Thursday, May 2, 2024

Bratya Basu: টিফিনে শিক্ষামন্ত্রীর ফোন! বাগানের প্রাচীর চাই: আবদার সেই নয়াগ্রাম শিক্ষকের

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: নিজের কানকে বিশ্বাসই করতে পারছেননা গড় খেলাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সনাতন মাহাত। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা, স্কুলে তখন টিফিন পিরিয়ড। অফিসে বসে খাতা কলমে দৈনন্দিন কাজ সারছিলেন তিনি। হঠাৎই একটা অচেনা নম্বর থেকে ফোন! ধরব কী ধরবনা বলে ধরেই ফেললেন সনাতন। আর হ্যালো বলতেই ওপ্রান্ত বললেন, ‘হ্যালো, আমি ব্রাত্য বসু বলছি।’ সনাতন বলেন, ‘আমি তো প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারিনি, উনি তখন আবার বললেন, ব্রাত্য বসু, শিক্ষা মন্ত্রী!’ বিশ্বাস করুন আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে এখনও।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম জেলার নয়গ্রাম ১ চক্রের গড়খেলাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সনাতনের নাম এখন শিক্ষক মহলে প্রশংসিত। অজ গাঁয়ে নিজের খরচে গড়ে তুলেছেন একটি ডিজিটাল ক্লাশরুম যা কিনা ক্লাশ ওয়ান থেকে ক্লাশ ফাইভ অবধি ১৫৩ জন পড়ুয়াকে জুগিয়েছে পড়ার উৎসাহ। জঙ্গল আর বন্ধুর জমি অধ্যুষিত ওড়িশা লাগোয়া গ্রামে এখন কচিকাঁচাদের মধ্যে ‘নো স্কুল ফাঁকি’র ট্রেন্ড। করোনা কালীন অতিমারীর ফলে দীর্ঘ ২ বছর ধরে স্কুলের বাইরে থাকা কচিকাঁচা পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করার এই অভিনব উদ্যোগটি সনাতন মাহাতো নিয়েছেন সম্পূর্ন নিজের খরচেই। ফলও মিলেছে অভিনব। ছাত্রছাত্রীরা রোজ স্কুল ছুটছে স্যামসাং ৪৪ আল্ট্রা এইচডি (sumsung 44 ultra hd) স্মার্ট এলিইডি প্যানেল টিভিতে ফুটে ওঠা আ্যমাজনের জঙ্গল আর আ্যনাকোন্ডার ছবি দেখতে। তাঁদের ক্লাশরুমেই এখন লাফিয়ে বেড়ায় খরগোশ থেকে ব্ল্যাকপ্যান্থার। স্মার্ট ইনফো ভিশনের টিউটোরিয়াল ক্যাসেটের জেরেই তারা নিচ্ছেন বর্ণপরিচয়ের সহজপাঠ।

সনাতনের এই বিপ্লবের খবর ‘KGPবাংলা’ র হাত ধরে পৌঁছে গেছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রকের অন্দরেও কারন এই যুগান্তকারী খবর KGPবাংলাই প্রথম প্রকাশ করে। খবর পেয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রীও। মঙ্গলবার সেই খবরেরই খুঁটিনাটি জানতে খোদ ব্রাত্য বসুই ফোন করে ফেললেন সনাতনকে। সনাতন বলেন, মন্ত্রী আমার কাছে জানতে চেয়েছেন কিভাবে আমি এসব করেছি। আমি ওনাকে বিস্তারিত বললাম। উনি খুবই খুশি। বলেছেন, একদিন না একদিন উনি আসবেন আমাদের স্কুল দেখতে। আপনি কিছু বলেছেন? জানতে চাওয়া হলে সনাতন বলেন, আমি শুধু একটা জিনিসই চেয়েছি আমাদের স্কুলের চারপাশে একটি প্রাচীর গড়ে দিক সরকার।

সনাতন বলেন, স্কুলকে ঘিরে একটা পার্ক গড়ার স্বপ্ন রয়েছে আমাদের। আমরা ইতিমধ্যেই দোলনা, স্লিপার, ঢেঁকি বা সি-স বসিয়েছি। এবার বসাতে চাই একটি নাগরদোলা। কিন্তু তারও চেয়ে বড় জিনিস করতে চাই তা হল ফুল ও ফলের বাগান। আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই গরীব পড়ুয়াদের পুষ্টির জন্য ফল খুবই প্রয়োজন। এখানকার মানুষ দুবেলা পেট ভরে খেতেই পায়না ফল পাবে কোথায়? উল্লেখ্য সংখ্যালঘু ও উপজাতি অধ্যুষিত এই এলাকার মানুষের জীবিকা শালপাতা সংগ্ৰহ, বাবুই দড়ি বানানো আর গরু কেনাবেচা। কৃষি এখানে সচরাচর বাড়ন্ত। সনাতন বলেন, পূর্বের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফল ও ফুলের গাছ লাগিয়েছিলেন কিন্তু প্রাচীর না থাকায় লকডাউনে সব শেষ হয়ে গেছে। ১২২ ডেসিমেল জায়গা রয়েছে আমাদের যা ঘিরতে না পারলে একদিন দখল হয়ে যাবে।’

- Advertisement -
Latest news
Related news