নিজস্ব সংবাদদাতা: নজিরবিহীন নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি (Calcutta High Court) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার মধ্যেই তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে CBI কলকাতা দপ্তর নিজাম প্যালেসে। নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় যে ব্যাপক দুর্নীতির আভাস মিলেছে তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য গতকালই SSC কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ (Group D 2016 Scam) সংক্রান্ত একটি অন্য মামলায় প্রথম উঠে এসেছিল তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দিতে গিয়ে অনুসন্ধান কমিটি বলেছে, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুমতিতে যুগ্ম সচিব যে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল তা বেআইনি।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, চাকরি পাওয়া ৬০৯ জন পাশই করেননি। এসএসসি কাণ্ডে বিস্ফোরক রিপোর্ট পেশ করল তদন্ত কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্যানেলে ওই ৬০৯ জনের র্যাঙ্ক বদলানো হয়েছে। তাহলে সেক্ষেত্রে কি পিছনে কোনও প্রভাবশালীর মাথা কাজ করেছেন? এবার এসএসসি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়াল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর তৈরি করা সুপারিশ কমিটিই নাকি বেআইনি। এবার শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে CBI দপ্তরে হাজির দেওয়ার এই নির্দেশ গোটা মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিল অন্যদিকে। তবে কী SSC গ্রুপ ডি এবং নবম ও দশম শ্রেণির নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় CBI?
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে তাঁকে নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরে হাজিরা দেওয়ার পাশাপাশি অনুব্রত মন্ডলের কথা মাথায় রেখেই হয়ত আদালত জানিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী আবার যেন এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হতে না যান। আর জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি সিবিআই প্রয়োজন মনে করলে তাঁকে গ্রেফতারও করতে পারে বলে আদালত জানিয়ে দিয়েছে।
তবে শেষ অবধি পার্থ চট্টোপাধ্যায় রেহাই পেয়ে যান ডিভিশন বেঞ্চে। আদালতের ওই সিদ্ধান্তের স্থগিতাদেশ চেয়ে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি আনন্দকুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। নির্দেশ খতিয়ে দেখে ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, একক বেঞ্চের নির্দেশনামা হাই কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড হয়েছে কিনা ? দেখা যায়, তখনও একক বেঞ্চের নির্দেশ আপলোড হয়নি। এরপরই আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। বুধবার সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি থাকবে। মামলার পরবর্তী শুনানি তখনই শুরু হবে। ফলে এদিন বিকেলে সিবিআই দফতরে হাজির দিতে হয়নি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।