দেশ

Agnipath Movement: বিহার, রাজস্থান, হরিয়ানার সাথে আন্দোলন দক্ষিণেও, পুলিশের গুলিতে হত বিক্ষোভকারী! অগ্নিপথের আগুনে পুড়ছে যোগীর রাজ্যও

Published by
KGP Desk

নিজস্ব সংবাদদাতা: মোদী সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্প বিরোধী আন্দোলন এবার ছড়ালো দাক্ষিন্যাত্বেও। আর সেখানকার তরুণ সমাজের বিক্ষোভ এতটাই দুর্দমনীয় হয়ে উঠেছে যে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে গুলি চালাতে হয়েছে পুলিশকে। পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে এক আন্দোলনকারীর মৃত্যুর পাশাপাশি আহত হয়েছেন অন্ততঃ ১৫জন এমনটাই জানা গেছে। বৃহস্পতিবার বিহার থেকে উত্তরপ্রদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ার পর সেনাবাহিনীতে ৪ বছরের ঠিকা ভিত্তিক নিয়োগের বয়সসীমা ২১ বছরের পরিবর্তে ২ বছর বাড়িয়ে ২৩ বছর করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে এক বিন্দু ভাটা পড়েনি আন্দোলনে। শুক্রবার আন্দোলন ছড়িয়েছে তেলেঙ্গানায়। এইদিন দুপুরে সেকেন্দরাবাদ স্টেশনে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। ওই ঘটনায় এক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।

জানা গেছে শুক্রবার দুপুরে সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে আগুন লাগানো হয় প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা একটি যাত্রিবাহী ট্রেনে। পুলিশ সূত্রের খবর, স্টেশন চত্বরে ঢুকে পড়ে আন্দোলনকারীরা ট্রেন পোড়ায়। সে সময় উত্তেজিত জনতাকে ঠেকাতে অন্তত ১৭ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। নিহত যুবক তেলঙ্গানার ওয়ারঙ্গল জেলার বাসিন্দা বলে সেকেন্দরাবাদ পুলিশ জানিয়েছে। আহতদের মধ্যে ১৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে শুক্রবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দাক্ষিণাত্যে। রাজধানী হায়দরাবাদ এবং খম্মাম, নালগোন্ডার মতো জেলায় হয় অবরোধ। ঘটনাচক্রে, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে ভারতীয় সেনায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছেন তেলুগুভাষীরাই। ব্রিটিশ জমানায় গঠিত মাদ্রাজ রেজিমেন্টের অন্তর্গত ব্যাটেলিয়নগুলির সেনাদের বড় অংশই তেলঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। ওই দুই রাজ্যের যুবকদের দীর্ঘ দিন ধরেই সেনায় যোগদানের প্রবণতা রয়েছে। ফলে আগামী দিনে সেখানে অগ্নিপথ বিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার প্রথমে ট্রেনে আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটে বিহারের ছপরায়। শুক্রবার সকালে সেরকমই একটি ঘটনা ঘটে যোগী আদিত্যনাথ শাসিত পূর্ব-উত্তরপ্রদেশের বালিয়া স্টেশনে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনে আগুন জ্বালিয়ে দেন। ভাঙচুর করা হয় রেলস্টেশন। পুলিশ এবং রেলরক্ষী বাহিনীর সদস্যেরা দ্রুত গিয়ে জ্বলন্ত কামরাগুলি সরিয়ে নিয়ে পরিস্থিতি সামলেছেন। অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার থেকে বিহারের পর উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যদিও শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অগ্নিপথ প্রকল্পের সমর্থনে সরব হয়েছেন। বিহার, উত্তরপ্রদেশের পর দক্ষিনেও ট্রেনে আগুন লাগানোর ঘটনায় উদ্বিগ্ন রেল। রেল সূত্রে জানা গেছে এখনও অবধি ২০০ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ৩১৬টি ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত হয়েছে এবং ১২টি ট্রেন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রেলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি কোটি টাকা।

