নিজস্ব সংবাদদাতা: দুশ্চিন্তায় বনদপ্তর, বিশাল এক হাতির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে কলাইকুন্ডা বিমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খুব কাছাকাছি। যদি কোনও কারনে হাতির দল ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে ঢুকে পড়ে ঘটে যেতে পারে বডসড় দুর্ঘটনা। হতাহত হতে পারে বহু হাতি। কী হবে তা’হলে! মেঘমুক্ত শীতের সকাল। বম্বিং প্রশিক্ষণের উপযুক্ত সময়। এই সময়টাই বায়ুসেনার (Indian Air Force) বৈমানিকরা বেছে নেন আকাশ থেকে মাটিতে বোমা বর্ষন করে টার্গেট প্র্যাকটিস করার জন্য। ভারতের শক্তিশালী বায়ুসেনা ঘাঁটি যা কিনা এশিয়ার সর্ববৃহৎ বিমান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সেই কলাইকুন্ডা (Kalaikunda Air base) থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বিমান উড়ে যায় পেট ভর্তি বোমা নিয়ে। তারপর মূল এয়ারবেস থেকে দুধকুন্ডি বোমা নিক্ষেপন কেন্দ্রে (Dudhkundi Airfield) দিকে। টার্গেট ঠিক করে দেওয়া চিহ্নিত জায়গায় বোমা নিক্ষেপ করে আবার ফিরে আসে বিমান ঘাঁটিতে।
এই সময় খড়গপু্র শহর সহ ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন গ্রাম থরথর করে কেঁপে ওঠে বোমা নিক্ষেপের প্রতিঘাতে। স্থলপথে কলাইকুন্ডা থেকে দুধকুন্ডি ২১ কিলোমিটার দূরে হলেও বিমান পথে দুরত্ব কয়েক মিনিটের। যদিও গত কয়েকদিন ধরেই এই এলাকায় অবস্থান করা হাতির দল সম্প্রতি কপালে ভাঁজ ফেলেছে বনদপ্তরের। ঘন জঙ্গলের মধ্যে থাকা এই প্রশিক্ষণ এলাকার পাশাপাশি থাকা হাতির দল মারাত্মক বিপদের মুখে রয়েছে বলে আশংকা বন বিভাগের।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে দলমার প্রায় একশ হাতির একটি দল ঘুরে বেড়াচ্ছে দুধকুন্ডি প্রশিক্ষন ঘাঁটি সংলগ্ন জঙ্গল ও গ্রাম গুলিতে। ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সীমান্তে সাঁকরাইল ও খড়গপুরের বনাঞ্চলে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে ঘোরা ফেরা করছে এই হাতির দল। সব চেয়ে বড় ৫০ থেকে ৬০ টি হাতি এই মুহুর্তে অবস্থান করছে খড়গপুর বনবিভাগের ( Kharagpur Forest Division) কলাইকুন্ডা ফরেস্ট রেঞ্জের জটিয়ায়। রয়েছে। আরও ৪টি দল ঘোরা ফেরা করছে ঝাড়গ্রাম থানার বড়গহীরা, ছোট গহীরা, গোটাবিলা, সাঁওতালডিহা, সিরষি শালতোড়িয়া ইত্যাদি গ্রামগুলি সংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা গেছে কোথাও ৩৫, কোথাও ১২, কোথাও আবার ৭/৮ টি দলে অবস্থান করছে হাতি গুলি। বনদপ্তর সূত্রে জানা যাচ্ছে সব মিলিয়ে হাতির সংখ্যা শতাধিক।
স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হাতির দলগুলি রীতিমত তাণ্ডব চালাচ্ছে। সারাদিন তারা গভীর জঙ্গলের থাকলেও সন্ধ্যা নামার পরই তারা নিকটবর্তী গ্রাম গুলিতে। গৃহস্থের সদ্য মজুত করা পাকা ধান খেয়ে ফেলছে হাতির দল। দিনে হাতি থাকছে বড়গহীরা, বড়শোলের জঙ্গলে। আর রাতে ঢুকে পড়ছে বামদা, সগড়ভাঙা, ছোট গহীরা, শালতোড়িয়া প্রভৃতি গ্রামগুলিতে। গৃহস্থের ঘরে ঢুকে বস্তাবন্দি ধান টেনে খেয়ে সরে পড়ছে। গ্রামবাসীদের এই সমস্যার পাশাপাশি বনদপ্তরের আশংকা হাতির দল ঘুরতে ঘুরতে যদি বম্বিং এরিয়ার মধ্যে ঢুকে পড়ে তাহলে বহু সংখ্যক হাতি হতাহত হতে পারে। বনদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে হাতির দলকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।