Friday, May 3, 2024

Mondermoni: মন্দারমণির ৫০টি হোটেল বন্ধের নির্দেশ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের

The West Bengal Pollution Control Board has ordered immediate closure of 50 hotels at Mondermoni Sea Beach, a beach run in violation of the Coast Regulation Act. Not only that, in the notice sent last week, a total of 13 departmental departments, including the state's livestock development department and the police superintendent of East Midnapore, have been informed about the decision to close these hotels. Besides, Mandarmani Coastal Police Station has been asked to take legal action against the 50 hotels under the police station within 7 days. The district police has been asked to provide necessary security to the administration in case of closure of hotels. The incident has caused a stir in various quarters. Over the last two decades, the High Court and the State Pollution Control Board, the Environmental Court or the Green Bench have at various times raised the issue of building hotels in Mandarmoni violating the rules, destroying the beach environment in the name of tourism. Finally, a big push came from the State Pollution Control Board.

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: উপকূল রক্ষা আইন ভেঙে চালানো সৈকত রানী মন্দারমনির (Mondermoni Sea Beach)৫০টি হোটেল অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিল রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (West Bengal Pollution Control Board)। শুধু তাই নয় গত সপ্তাহে পাঠানো ওই নোটিশে রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তর, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সহ মোট ১৩টি বিভাগীয় দপ্তরকে জানানো হয়েছে  এই হোটেলগুলি বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা। পাশাপাশি মন্দারমণি কোস্টাল থানাকে বলা হয়েছে ওই থানার আওতায় থাকা ওই  ৫০ টি হোটেলর বিরুদ্ধে ৭ দিনের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। হোটেলগুলি বন্ধ করার ক্ষেত্রে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে জেলা পুলিশকে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে। গত প্রায় দু’দশক ধরে উচ্চ আদালত এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, পরিবেশ আদালত বা গ্রীন বেঞ্চে বিভিন্ন সময়ে উঠে এসেছে মান্ডারমনিতে নিয়মকানুন ভেঙে হোটেল নির্মাণের কথা, পর্যটনের নামে সৈকতের পরিবেশ ধ্বংসের কথা। অবশেষে একটা বড়সড় ধাক্কা এল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এই নির্দেশে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

উল্লেখ্য মন্দারমনির হোটেল ব্যবসায়ীদের বৃহৎ অংশের বিরুদ্ধে বরাবরই সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের নিয়ম বিধি (CRZ) লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠে এসেছে। কয়েক বছর আগে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্ট হাতে পেয়ে এ প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্টও। সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল—সিআরজেড-এর নিয়ম ভেঙে ওই সৈকতে যে নির্মাণ হয়েছে সেখানে ব্যবসা করা চলবে না। মন্দারমণির সৈকতে নতুন করে আর কোনও নির্মাণের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল হাইকোর্ট। কিন্তু আদালতের সেই ফতোয়া সত্ত্বেও মন্দারমণির সমুদ্র ছুঁয়ে নিত্যনতুন হোটেল নির্মাণে ছেদ পড়েনি। চলছিল সৈকত জুড়ে গাড়ি-বাইকের দাপাদাপিও। সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের তা নিয়ে অবশ্য কোনও হেলদোল ছিল না। বরং ২০১১ সালে সরকার বদলের পরে, দিঘা-মন্দারমণিতে সৈকতের ওপর অত্যাচার বেড়েছে। একের পর এক কংক্রিটের জঙ্গল গড়ে তোলা হয়েছে সৌন্দর্যায়নের নামে। সরকারি প্রশ্রয়ে প্যারাসেলিং, বিচ বাইকের মতো বেশ কিছু ওয়াটার স্পোর্টস চালু হয়েছে। যাকে কার্যত সৈকতের বুকেই নির্মাণ আর যথেচ্ছ দাপাদাপির সিলমোহর বলেই ধরে নিয়েছে এক শ্রেণীর হোটেল ব্যবসায়ী।

মন্দারমণির সৈকত যে ক্রমেই উপকূল-আইন ভাঙার আঁতুরঘর হয়ে উঠছে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্টে তা প্রথম তুলে ধরেছিলেন দফতরের তৎকালীন মুখ্য আইন অফিসার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘২০০৪-এ প্রথমবার মন্দারমণি গিয়েই আঁচ করেছিলাম, বালিয়াড়িতে গাড়ি চলাচল শুরু হলে জীব বৈচিত্র্য ভেঙে পড়তে সময় লাগবে না।’’ অনুমান ভুল ছিল না। ২০০৬ সালে পর্ষদের রিপোর্ট বলছে—মন্দারমণির সমুদ্র ছোঁয়া ৫৩টি হোটেল এবং বালিয়াড়ি জুড়ে গাড়ির দাপাদাপিতে হারিয়ে যাচ্ছে, দু’টি অপরিহার্য় প্রাণী, লাল কাঁকড়া এবং সমুদ্র-মাকড়সা।

উপকূল আইন অনুসারে জলোচ্ছ্বাসের সময় সমুদ্র যতটা এগিয়ে আসে, অর্থাৎ হাই টাইড জোনের ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনও স্থায়ী নির্মাণ করা যাবে না। অথচ সেই সময়ে মন্দারমণির প্রায় সব হোটেলই ছিল একেবারে সমুদ্র ছুঁয়ে। ২০০৬ সালে পর্ষদের আপিল আদালত তাই ৮টি হোটেল বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। নিষেধাজ্ঞা জারি হয় নতুন নির্মাণের উপরেও। পরের বছর, পর্ষদের উপরেই দায়িত্ব সঁপে হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, উপকূল-বিধি মেনে চলার ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করতে হবে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে। তবে এর পরেও বিধি ভেঙে পর্যটন প্রসারে দাঁড়ি পড়েনি। বরং বছর কয়েকের মধ্যেই মন্দারমণিতে হোটেল সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩টি।

বিধি ভেঙে হোটেল তৈরির বিরাম নেই জানতে পেরে,  বছর কয়েক আগে ফের পর্ষদ এবং সিআরজেড কর্তৃপক্ষকে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশেই ২০২১ সালের আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে দফায় দফায় মন্দারমনিতে পরিদর্শনে আসেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণের কর্তারা। পরিবেশ, দূষণ, জীববৈচিত্র্য ইত্যাদির পাশাপাশি হোটেলগুলিতেও পরিদর্শন করেন তাঁরা। এরপরই হোটেলগুলিকে হোটেল পরিচালনার জন্য বৈধ অনুমতি পত্র ( Concent to operate)দেখাতে বলা হয়। অর্থাৎ সরকারের কোন উপযুক্ত দপ্তর তাঁদের হোটেল চালানোর বৈধতা দিয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়। বহু হোটেলই তা দেখাতে পারেনি। ওই বছরই ১০ই ডিসেম্বর হোটেলগুলিকে কারন দর্শানোর নোটিশ বা Show Cause করা হয় এবং বলা হয় ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে সেই Concent to Operate সহ জবাব দিতে হবে। বলাবাহুল্য হোটেল গুলি তা জমা দিতে পারেনি। এরপরই ওই ৫০টি হোটেলের নাম উল্লেখ করে হোটেলগুলি অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া  হয়।

- Advertisement -
Latest news
Related news