
নিজস্ব সংবাদদাতা: টানা ১৭০দিন পর ফের রাজ্যে চালু হতে চলেছে লোকাল ট্রেন। আগামী রবিবার (৩১ অক্টোবর) থেকে রাজ্যে চালু হচ্ছে এই লোকাল ট্রেন পরিষেবা। ঘটনাক্রমে তার ৪৮ ঘন্টা আগেই বৃহত্তর মহড়া দিয়ে ফেলল দক্ষিণপূর্ব রেলের খড়গপুর ডিভিশন। যদিও এই ঘটনাটিকে একেবারেই কাকতলীয় বলে জানিয়েছেন রেলের কর্তারা। তবুও সাড়ে ৫ মাস পরে বাংলায় লোকাল ট্রেন চালুর ঘোষণার সাথে এই মহড়া যেন অনেকটাই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল। শুক্রবার নবান্নের তরফে ঘোষিত এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে আপাতত ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে লোকাল ট্রেন চালু হবে।
উল্লেখ্য বাংলায় অতিমারী আক্রমনের দ্বিতীয় পর্যায়ে গত ১৬ মে থেকে রাজ্যে আমজনতার জন্য লোকাল ট্রেন পরিষেবা করে দেওয়া হয়েছিল। অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর রাজ্যে কিছু স্পেশাল এক্সপ্রেস চালু করা হয়। পরবর্তীকালে রেলের কর্মী, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মী-সহ একাংশের জন্য ‘স্টাফ স্পেশাল’ ট্রেন চালানো হচ্ছে। কিছু জায়গায় চালু হয়েছিল কৃষক স্পেশালও।
যদিও রাজ্য লোকাল ট্রেন চালানোর অনুমতি দেয়নি। গত কয়েকমাস ধরে রাজ্য জুড়ে লোকাল ট্রেন চালু করার দাবি উঠছিল। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বেসরকারি চাকুরিজীবীরা চূড়ান্ত অসুবিধায় পড়েছিলেন। বিশেষ করে আগামী ১৬ই নভেম্বর থেকে বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন চালুর ঘোষণার পর সেই দাবি জোরালো হয়ে উঠেছিল। শেষ অবধি সেই ঘোষণা করে দিল রাজ্য।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানান, রাজ্য সরকারের নির্দেশেই গত মে মাস থেকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ ছিল। আবার রাজ্য সরকারের অনুমতি পাওয়ায় আগামী রবিবার থেকে ট্রেন পরিষেবা চালু করা হবে। তবে রেলের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের কাছে আর্জি ট্রেন পরিষেবা শুরু হলেও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ট্রেনে সফর করবেন না। প্রসঙ্গত, গতকাল থেকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে মুম্বাইয়ে। সেন্ট্রাল রেলওয়ে ও ওয়েস্টার্ন রেলওয়ের তরফ থেকে ১০০ শতাংশ ট্রেন চালানো শুরু করা হয়েছে। গত ২২ মার্চ থেকে সেখানে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
এদিকে শুক্রবারই খড়গপুর রেল ডিভিশনের পক্ষ থেকে একটি দুর্ঘটনা সম্পর্কিত মহড়া দেওয়া। খড়গপুর শহরের বাইরে নিমপুরা রেলইয়ার্ডে এই মহড়ার আয়োজন করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ঘটনাক্রমে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে জড়িত রেলের বিভিন্ন বিভাগগুলি কিভাবে তৎপর হয়ে ওঠে তা দেখা। রেলের শীর্ষ আধিকারিকরা এই মহড়া পর্যবেক্ষণ করার জন্য উপস্থিত ছিলেন। খড়গপুর ডিভিশনের তরফে জানানো হয়েছে 95821 নম্বর একটি হাওড়াগামী এক্সপ্রেস (কল্পিত ) ট্রেনটিকে বেছে নেওয়া হওয়া লাইনচ্যুত ট্রেন হিসাবে।শুক্রবার বেলা 10.50 ছিল দুর্ঘটনার সময়।
দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছাতে শুরু করে আরপিএফ, মেডিকেল টিম, চিকিৎসক, এনডিআরএফ, স্কাউট, সেন্ট জনস আ্যম্বুলেন্স সহ রেলের বিভিন্ন দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকরা। খড়গপুর রেলের তরফে জানানো হয় দুর্ঘটনা বা কোনও বিপর্যয় ঘটে যাওয়ার পরবর্তী পরিস্থিতিতে যাদের সক্রিয় হওয়ার কথা তাদের প্রস্তুতি কীরকম তা খতিয়ে দেখার জন্যই এই মহড়া। এটি রেলের একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া যা মাঝেমধ্যে হয়ে থাকে ।