নিজস্ব সংবাদদাতা: তুষের মতই ধিকিধিক জ্বলছিল আগুন। লোকালয়ের মধ্যেই কৃষিজমিতে পুকুর খনন নিয়ে প্রবল আপত্তি ছিল জনতার। দরবারও করা হয়েছিল স্থানীয় প্রশাসনের কাছে কিন্তু খুব একটা আমল পায়নি সে দরবার। টাকা আর ক্ষমতার জোরেই জোর করে বৃহস্পতিবার কাজ শুরু হয়েছিল সেই পুকুর খননের কাজ।

শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের মানিককুণ্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বেলাদন্ড গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বেলাদন্ড গ্রামের বাসিন্দা অরূপ ঘোষ, নিমাই ঘোষ, গ্রাম লাগেয়া জামিরা মৌজায় লোকালয়ের মধ্যেই কৃষিজমি খনন করে পুকুর খননের কাজ করছিল। আর সেই পুকুর খননের মাটি রাতের বেলায় ট্রাক্টরের করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল গ্রামেরই অন্য প্রান্তে, আর সেই মাটি বোঝাই ট্রাক্টর যাওয়ার সময় রাস্তার ধারে উল্টে গিয়ে গ্রামের সুকুমার রায় (৩৯) বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়, আর এতেই দেখা দেয় চরম উত্তেজনা। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ ট্রাক্টর চালকরা ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তড়িঘড়ি ট্রাক্টর নিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ওই এলাকায় পুকুর খনন করা হলে পার্শ্ববর্তী কৃষিজমি গুলি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, লোকালয়ে দূষণ বাড়বে তাই দীর্ঘদিন ধরে পুকুর খনন বাধা দিয়েছিল তারা। এমনকি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গাতেও তারা লিখিত আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু সেসব আপত্তি খারিজ করেই পুকুর খনন কাজ শুরু করেছিল ওই ব্যক্তিরা। বৃহস্পতিবার রাতে সুকুমার রায়ের মৃত্যুর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকার বাসিন্দারা, উত্তেজিত হয়ে গ্রামের বাসিন্দারা চারটি ট্রাক্টর, একটি জেসিবি মেশিন ও একটি মোটর বাইকে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঘটনা সম্পূর্ণ পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায় গাড়িগুলি।
মৃত সুকুমারের বাবা নন্দ রায় জানিয়েছেন, ‘আমাদের গ্রামের রাস্তা এমনিতেই সরু। রাস্তার পাশেই বসেছিল আমার ছেলে। তখন রাত ১০টা। আমি একটু দুরেই ছিলাম। হঠাৎই উল্টে যায় ট্রাক্টরটি। ওরা তড়িঘড়ি করে জেসিবি নিয়ে এসে ট্র্যাক্টরটি তুলে নিয়ে পালায়। ওদিকে আমার ছেলে যে মাটির তলায় চাপা পড়ে রয়েছে সেদিকে ওদের খেয়ালই ছিলনা। আমি চিৎকার চেঁচামেচি করে প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করে ছেলেকে মাটির স্তুপ থেকে টেনে বের করি। কিন্তু ততক্ষণে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে এই ঘটনায় থমথমে এলাকা, এলাকার মানুষজনদের দাবি দ্রুত এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিক, মৃত ব্যক্তির পরিবারের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুক।