নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজ্যে দৈনিক সংক্রমন ছড়িয়েছে রেকর্ড সংখ্যক। একদিনে এক হাজারেরও বেশি। বুধবার যেখানে দৈনিক সংক্রমন ছিল ১হাজার ৮৯ বৃহস্পতিবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২হাজার ১১৮। শুধু কলকাতাতেই একদিনে আক্রান্ত ৫৪০ থেকে ১০৯০ হয়েছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক কলকাতার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে। জানানো হয়েছে, কলকাতার সংক্রমণের হার ১২.৫ শতাংশ।

দেশের মধ্যেই এই হার সর্বাধিক। আর সেই বাড়তি সংক্রমনের মুখে বৃহস্পতিবার স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল স্কুল শিক্ষা দপ্তর। যা মাত্র কয়েকঘন্টার মধ্যেই প্রত্যাহার করে নিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে অভিজ্ঞ মহলে। কেনই বা ওই নির্দেশ জারি হল আর কেনই বা প্রত্যাহার তাই নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।
বৃহস্পতিবার বিকালে জারি করা ওই রাজ্যের শিক্ষাদপ্তরের জারি করা ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল কোন শিক্ষক শিক্ষিকা বা অশিক্ষক কর্মীদের সর্দি কাশি হলে তাঁর জ্বর থাকুক অথবা জ্বর না থাকুক তাঁকে স্কুলে আসতে হবে না (Omicron in West Bengal)। কোন রকম লক্ষণ তৈরি হলে সেই শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষক কর্মীকে অবশ্যই করোনা টেস্ট করতে হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ আসা পর্যন্ত তাঁকে স্কুলে আসতে দেওয়া যাবে না। ওই নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছিল ফ্লুয়ের কোনও লক্ষণ থাকলেও তাঁরা যেন স্কুল না আসেন। আর যদি করোনা পরীক্ষায় কারও পজিটিভ রিপোর্ট আসে তা’হলে তাঁর ব্যবহৃত সামগ্রী যেন ভালোভাবে স্যানিটাইজ করা হয়।
বুধবার গঙ্গাসাগর মেলার পর্যালোচনায় গিয়ে মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করায় এবং কিছু নির্দেশিকা জারি করতে বলায় শিক্ষামহলে ফের আশঙ্কা ছড়ায় সদ্য খোলা স্কুল কলেজ ফের বন্ধ হতে পারে বলে। বৃহস্পতিবার সেই উদ্বেগ দূর করতে ফের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, এখুনি স্কুল কলেজ বন্ধ হচ্ছেনা তবে, স্কুল-কলেজ থেকে যে সংক্রমণ হচ্ছে, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের জন্য আপাতত নির্দেশিকা জারি করল স্কুল শিক্ষা দফতর। ওমিক্রন আতঙ্কে এই প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দেশ জারি করেছিল রাজ্য।
কিন্তু ফল হয় হিতে বিপরীত। ওই নির্দেশে আতঙ্ক আরও ছড়িয়ে পড়ে। শীতকালে সর্দিকাশি, ফ্লু ইত্যাদি হয়েই থাকে কিন্তু তাকে করোনা ধরে নিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষকর্মীরা স্কুল আসা বন্ধ করে দিলে লাটে উঠবে স্কুল। কেউ সামান্য সর্দি হলে বা না হলেও হয়েছে বলে স্কুল এড়িয়ে ঘরে বসে থাকতেই পারেন। পরে একটি আরটি/পিসিআর পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দিলেই হল। তাছাড়া এই সর্দিকাশিকে করোনা ধরে নিয়ে যদি রাজ্যের একটি দপ্তর সবেতন ছুটি মঞ্জুর করে তবে অন্যদপ্তরেরও এই একই নিয়ম চালুর দাবি উঠলে লাটে উঠবে সরকারি কাজকর্ম। সম্ভবতঃ এই ধারনা থেকেই তড়িঘড়ি ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়।