Monday, May 20, 2024

SSC ED: ইডি-র জালে এসএসসি দুর্নীতির দ্বিতীয় পান্ডা মানিক ভট্টাচার্য! পূজো শেষ হতেই গারদে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: গ্রেফতার এড়াতে দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের। সর্বোচ্চ আদালত বলেছিলেন পূজোর মধ্যে গ্রেফতার করা যাবেনা তাঁকে তাই পূজো শেষ হতেই তাঁকে জালে তুলল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট বা ই.ডি। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের পর ই.ডির  বড়সড় গ্রেফতার এই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। ই.ডি জানিয়েছে, বক্তব্যে অসঙ্গতি এবং তদন্তে লাগাতার অসহযোগিতার কারনেই গ্রেফতার করা হল পলাশিপাড়ার বিধায়ককে। উল্লেখ্য লক্ষী পূজা শেষ হওয়ার পরের দিন অর্থাৎ সোমবার  সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠানো হয়েছিল মানিককে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অধিকাংশ প্রশ্ন হয় তিনি এড়িয়ে গেছেন অথবা তদন্তকারী আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন এমনটাই জানা গেছে ইডি সূত্রে। তারপরই গভীর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গেছে।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

ইডি সূত্রে জানা গেছে শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মানিককে আজই আদালতে পেশ করা হবে। ধৃত মানিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে এবং তদন্তে সহযোগিতা করছেন না তিনি। কোন কোন পথে নিয়োগ হয়েছে, কত দূর দুর্নীতির বীজ লুকিয়ে, কারা এই দুর্নীতিতে যুক্ত, কীভাবে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে, এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য মানিকের কাছে জানতে চেয়েছিল ইডি।  ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে যে নথি জমা দিয়েছেন, সেখানে একাধিক গরমিল রয়েছে।

ইডি সূত্রে খবর, গতকাল জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগের সপক্ষে তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরা হয় মানিকের সামনে৷ প্রায় ১১ ঘণ্টা জেরা করা হয় তাঁকে৷ ওএমআর শিট নষ্ট করা, ফোনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কথোপথনের চ্যাট হিস্ট্রি দেখিয়েও প্রশ্ন করা হয় মানিককে৷ পাশাপাশি, করোনার সময়ও বিএড কলেজের পড়ুয়াদের থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তোলা নিয়েও মানিককে প্রশ্ন করেন তদন্তকারীরা৷ কোনও ক্ষেত্রেই মানিক সদুত্তর দিতে পারেননি বলে ইডি সূত্রে দাবি৷

অবশ্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার পর ইডি যে চার্জশিট দিয়েছিল, তাতে নাম ছিল মানিকের। ফলে গ্রেফতারের সম্ভবনা এমনিতেই তৈরি ছিল। চার্জশিট জমা দেওয়ার পর মানিক অযাচিত ভাবেই ইডি আধিকারিকদের কাছে গিয়ে কিছু কাগজপত্র জমা দিয়ে এসেছিলেন। অন্যদিকে সর্বোচ্চ আদালতের স্মরনাপন্ন হয়ে টেট-কাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের সিবিআই তদন্তের চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করেন মানিক। যদিও টেট মামলায় সিবিআই তদন্ত করার যে নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্ট দিয়েছিল, তাতেও স্থগিতাদেশ দেয়নি দেশের শীর্ষ আদালত। কিন্তু এর মধ্যেই মানিককে গ্রেফতার করল ইডি।

একজন প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর গ্রেফতারের পর প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতির গ্রেফতার এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সরকারের নীতিকেই প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিল। মানিক ভট্টাচার্যের গ্রেফতারে সন্তোষ প্রকাশ করে রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধানদের সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস(এ এস. এফ্ এইচ এম) এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির  সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেছেন, ” *রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি এবং তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরটের হাতে গ্রেফতার কে আমরা স্বাগত জানাই। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, ট্রান্সফারের জন্য অর্থ সংগ্রহ, বিএড,ডি এল এড কলেজকে অবৈধভাবে অনুমোদন পাইয়ে দেওয়া এবং প্রতিবছর রাজ্যের প্রায় প্রত্যেকটি প্রাইভেট বিএড কলেজ থেকে প্রভাব খাটিয়ে, পুনর্নবীকরণ এর ভয় দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা,সাদা খাতা জমা নিয়ে শিক্ষক পদে চাকরী দেওয়া, ও এম আর শিটের প্রাপ্ত নম্বর বদল করা,তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্য ও এম আর শীট পোড়ানো, সহ নানা অভিযোগ তাঁর বিরূদ্ধে। এঁদের মত মানুষজন এতদিন ধরে এক নাগাড়ে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার শীর্ষে থেকে বাংলার শিক্ষা জগতে কলঙ্কময় অধ্যায় রচনা করলেন।মেধা সম্পন্ন বেকার চাকুরিপার্থী পরিক্ষার্থীদের নিয়ে মস্করা করা, হাটে বাজারে চাকরী বিক্রি করার সঙ্গে যুক্ত থাকা উচু থেকে নীচুতলা পর্যন্ত জড়িত দোষীদের চিহ্নিত করে প্রত্যেকের কঠোরতম সাজা চাই।”

- Advertisement -
Latest news
Related news