নিজস্ব সংবাদদাতা: পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৩ সোনার গহনা ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করল শুল্ক বিভাগ। ধৃতদের বিরুদ্ধে আন্তঃরাষ্ট্র সোনা চোরা চালানের অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।

ধৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতায় শুল্ক বিভাগের কেন্দ্রীয় অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার অন্তর্গত সাগরপুর বাজারের তিনটি সোনার দোকান শ্রীকৃষ্ণ জুয়েলার্স, এম. কে. টোনস ও মাকালী টোনসে হানা দেন শুল্ক বিভাগের আধিকারিকরা। দীর্ঘ প্রায় আড়াই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয় ওই তিন সোনার দোকানের মালিক বুবাই আদক, গণেশ মোড়ে এবং আকাশ মোড়ে কে। আগেই দোকানে তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের দোকান থেকে বেশ কিছু সোনার বিস্কুট ও বাটখারা পেয়েছিলেন শুক্ল বিভাগের আধিকারিকরা।
ওই সোনা কী ভাবে তাঁদের কাছে এল, তার লেনদেন সংক্রান্ত কাগজপত্র কোথায় এসবের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি ওই তিন ব্যবসায়ী। ফলে তিনজনকেই গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কলকাতায়।
সাগরপুর স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুখেন্দু শেখর দাস জানান, দুপুর থেকে শুরু হয় এই অভিযান।কাস্টমসের কাছে খবর ছিল রাজ্যের বাইরে নেপাল থেকে ঘুর পথে দাসপুরের সাগরপুর বাজারে বেআইনিভাবে সোনা এনে ব্যবসা চালানো হচ্ছে এবং এর সাথে যুক্ত বেশকিছু স্বর্ণ ব্যবসায়ী।সেই খবর পেয়েই আজ দাসপুর থানার সাগরপুর বাজারের সোনার দোকানগুলিতে চলে অভিযান পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ চলে অনেক দোকানে।এলাকার ৩ স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কাস্টমস অফিসাররা গ্রেপ্তার করেছেন বলে জানতে পেরেছি।
এদিকে সাগরপুর বাজারে এই প্রথম শুল্ক বিভাগের হানা ও ৩ জনের গ্রেপ্তারে রীতিমত চাঞ্চল্য তৈরি হয় ওই এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা অংশ জানিয়েছেন, বেআইনি সোনা লেনদেনের স্বর্গ রাজ্য এই সাগরপুর। কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয় এখানে। এখানকার একটি বড় অংশের মানুষ সোনার কারিগর হিসাবে মুম্বাই, দিল্লী, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালুরু ইত্যাদি জায়গায় কাজ করেন। তাঁদেরই একটি অংশই চোরা চালানের খুঁটিনাটি জেনে পরবর্তীকালে এখানে ফিরে আসে এবং এখানে সেই ব্যবসা করে জাঁকিয়ে বসে। সোনার কারবারের পাশাপাশি চলে কোটি কোটি টাকার জুয়া ও বেটিংও।
শুল্ক দপ্তর সূত্রে জানা গেছে কখনও সড়ক পথে কখনও আবার বিমানেও এই সোনা আসে এবং শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকদের ফাঁকি দিয়ে সোনা নিয়ে আসা হয়। বেশ কিছুদিন ধরেই দাসপুরের সাগরপুরের ওপর নজর রাখছিলেন তাঁরা। নিজস্ব সূত্র মারফৎ তথ্য সংগ্ৰহ করছিলেন। এরপরই নিশ্চিত হয়েই এই অপারেশন চালানো হয়। ওই তিনটি দোকানই সিল করে দেওয়া হয়েছে আপাতত।