নিজস্ব সংবাদদাতা: সোমবার তখন প্রায় বিকাল প্রায় ৫ টা! কলকাতার সিআইডি (CID Kolkata) আধিকারিকরা খবর পেলেন বাংলার পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশা থেকে একটি বিলাসবহুল চারচাকার গাড়ীতে প্রচুর পরিমাণ গাঁজা নিয়ে আসা হচ্ছে দুর্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। খবর পাওয়া মাত্রই কলকাতা গোয়েন্দা বিভাগের সেই আধিকারিকরা রওনা দিলেন হওড়া- মুম্বাই জাতীয় সড়ক ধরে। গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিল বালেশ্বর- রানীগঞ্জ ৬০নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে মোড়গ্রাম হয়ে ওই গাঁজা যাবে দুর্গাপুর। গোয়েন্দা দলটির টার্গেট ছিল চৌরঙ্গীর কাছে ওই সাদা রঙের সুজুকি রিৎজ(suzuki ritz) গাড়ীকে ধরতে পারা যার নম্বর WB 06J 0321.
এটা খুবই সৌভাগ্যের যে ওড়িশার দিক থেকে আসা ওই গাড়ীটি আসার আগেই চৌরঙ্গী পৌঁছে যায় গোয়েন্দাদের গাড়ীটি। এরপর ওঁত পেতে অপেক্ষা করছিলেন সিআইডি আধিকারিকরা। ওড়িশা’র দিক থেকে গাড়ি চৌরঙ্গী এলাকায় পৌঁছতেই আটক করা হয়। গাড়ীর ভেতর থেকে দু’জনকে বের করে তল্লাশি শুরু করেন সিআইডি আধিকারিকরা। আর তারপরই চক্ষু চড়কগাছ সিআইডি আধিকারিকদের।গাড়ির ভেতর একটা প্রকান্ড বস্তা বোঝাই গাঁজা যার পরিমাণ প্রায় ১ কুইন্টাল। এরপরই দুই পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে খড়্গপুর লোকাল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওজন করে জানা যায় গাঁজার পরিমাণ ৯৮ কেজি। এরপরই খড়গপু্র গ্রামীণ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় ওই দুই ব্যাক্তিকে যাঁদের নাম রাজু দাস ও আনন্দ দাস বলে জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে গাঁজার গুণমান অনুযায়ী ভারতীয় মুদ্রায় ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা। সেই হিসাবে উদ্ধার হওয়া ওই গাঁজার মূল্য নুন্যতম আড়াই লাখ টাকা।
কিন্তু কেন সিআইডি দলটি কলকাতা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে খড়গপু্র আসতে গেল যেখানে খড়গপু্র পুলিশ কে খবর দিলেই পুলিশ ওদের আটক করতে পারত? উত্তরে এক গোয়েন্দা আধিকারিক জানিয়েছেন প্রথমত: এই ধরনের অপারেশনে তাঁদের দক্ষতা কতখানি এটা যাচাই করার দরকার ছিল। দ্বিতীয়ত যেহেতু এই গাঁজা প্রায় তিনটি জেলার ওপর দিয়ে দুর্গাপুর যাচ্ছিল বলে তাঁরা আগেই জানতে পেরেছিলেন তাই ওই সব কটি জেলার জুরিডিকেশনে হানা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এমন দলকেই পাঠানো হয়েছিল। যদি কোনও কারনে খড়গপু্রে ওদের ধরা সম্ভব না হত তাহলে পরের জেলা ছিল বাঁকুড়া। সেক্ষেত্রে ফের বাঁকুড়া পুলিশকে বলতে হত। কিন্তু সিআইডির কলকাতা সদর দপ্তরের গোয়েন্দারা সমস্ত জেলাতেই তল্লাশি চালানোর অধিকার রাখে।