নিজস্ব সংবাদদাতা: শিয়রে পুরভোট, তার আগে অটোচালক বনাম টোটোচালকদের দ্বৈরথকে ঘিরে চাপে পড়ল শাসকদল। শনিবার খড়গপুর শহর জুড়ে বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় পথ অবরোধ করেছেন অটোচালকদের সংগঠন খড়গপুর অটো অপারেটর ইউনিয়নের সদস্যরা। গোলবাজার সিমলাসেন্টার, বোগদা সহ তিন জায়গায় পথ অবরোধে সামিল হন তাঁরা।

আটোচালক ইউনিয়নের সহসভাপতি গৌতম বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘পুরসভা মোট ৩৪০টি মত টোটোকে অনুমোদন দিয়েছিল পুর এলাকায় যাত্রী বহনের জন্য। কিন্তু এখন শহর জুড়ে ১হাজারেরও বেশি টোটো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এরা কোনও নিয়ম মানেনা। যেখানে সেখানে দাঁড়াচ্ছে, যত্ৰতত্ৰ যাত্রী তুলছে। কিন্তু অটোচালকদের যেমন রুট বাঁধা তেমনি নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড রয়েছে যার বাইরে তাঁরা যাত্রী তুলতে পারছেননা ফলে সরকারকে রেভিনিউ দিয়েও যাত্রী পাচ্ছেননা। অন্যদিকে সরকারকে কোনও পয়সাই দিতে হয়না টোটোকে।’ উদাহরণ দিয়ে বিশ্বাস বলছেন, একজন যাত্রীকে খড়গপুর স্টেশনে ট্রেন থেকে অটো কিংবা রিকশা স্ট্যান্ড অবধি আসতে হয় অথবা নির্দিষ্ট রুটে এসে দাঁড়াতে হয় যেখান দিয়ে অটো চলাচল করে। অটো বা রিকশা এই নিয়মের বাইরে যেতে পারেনা কিন্তু টোটো সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে স্টেশন চত্বরে যাত্রীর কাছে ফলে মার খাচ্ছে তাঁদের ব্যবসা।’ অটোওয়ালারা দাবি করেছেন, পৌরসভার অনুমোদন নেই এমন টোটো বন্ধ করতে হবে।
অন্যদিকে টোটো চালকদের দাবি, পূর্বের মহকুমা শাসকের সঙ্গে তাঁদের যে কথা হয়েছিল তাতে ওই ৩৪০টি অনুমোদিত টোটো ছাড়াও নতুন করে ১৫০টি
টোটো চালানোর অনুমোদন দেওয়া হবে। গতবছর লকডাউন চালু হয়ে যাওয়ার পর সেই কথা হয়নি। সেই মহকুমা শাসক বদলি হয়ে গেছেন। বর্তমান মহকুমা শাসকের কাছে আবেদন সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হোক। এক টোটো চালকের কথায়, ‘আমাদের একটা বড় অংশই খড়গপুরের বাইরে, রাজ্যের বাইরে কর্মরত ছিলাম। লকডাউনে কাজ গিয়েছে। এদিক ওদিক পুঁজি জোগাড় করে একটা টোটো নামিয়েছি, খেটে খাচ্ছি। চুরি চামারি করছিনা। সরকার আমাদের কাছ থেকে কর নিতে চাইলে নিক কিন্তু পেটে লাথি মারলে ছেড়ে কথা বলবনা। অটো যদি ব্যবসা করে টোটোর ব্যবসাতে আপত্তি কেন? তাছাড়া খড়গপুর শহরের বুকেই তো দোকানে টোটো বিক্রী হয়। কই সরকার তো টোটো বিক্রীতে বাধা দিচ্ছেনা! আর সরকার এটাও খুঁজে দেখুন যে, পারমিটের নাম করে খড়গপুর শহরে কত বিনা পারমিটের অটোও চলে!’
গোটা ঘটনায় চাপে পড়েছে শহরের শাসকদল। পারমিট থাক আর না দুপক্ষকেই মিছিল মিটিং জনসভায় ছুটিয়েছে শাসকদল। দু’পক্ষই শাসকদল অনুগত। একে অপরকে দোষ চাপানোর পাশাপাশি দু’পক্ষই এই জটের জন্য অভিযোগের আঙুল তুলেছে স্থানীয় প্রশাসনের দিকে। আর এখানেই এবার শ্যাম রাখিনা কুল রাখি অবস্থা শাসকদল তৃনমূল কংগ্রেসের। আর মাস দেড় দুইয়ের মধ্যেই নির্বাচন খড়গপুর পৌরসভায়। নির্বাচনে এঁদের একটা বড় অংশকেই ভোট মেশিনারিতে কাজে লাগায় শাসকদল। এখন কোন পক্ষকেই চটানো মুশকিল। নমো নমো করে তাই পুলিশের ওপর ভরসা করছেন নেতারা। খড়গপুর টাউন থানা উদ্যোগ নিয়েছে সমস্যা সমাধানের। নেতারা কোনও পক্ষকেই চটাতে নারাজ। ভোটের সময় অটো কিংবা টোটোর পেছনে ফ্লেক্স বেঁধে নামের সাথে ছবি ঝোলাতে হবে যে!