নিজস্ব সংবাদদাতা: পরকিয়ার যেন ঝড় চলছে চারদিকে। হাওড়ার নিশ্চিন্দায় দুই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে দুই জা পালিয়ে যাওয়ার পর পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় এক গৃহবধূ সন্তান সহ পালিয়ে এক যুবককে বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেছেন। সেই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই এক গৃহবধূ ও তার সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত অভিযোগে দুজনকেই গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

রীতিমত সালিসি বসিয়ে এই কাজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সেই সালিসিতে ওই গৃহবধূ ও যুবককে মুচলেকা লিখিয়েও নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতের এই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের কুলটিকরি গ্রামে। প্রতিবেদনে ওই গৃহবধূর পরিচয় গোপন রাখা হল। ঘটনায় কোনও পক্ষ থেকেই থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে ভিলেজ পুলিশ কে পাঠানো হয়েছিল।
জানা গেছে দুই সন্তানের ওই গৃহবধূর স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। গৃহবধূর দেওরও বাইরে থাকেন। ঘটনার সময় ওই গৃহবধূর জা বাড়িতে ছিলেননা, বাপের বাড়ি গেছিলেন। গ্রামবাসীদের দাবি এই সুযোগেই ওই দেওরের বাড়িতে ওই গৃহবধূর পাশের গ্রাম মাগুরিয়ার এক যুবক রাত্রিবাস করছিল। দুজনেই অসংবৃত অবস্থায় ছিলেন।
এই অবস্থায় তাঁদের ধরে ফেলেন প্রতিবেশী ও জ্ঞাতিরা। খবর পেয়ে রাতেই জমা হয়ে যান গ্রামের কিছু মহিলা পুরুষ। আটক করা হয় যুবককে! মারধরের পাশাপাশি ওই গৃহবধূকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেওয়া হয় বলেও জানা গেছে।
প্রতিবেশী ও গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকের দাবি, অনেকদিন ধরেই ওই ছেলের সঙ্গে বিবাহ বহিঃর্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠে। যদিও অভিযুক্ত যুবক যিনি একজন সোনার কারিগর জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কোনও পরকিয়া সম্পর্ক নেই। ওই গৃহবধূ তিনি দিদির মতই মনে করেন এবং কিছু টাকা ধার করতে সে ‘দিদি’র কাছে এসেছিল! বাড়ির বাইরে সেই টাকা দেওয়া উচিৎ নয় বলেই তাঁকে ঘরে ডেকে নিয়েছিল ওই গৃহবধূ। আর সেটাকেই হাতিয়ার করেছে গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীদের দাবি, জা বাপের বাড়িতে যাওয়ায় দেওরের ভাড়াবাড়ির চাবি ছিল ওই গৃহবধূর বাড়িতে। সেই চাবি লুকিয়ে বের করে নিয়ে রাতে দু’জনে ওই রুমে ঢোকে। প্রায় ঘন্টা দুয়েক বাড়ির মধ্যে গৃহবধূকে না দেখেতে পেয়ে বাড়ির লোকের সন্দেহ হয় তারপর খোঁজ করতে গিয়ে দু’জনকে একটি রুমে অসংলগ্ন অবস্থায় দেখা যায়। দু’জনকে আটকে, যুবককে মারধরও করা হয়।
এরপরই গ্রামবাসীরা ওই দুজনকে মুচলেকা দিয়ে বাড়ি ছাড়া করেন। রাতেই গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয় দুজনকে। এক গ্রামবাসী বলেছেন, ওই গৃহবধূর সন্তানদের শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই প্রতিপালন করবে। ওই গৃহবধূকে যেহেতু তাঁর পরিবারের লোকেরা রাখতে রাজী নন তাই আমরা গৃহবধূকে তার প্রেমিকের হাত ধরে গ্রাম ছাড়তে বলেছি। গৃহবধূর সম্পর্কিত এক শাশুড়ি ছায়া দোলই বলেন, ‘ও আমাদের বাড়ির বড় পুত্রবধূ। সেই যদি এই কাজ করে তবে তাকে বাড়িতে রাখলে বাকি বউ মেয়েরাও খারাপ পথের অনুগামী হবে। তাই ওকে আর বাড়িতে রাখা যায়না। তার চেয়ে ভালো ও নিজের ভালোবাসার লোকের সঙ্গে চলে যাক।’
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘এই ঘটনার কথা আমরাও শুনেছি। তবে এনিয়ে কোনও অভিযোগ হয়নি। ঘটনার কথা শোনার পর শনিবার সকালে ওদের বাড়িতে সিভিক ভলেন্টিয়ারকে পাঠানো হয়েছিল। দেখে এসেছে, মহিলা তাঁর শ্বশুর বাড়িতেই আছেন। হতে পারে প্রথমে ওই গৃহবধূকে গ্রামের বাইরে করে দিলেও পরে গৃহবধূ ফিরে আসলে আইনের ভয়ে তাকে ফের রাখতে বাধ্য হয়েছে।’