নিজস্ব সংবাদদাতা:২০২১ বিধানসভায় বিজেপির সমর্থনে ময়দানে নেমেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের রামজীবনপুর পৌরসভার এক অস্থায়ী কর্মী। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে গত কয়েকবছর ধরে কর্মরত ওই ব্যক্তিকে কয়েকমাস হল বসিয়ে দিয়েছেন পুর প্রশাসক। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া ৫ সদস্যের ওই পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ দুই সদস্য ক্লাশ সেভেন ও ফোরে পড়া ছেলে মেয়ের টিউশিনি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে বাবা-মা। ঘটনা রামজীবনপুর পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের বনপুর এলাকায়। ছেলেমেয়ের টিউশিনি বন্ধ করে মিটছেনা সমস্যা। দিন কাটছে অনাহার অর্ধাহারেই।
জানা গেছে বনপুর এলাকার বাসিন্দা চন্দন পন্ডা ২০১৪ সাল থেকে রামজীবনপুর পৌরসভায় দিন মজুরির
ভিত্তিতে ওয়ারকার হিসাবে প্লানটেশন তথা বৃক্ষরোপণ ও তত্ত্বাবধানের কাজ করে আসছেন ।দীর্ঘদিন পৌরসভায় কাজ করার ফলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের মতো সুবিধাও পেতেন।একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির সক্রিয় কর্মী হিসাবে একাধিক মিটিংয়ে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় চন্দন পণ্ডাকে।
অভিযোগ, ভোট মিটতেই ২ রা মে ফলাফল ঘোষণার পর কোনো কারণ না দেখিয়ে পৌরসভার কাজে যেতে নিষেধ করা হয় তাকে এমনই অভিযোগ তুলেছেন চন্দন ও তার পরিবার। চন্দনের অভিযোগ প্রথমে বলা হয়েছিল কিছুদিন পরে যোগাযোগ করতে কিন্তু বারংবার পৌরসভায় গিয়েও তাকে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি । এদিকে কাজ হারিয়ে একরকম পথে বসেছে দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবার।
বাড়িতে চন্দনেরা স্বামী-স্ত্রী ও বিধবা মা ছাড়াও রয়েছে ১৪ বছরের ছেলে এবং ১০বছরের মেয়ে। ১৪ বছরের পথিক রামজীবনপুর বাবুলাল ইনস্টিটিউটে সপ্তম শ্রেনী ও মেয়ে পিয়া স্থানীয় প্রথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। চন্দনের স্ত্রী তাপসী জানিয়েছেন, “করোনার জন্য এখন স্কুল বন্ধ। বাচ্চাদের পড়াশুনা এখন পুরোপুরি টিউশন নির্ভর। কিন্তু সেই টিউশনি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। নিজেরাই এখন কোনও দিন খেতে পাই, কোনও দিন পাইনা। বাড়িতে বৃদ্ধা শাশুড়ি রয়েছে তাঁর ওষুধ পথ্য দিতে পারছিনা।”
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, শুধুমাত্র বিজেপি করার অপরাধে পৌর প্রশাসক নির্মল চৌধুরী কেড়ে নিয়েছে তার কাজ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ । অভিযোগ অস্বীকার করেছে রামজীবনপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা নির্মল চৌধুরী। তাঁর দাবি,অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন,দলমত নির্বিশেষে মানুষকে কাজ দেওয়া হয় পৌরসভায়। অবশ্য নির্মলবাবুর একটি মন্তব্য প্রমান করছে যে এই অভিযোগ কিছুটা হলেও সত্যি। নির্মলবাবু বলেছেন, ‘দেশে বেকার সংখ্যা অনেক। সবাইকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কাজ দিতে হবে।’ কাজ ফিরে পাওয়ার আশায় ঘাটাল মহকুমা শাসকের কাছে দরবার করেছেন চন্দন।