নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিতে (Primary Teacher Scam) যুক্ত আছেন এই অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল মানিক ভট্টাচার্যকে। সোমবার এমনই নির্দেশকে ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। শুধু তাই নয় দিলেন কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মানিক ভট্টাচার্যকে মঙ্গলবার অর্থাৎ আগামীকালই
আদালতে হাজিরা দিতে বলেছেন যাকে ঘিরে আরও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে মানিক কী তবে গ্রেফতারের পথে? সোমবার নিজস্ব বেঞ্চে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার শুনানি পর্বে বিচারপতি পরিষ্কার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, মঙ্গলবার দুপুর দু’টোর মধ্যে মানিক ভট্টাচার্যকে আদালতে হাজির হতে হবে এবং বিচারপতি কয়েকটি প্রশ্ন করবেন তাঁকে যার জবাব দিতে হবে সদ্য অপসারিত পর্ষদ সভাপতিকে ।
মাত্র কয়েকদিন আগে প্রাথমিকে হাতে নাতে দুর্নীতি ধরা পড়ায় বাতিল হয়েছে ২৬৯ জনের চাকরি, যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে জানা যাচ্ছে চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া এখানেই থেমে থাকার নয়। কোনও কোনও সূত্রে দাবি করা হচ্ছে আরও ৫ থেকে ১২ হাজার জনের চাকরি চলে যেতে পারে। আর এখানেই রয়েছে আসল রহস্য যে কারনে সঙ্কটে রয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য। কিছুদিন আগেই মানিক ভট্টাচার্যকে নিজেদের দপ্তরে ডেকে টানা কয়েক ঘন্টা জেরা করেছে সিবিআই। সেই জেরায় কী পাওয়া গেছে তা আদালতকে জানিয়েছে সিবিআই। যদিও সিবিআই আদালত ঠিক কী জানিয়েছে তা জানা যায়নি। তবে অভিযোগ, যে
২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু আসল নথি চেয়েছিল আদালত কিন্তু সেই নথি পেশ করেনি পর্ষদ, উলটে আদালতকে ভুল পথে চালনা করেছে। যার সম্পূর্ণ দায় মানিক ভট্টাচার্যের। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পরিস্কার বলেছেন, “আজকে ২৭৮৭ জন আবেদনকারীদের মধ্যে ১ জনেরও নম্বর পুণর্মূল্যায়নের জন্য দাখিল করা আবেদনপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি। পর্ষদের এই আচরণ গ্রহনযোগ্য নয়।”
এদিন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আদালত গ্রহণ করেছে তা’হল আদালতের সামনে পেশ করা ওই ২৭৮৭ জনের নাম এবং রোল নম্বরের তালিকা, নম্বর পুনর্মূল্যায়নের জন্য গঠিত বিশেষ কমিটির সদস্যদের নাম এবং গঠনের দিন সংক্রান্ত নথি, এই বিশেষ কমিটির রিপোর্ট, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সিদ্ধান্ত এবং বোর্ডের অনুমোদন সংক্রান্ত নথি গুলির প্রিন্ট আউট কবে নেওয়া হয়েছে এবং তাতে যে স্বাক্ষরগুলি রয়েছে সেগুলিই বা কবে করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য দিল্লি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত পর্ষদ এবং বিশেষ কমিটির বিভিন্ন নথি এখনও এত স্পষ্ট এবং উজ্জ্বল কীভাবে রয়েছে, সে বিষয়ে এই আদালত সন্দিহান। তাই ফরেনসিক পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।” মঙ্গলবার এসবই প্রশ্ন হয়ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অপসারিত পর্ষদ সভাপতিকে। পাশাপাশি সিবিআই এতদিন তদন্তে যা পেয়েছে তারও ভিত্তিতে কিছু প্রশ্ন করা হতে পারে মানিক ভট্টাচার্যকে। আর তারপরই সিদ্ধান্ত হবে আগামীকালই ২৭৮৭ জনের চাকরি বাতিল হয়ে যাচ্ছে কিনা?