটা বন্ধ করে দেয় কিন্তু আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ওই ব্যাক্তি আবার লোকজন নিয়ে এসে গাছ কাটতে শুরু করে। খবর পেয়ে আমরা গ্রামবাসীরা জড়ো হলে ওই ব্যাক্তি তার লোকজন ও যন্ত্রপাতি নিয়ে সরে পড়ে।”
সেক আবদুল নামে ওই ঠিকাদার দাবি করেছেন তাঁকে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফ থেকেই প্রায় সাড়ে তিনশ গাছ কাটার বরাদ্দ দেওয়া হয় যদিও সেই বাবদ কোনও নথি তিনি দেখাতে পারেননি। তৃণমূল পরিচালিত ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সীতা টুডু বলেন, ” এই রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার আওতায় আরও চওড়া করে তৈরি করা হবে। সেই জন্য গাছ কাটার দরকার। তবে এখনও কোনও টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি।” যদি টেন্ডার না হয়ে থাকে তবে ওই ব্যাক্তি কী ভাবে গাছ কাটছিল আর কেনই বা পঞ্চায়েতের তরফে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি? উত্তরে প্রধান বলেন, “এ নিয়ে আমি কিছু জানিনা কিছু বলতে পারবনা।”
স্থানীয় বিজেপি নেতাদের দাবি স্থানীয় তৃনমূল নেতা ও পঞ্চায়েতের যোগ সাজশেই বিনা টেন্ডারেই গাছগুলি হাপিস করার চেষ্টা হচ্ছিল। বিজেপির খড়গপু্র ২ দক্ষিণ মন্ডল সভাপতি নিতাই ভূঁঞা বলেছেন, ” গোটা রাজ্য জুড়ে যে লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে তৃনমূল এখানেও তাই হচ্ছিল। ছোটবড় নেতাদের প্রশ্রয়েই শত শত গাছ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল যার ভাগ নেতারা পেত। শুধু ঠিকাদারকে বলির পাঁঠা করে লাভ নেই তার পেছনে যে মাথারা রয়েছে তাদেরও গ্রেফতার করা হোক।” পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।