নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা পরীক্ষা আর ১বার নয়, করাতে হবে ২বার। এমনই নির্দেশ রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের (WB Health Department)। অর্থাৎ যদি কাউকে করোনা (Corona Virus) আক্রান্ত বলে সন্দেহ করে পরীক্ষা (RT/PCR) করা হয় এবং তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তবে ফের ৮দিন পরে আবারও পরীক্ষা করাতে হবে। ২টি রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরই তাঁকে করোনা নেগেটিভ বলে ঘোষণা করা হবে। রাজ্যে করোনা সংক্রমনের হঠাৎ উলম্ফন হওয়ার পরই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এরকম সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। স্বাস্থ্যদপ্তর উদ্বেগ করোনা পরিস্থিতির বড় রকমের অবনতি হতে চলেছে। আর এই উদ্বেগের কারন গত ৩দিনের পরিসংখ্যান।
মঙ্গলবারের আগে রাজ্যের দৈনিক সংক্রমন যেখানে ৪০০ থেকে ৫০০ছিল, মঙ্গলবার সেটাই পৌঁছে গেছে ৭০০ ঘরে আর পরের দিন বুধবার তাই দাঁড়ালো ১০০০ ছাড়িয়ে। যদি এই ভাবে চলতে থাকে তবে আগামী সপ্তাহ বাংলায় প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন এমনটাই আশঙ্কা করছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। আর এটাই করোনার তৃতীয় ঢেউ বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তারা যা কিনা আসতে শুরু করে দিয়েছে বাংলায় এমনই আশঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে জেলাগুলিকে ফের করোনা পরীক্ষা বাড়ানোর নির্দেশ দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। ইতিমধ্যে কলকাতা-সহ সমস্ত জেলাকে সতর্ক করেছে তারা। বলেছে, কোভিড-১৯ পরীক্ষা বাড়াতে হবে। প্রতিদিন অন্তত ৪০ হাজার করোনা পরীক্ষা করতে হবে।
রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যে বিভিন্ন প্রকার উদ্যোগ নিয়েছেন তারমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে করোনা পরীক্ষার ওপর। বলা হয়েছে সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশির উপসর্গ থাকলেই করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। কোনওরকম শৈথিল্য দেখানো চলবে না। প্রথববার রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও ৮ দিন পর ফের পরীক্ষা করাতে হবে। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তবেই নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে। যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে পাঠানো হবে। করাতে হবে ওমিক্রন পরীক্ষা। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের ল্যাবেই জমা দেওয়া হবে নমুনা। স্বাস্থ্যকর্মীরা সেই নমুনা সংগ্রহ করে ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হবে। সেখান থেকেই মিলবে রিপোর্ট। সংক্রমণের আশঙ্কা এড়াতে স্বাস্থ্যদপ্তরের পরামর্শ, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। রাস্তায় বের হলেই মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হওয়া চলবে না। এদিকে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় কলকাতার একাধিক অভিজাত ক্লাবে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য বুধবারই রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের কাছে কলকাতার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলাদা ভাবে জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই পরিস্থিতি বিবেচনা করে কনটেনমেন্ট জোন করার পরামর্শ দেন। তবে বছরের শেষ ও নতুন বছরের শুরুতে রাজ্যবাসীর বিভিন্ন প্ল্যান থাকে। সেই কারণে ৩ জানুয়ারি থেকে কনটেনমেন্ট জোন করার কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি প্রয়োজনে ফের অফিস-কাছারির ক্ষেত্রে ওয়ার্ক ফ্রম হোমে জোর দেওয়ার কথাও বলেন। প্রয়োজনে লোকাল ট্রেন নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তবে গঙ্গাসাগর মেলার আগে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি। তবে এখুনি স্কুল বন্ধ করার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন মূখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, আমরা স্কুল বন্ধ করার কথা বলিনি। এখুনি সব বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এমনটা ভাবার কোনও কারন নেই।