নিজস্ব সংবাদদাতা: ৩০শে সেপ্টেম্বর ভবানীপুর কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। কলকাতার এই কেন্দ্র এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য প্রেস্টিজের লড়াই। নন্দীগ্রামে পরাজয়ের লজ্জা এখান থেকেই কাটাতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী ও তৃনমূল কংগ্রেস। কিন্তু এরই মধ্যে উদ্বেগ বাড়ালো কলকাতার করোনা গ্রাফ। রাজ্যে ফের বাড়ল করোনার দৈনিক সংক্রমণ। আর তারমধ্যে শীর্ষস্থানে সেই কলকাতাই।
শনিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭০০ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যা ছিল ৬৮৬। সংক্রমণ অনেকটা বেড়েছে কলকাতাতেও। শেষ ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় ১২৯ জন নতুন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। এই নিয়ে পর পর চার দিন ১০০-র উপর রইল কলকাতার দৈনিক করোনা সংক্রমণ।
শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ১৫ লক্ষ ৫১ হাজার ৩৬৪-তে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৫ লক্ষ ২৪ হাজার ১৯৪ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনার পরীক্ষা হয়েছে ৪৪ হাজার ১৩১ জনের। সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ১.৫৫ শতাংশ। তবে শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। শেষ পাঁচ দিন ১০-এর উপরে ছিল মত্যুর সংখ্যা, তা কমে হয়েছে ৮।
জেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যাচ্ছে, নতুন করে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় এই দুই জেলাতেই সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছিল। শেষ ২৪ ঘণ্টার হিসাবেও সংক্রমণের নিরিখে তালিকার শীর্ষে রয়েছে এই দু’টি জেলা। এর মধ্যে কলকাতায় নতুন করে ১২৯ জন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনায় ১১৫ জন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
রাজ্যের করোনা গ্রাফে এরপরেই রয়েছে হুগলি (৫০), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৪৪) ও হাওড়া (৪২)। করোনা বাড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। জেলাগত বিচারে পশ্চিম মেদিনীপুর রয়েছে সপ্তম স্থানে। এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩৫ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে। গত ২রা সেপ্টেম্বর এই সংখ্যাটি ছিল ৪৬ এবং ৩রা সেপ্টেম্বর ৩৪জন।
অন্যদিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে টিকা পেয়েছেন ৫ লক্ষের বেশি। এই সময়ে টিকাপ্রাপ্তের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৪২ হাজার ৩২৯। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট টিকা পেয়েছেন ৪ কোটি ২৭ লক্ষ ৮৮ হাজার ৫৮৯ জন। যদিও এই সংখ্যাটি রাজ্যের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও কম। এরই মধ্যে দেশ জুড়ে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা বাড়ছে। কেরল সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ফের বাড়ছে করোনার প্রতাপ।
তারই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেও ফের বাড়তে থাকা এই সংক্রমন দুশ্চিন্তার কারন হয়ে দাঁড়াচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কাছে। অনেকের আবার ধারণা তড়িঘড়ি করে উপনির্বাচনের তাগিদ থেকে রাজ্যে করোনা সংক্রমনের প্রকৃত তথ্য কম করে দেখানো হচ্ছে। রাজ্যের সংক্রমনের প্রকৃত অবস্থা আরও খারাপ।