ওদিকে বিহার, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানার পর নতুন করে উত্তাল হয়ে উঠেছে হরিয়ানাও। পরিস্থিতি সামলাতে অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োজিত ‘অগ্নিবীর’দের চার বছরের মেয়াদ শেষের পর রাজ্য সরকারের চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছিলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। কিন্তু বিক্ষোভের আঁচ না মেটায় এ বার গুরুগ্রাম-সহ কয়েকটি এলাকায় জারি করা হল ১৪৪ ধারা। গুরুগ্রামের পাশাপাশি, আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য ফরিদাবাদের বল্লভগড়ে সমস্ত ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করা হয়েছে মোবাইল, ইন্টারনেট পরিষেবা।

উল্লেখ্য মঙ্গলবারই অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ওই প্রকল্পে সাড়ে ১৭-২১ বছরের তরুণ-তরুণীরা চার বছরের জন্য মাসিক ৩০-৪৫ হাজার টাকার চুক্তির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখায় (স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনা) যোগ দিতে পারবেন। তাঁদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’। সেনায় শূন্যপদ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চতুর্থ বছরের শেষে সেই ব্যাচের সর্বাধিক ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে সেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাকিদের ১১-১২ লক্ষ টাকা হাতে দিয়ে পাঠানো হবে অবসরে। থাকবে না কোনও পেনশন। এই ঘোষণার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই প্রথম জ্বলে ওঠে বিহার। আর তারপরই একটার পর একটা রাজ্যে শুরু হয়েছে আন্দোলন। শুক্রবার বাংলাতেও আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে। মনে করা হচ্ছে মোদী সরকারের আমলে ব্যাপক হারে বেকারত্ব বৃদ্ধি থেকেই তরুণ সমাজের মধ্যে তৈরি হওয়া হতাশাই এই আন্দোলনের শক্তি জোগাচ্ছে।

Recent Posts

Temple Tell: জীর্ণ মন্দিরের জার্ণাল-২০৯ ।। চিন্ময় দাশ

জীর্ণ মন্দিরের জার্ণাল চিন্ময় দাশবিষ্ণু মন্দির, প্রজাবাড় (ময়না, পূর্ব মেদিনীপুর) যত দূর চোখ যায়, সবজি…

11 months ago

Temple Tell: জীর্ণ মন্দিরের  জার্ণাল- ২০৮।। চিন্ময় দাশ

জীর্ণ মন্দিরের  জার্ণাল- ২০৮ চিন্ময় দাশ শ্রীশ্রী দামোদরজীউ মন্দির, হাসিমপুর (কেশিয়াড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুর) মেদিনীপুর জেলার…

11 months ago

Temple Tell: জীর্ণ মন্দিরের জার্ণাল-২০৭।। চিন্ময় দাশ

জীর্ণ মন্দিরের জার্ণাল চিন্ময় দাশ শিব মন্দির, মিত্রসেনপুর (চন্দ্রকোণা, পশ্চিম মেদিনীপুর)বহুকালের প্রাচীন নগরী চন্দ্রকোণা। ভানবংশ,…

11 months ago

Templ Tell: জীর্ণ মন্দিরের জার্ণাল- ২০৬।। চিন্ময় দাশ

জীর্ণ মন্দিরের জার্ণাল চিন্ময় দাশলক্ষ্মীজনার্দন মন্দির, শ্রীরামপুর (সবং, পশ্চিম মেদিনীপুর) জমিদারী গড়েছিলেন বটে, বৈষয়িক ছিলেন…

12 months ago

Temple Tell: জীর্ণমন্দিরের জার্ণাল- ২০৫।। চিন্ময় দাশ

জীর্ণমন্দিরের জার্ণাল চিন্ময় দাশ শ্রীশ্রী রসিকনাগর জীউ মন্দির, জয়ন্তীপুর (চন্দ্রকোণা শহর) মন্দির নগরী চন্দ্রকোণা। এর…

12 months ago

Temple Tell: জীর্ণ মন্দিরের জার্ণাল-২০৪।। চিন্ময় দাশ

জীর্ণ মন্দিরের জার্ণাল— ২০৪ চিন্ময় দাশবিষ্ণু মন্দির, মার্কণ্ডপুর (পাঁশকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর) রূপনারায়ণ নদ—মেদিনীপুর জেলার পূর্বাংশের…

12 months ago