নিজস্ব সংবাদদাতা: আবারও পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর শহর আবারও সেই শালবনীর শিক্ষিকাই নিজের হাতে চুল কেটে পাঠালেন ক্যানসার আক্রান্তদের জন্য। শুক্রবার, ৪ঠা জানুয়ারি সেই চুল বাক্সবন্দী হয়ে ক্যুরিয়ার মারফৎ উড়ে গেল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মদত’য়ের ঠিকানায়। উল্লেখ্য এই মদত নামক সংগঠনটি সেই চুলের পরচুলা বানিয়ে বিনামূল্যে উপহার দেয়,

শালবনী ব্লকের ঢেংবহড়া শশী ভূষণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূগোল শিক্ষিকা মুনমুন বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজের সাথেও যুক্ত। শহরের মানবিক সংস্থান নামক একটি গ্রূপের হয়ে নিয়মিত কাজ করে থাকেন। ক্যানসার রুগীর হয়ে দীর্ঘ লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। মুনমুন জানিয়েছেন, “আমার দিদিমা দীর্ঘ ৮ বছর ব্লাড ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছেন। মুম্বাই এর ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারের চিকিৎসায় ছিলেন। দিদিমা মারা যাবার পর আমার মাও ক্যানসারে আক্রান্ত হন। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর আজ তিনি সম্পূর্ন সুস্থ এবং জীবিত। মা যখন NRS মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তখন পায়ের পাশে থাকাকালীন দেখেছি। কেমো নেওয়ার পর মহিলাদের চুল পড়ে যাওয়ার পর একটা হীনমন্যতা গ্রাস করে তাঁদের। তাঁরা ভালো হয়ে যান কিন্তু মানুষের অন্যতম সৌন্দর্য এই চুল যা হারিয়ে একটা দীর্ঘ ট্রমায় চলে যান।
আমার সেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই নিজের প নিজের চুল উপহার হিসেবে পাঠালাম। এতে যদি একজনও ক্যানসার আক্রান্তের কাজে আসে তাহলে নিজেকে ধন্য বলে মনে করব। মুনমুন তাঁর এই উদ্যোগের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসাবে মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্রের দুই কর্ণধার শিক্ষক মনিকাঞ্চন রায় এবং মৌসুম মজুমদারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। মূলতঃ এঁরাই ক্যুরিয়ার করে পাঠিয়েছেন মদত ট্রাস্টের কাছে। উল্লেখ্য মানুষের আসল চুলে তৈরি এই পরচুলার দাম যথেষ্ট বেশী। ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে গিয়ে যে সমস্ত মানুষের সর্বস্ব চলে যায় তাঁদের কাছে এই পরচুলা কেনাটা সত্যিই খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তেমনই মানুষদের জন্য পরচুলা জোগান দেয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষ্যে ভারতীয় কন্যাদের কাছে নিজেদের চুল দান করার আহ্বান জানিয়েছিল ‘মদত’ নামে ওই সংস্থাটি। আল্পনা, সালমার পর এবার মুনমুনও সাড়া দিলেন সেই ডাকে।