নিজস্ব সংবাদদাতাঃ তৃনমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে সভা করে এসেছেন মাত্র এক সপ্তাহ হল। তারপরই সাংসদ অভিনেতা দেব ওরফে দীপক অধিকারীর গ্রামে তৃনমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসের দখল নিল সিপিএম। পার্টি অফিস থেকে তৃনমূলের লোকজনকে বের করে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার রাতের এই ঘটনায় তৈরি হওয়া উত্তেজক পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে যেতে হয় পুলিশকে।

সিপিএমের কেশপুর-১ এরিয়া কমিটির সদস্য অমিত দোলইয়ের দাবি, “তৃণমূলে সরকারে আসার পরেও নিজেরা এলাকায় কোনও পার্টি অফিস তৈরি করতে পারেনি। উল্টে তারা সিপিএমের পার্টি অফিস দখল নিয়েছে। আমরা অনেকদিন ধরেই ওদের নেতাদের বলে আসছিলাম আমাদের এই অফিস ছেড়ে দেওয়ার জন্য। ওরা আমাদের অনুরোধে কর্নপাত করেননি। বাধ্য হয়েই তালা লাগিয়েছি।” অমিত আরও বলেন, ২০১৪ সালে প্রথম এই পার্টি অফিসের দখল নেয় তৃনমূল। আমরা ২০১৬ এই পার্টি অফিস নিজেদের দখলে আনি কিন্তু ২০২১ সালে নির্বাচনের পর আবারও পার্টি অফিসের দখল নেয় ওরা।”
পুলিশ এসে পার্টি অফিসের চাবি চাইলে তা দিতে অস্বীকার করে অমিত। জানা যায় অমিত পুলিশকে জানিয়ে দেন অনেক মিথ্যা মামলা তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ দিয়েছে। তাঁকে জেল খাটিয়েছে। তিনি আর জেলের ভয় পাননা। চাবি তিনি দেবেননা। এরপরই পুলিশ তাঁকে বলে, তিনি পদ্ধতি মেনে পুলিশের কাছে পার্টি অফিস ফেরত চান। লিখিত ভাবে অফিস দখলের অভিযোগ জানান। পুলিশ বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তারপর চাবি ফেরত দেওয়া হয়। তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘‘জোর করে সিপিএমের মদতে ওই পার্টি অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছে একজন। আমরা চাইলেই ব্যবস্থা নিতেই পারতাম। কিন্তু আইন মেনে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে আমাদের কর্মীরা। ওঁদের পার্টি অফিসে বসার মতো লোকই নেই। তার পরেও ওঁরা পার্টি অফিস দখল করছে!’’
যদিও ঠিক পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এই ঘটনায় কেশপুরে তৃণমূলের সাংগঠনিক ভিত্তি দুর্বল হচ্ছে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তাঁদের মতে পঞ্চায়েত স্তরে ব্যপক দুর্নীতির জন্য গন ভিত্তি হারাচ্ছে তৃনমূল। দলের মধ্যেই খেয়োখেয়ি আর উপদলীয় কার্য কলাপ তৃনমূল কে কতটা দুর্বল করে দিয়েছে এই ঘটনা তারই প্রমাণ। না হলে যে এলাকায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মাত্র সাতদিন আগে সভা করে যায় সেখানে সিপিএম তৃনমূলের অফিসে তালা লাগিয়ে দিতে পারে?