নিজস্ব সংবাদদাতা: দুটি বাইকে দু’জন করে চারজন। প্রথম বাইকটা দ্বিতীয় বাইকটাকে মোহনপুর বীরেন্দ্র সেতু পেরিয়ে পাশ কাটিয়ে এসছিল ঠিক তিন মিনিট আগে। দ্বিতীয় বাইকটা একটু পরে এসে দেখল প্রথম বাইকের দুই আরোহী রাস্তার পাশে নর্দমায় মুখ থুবড়ে পড়ে। রাস্তার পাশে পড়ে থাকা বাইকটায় তখনও স্টার্ট রয়েছে, পিছনের চাকা ঘুরছে। ঘটনাস্থল মেদিনীপুর শহরের জগন্নাথ মন্দির বাস স্টপেজ। বৃহস্পতিবার ভোর ৩ টা নাগাদের ঘটনা। জানা গেছে গ্রামীন খড়গপুরের বড়কলা এলাকায় রাশের মেলা থেকে ফিরছিলেন ওই চারজন। রাত ২ টা নাগাদ সেখান থেকে বের হন। পথে কোনও ধাবায় খাওয়া দাওয়া তারপর শুরু বাইক রেসিং। এক বাইক অন্য বাইককে পেরিয়ে যাওয়ার লড়াই। জগন্নাথ মন্দির মোড়ের ঠিক আগেই সামনের বাইক চালক ঘাড় ঘুরিয়ে শেষবার দেখে নিতে চেয়েছিলেন পিছনের বাইক কতটা দূরে। ৯০ কিলোমিটারের কাঁটা ছোঁয়া বাইক ততখনে ছুঁয়ে ফেলেছে রাস্তার পাশে থাকা সিমেন্টের খুঁটিকে। মাথার ঘিলু ছিটকে রাস্তা ও নর্দমা মাখামাখি।
পেছনের বাইকে সামনের বাইকের মৃত নাবালকের সম্পর্কিত দাদা। চিৎকার চেঁচামেচি, লোকজন ছুটে এলেন কিছু মানুষ। নিয়ে যাওয়া হল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাতালে। চিকিৎসকরা মৃত্যুপত্র লিখে দিলেন। একজনের বয়স ১৬, অন্য জনের ১৭ বছর। ষোলো বছরের দেবব্রত করের বাড়ি ভোলা ময়রার চক আর সতেরো বছরের রূপম চ্যাটার্জী বাড়ি পাটনা বাজার। নিজেদের বাড়ি থেকে মাত্র কয়েক’শ মিটার দূরে লাশ হয়ে গেলেন দুই কিশোর। কারুরই মাথায় বাইক ছিলনা, ফলে লাশ হতে সময় লাগেনি বেশিক্ষন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে দুজনেই পড়াশুনার পাঠ চুকিয়েছেন অনেকদিন। নিত্য সঙ্গী বাইক। কারুর বাবা হোটেল ব্যবসায়ী কারুর বাবা অন্য পেশায়। ছেলের বাইকের তেলের জোগান আটকায় না। এত রাতে ছেলেরা কোথায় যায়, কেন যায় কেউ খোঁজ রাখেন কী? সব দোষ পুলিশের কিংবা প্রশাসনের? ছেলেদের আবদারে এই অন্যায় ইন্ধণ জুগিয়ে যাওয়ার দায় পরিবার নেবেনা?