নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর থেকে শিলিগুড়ি সড়ক পথে বর্তমানে সময় লাগে ১৪.৫ ঘন্টা যা প্রায় সাড়ে ৫ঘন্টা কমে যাচ্ছে নতুন রাস্তায়। নতুন একটি জাতীয় সড়ক তৈরি করছে কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রক যার ফলে খড়গপুর শহর লাগোয়া রূপনারায়নপুর কৃষ্ণনগরের কাছাকাছি কাঁসাই নদীর ওপর একটি বিশাল সেতু নির্মাণ করা হবে। মেদিনীপুর সদরের পাথরা-র কাছে ওই সেতু নামবে এবং সেখান থেকে কেশপুর ও দুই চন্দ্রকোনা ব্লকের মধ্যে দিয়ে জাতীয় সড়কটি সংযুক্ত হবে বর্ধমানের সমুদ্রগড় হয়ে মোড়গ্রামে। আর এরফলেই কমে যাচ্ছে অনেকখানি রাস্তা। চারলেনের এই রাস্তা তৈরি হচ্ছে কেন্দ্র সরকারের ভারতমালা প্রকল্পের আওতায়।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশা থেকে আসা গাড়ি যাতে কলকাতাকে এড়িয়ে দ্রুত উত্তরবঙ্গ পৌঁছতে পারে। সেই জন্য খড়্গপুর থেকে বর্ধমানের মোড়গ্রাম পর্যন্ত ২৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করবেন ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এনএইচএআই)। প্রকল্প রূপায়িত হলে খড়্গপুর থেকে শিলিগুড়ি যেতে পাঁচ ঘণ্টা সময় বাঁচবে এনএইচএআই-এর দাবি। অর্থাৎ এখন যেখানে খড়গপুর থেকে শিলিগুড়ি সাড়ে ১৪ ঘন্টা সময় লাগে সেখানে এই সড়ক চালু হলে ৫ থেকে সাড়ে ৫ঘন্টা সময় কমে যাবে।
এই প্রকল্পে ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
২০২৩ সালের মার্চে ওই রাস্তার নির্মাণ শুরু হয়ে তিন বছরে তা সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। এই প্রকল্পে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির প্রয়োজন হবে। জমি অধিগ্রহণের জন্য ধরা হয়েছে চার হাজার কোটি টাকা। ওই প্রকল্প রূপায়ণ করা হবে মূলত কৃষিজমিতে। সর্বাধিক ১২০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলবে প্রস্তাবিত রাস্তায়। খড়্গপুর থেকে কলকাতার দিকে প্রায় নয় কিলোমিটার আসার পরে কংসাবতী নদী পেরিয়ে মেদিনীপুর সদর, কেশপুর চন্দ্রকোনা, সমুদ্রগড়, পূর্ব নারায়ণপুর, বর্ধমান, মঙ্গলকোট হয়ে ওই রাস্তা পৌঁছবে মোড়গ্রামে। রাস্তায় খুব কাছাকাছি দূরত্বে টোল প্লাজ়া থাকবে।
এই খড়গপুর শিলিগুড়ি এক্সপ্রেস হাইওয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৫টি ব্লক এলাকার মধ্যে দিয়ে এই রাস্তা যাবে পুরোপুরি কৃষিজমির ওপর দিয়ে। ফলে ওই জমির অংশ অধিগ্রহনের প্রয়োজন হবে। সর্বাধিক জমি অধিগ্রহণ হবে কেশপুর এলাকায়। কেশপুরের মোট ৫৮টি মৌজার ওপর দিয়ে যাবে এই রাস্তা। চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের ১৯টি এবং ২ ব্লকের ১৭টি মৌজা, মেদিনীপুর সদরের ১৩টি মৌজা এবং খড়গপুর ২ ব্লকের ৮টি মৌজার জমি অধিগ্রহণ করা হবে। জানা গেছে বর্ষার মরসুমি কৃষিকাজ শুরু হওয়ার পর সেপ্টেম্বর মাসে জমি অধিগ্রহনের কাজ শুরু হবে। বর্তমানে শুনানির জন্য কৃষকদের নোটিস পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। দেখে নিন পশ্চিম মেদিনীপুরের কোন কোন ব্লকের কোন কোন মৌজার ওপর দিয়ে এই সড়ক যাবে।
মেদিনীপুর সদর– হাতিহালকা, আমোদপুর পাল, বিন্দাপাথরা,পাথরা,কুলদা, কমলাপুর, ভূতগেড়িয়া, খংগারডিহি, মালিদা, রামচন্দ্রপুর, মিচাকা, আগরপাড়া, রাত্রিবাড়
খড়গপুর-২ , উত্তর সিমলা, জকপুর, কৃষ্ণনগর, কাঁচডিহা, লছমাপুর, সমুদ্রপুর, চনসরপুর, বাড়মুনিবগড়,
কেশপুর : জখাগেড়া, মান্দারিয়া, চাঁদবাড়, বাঁকাবাড়, বৈষ্ণবচক. পারুলিয়া, বাসুদেবপুর, মল্লারচক, পূর্ব চাকলা, কাজিচক, কেশবচক, গোপালচক সাদিক মহম্মদ, হেড়্যা, লক্ষণচক, দিনরামচক, চকজ্যোতি, খিরিসমূল, গুনহারা, বেঁউচা, হারাচক, কেওটতলা, বেলডোবা, রাঙাডিহি, বাড়মহিশদা, মাথানিয়া, মহিশদা, এলনি, হাতকাটা, দিউটি,ইছাইপুর, ঘনাগেড়িয়া, গোরাইপুর, গাইঘাটা, বিরবিরা, পালংপুর, কাননুয়া, হরিহরচক, দাদপুর, যমুনাবাড়, ধর্মপুর, খামারপতা, রনজিতা, কমলপুর, খাগড়াগেড়া, ইন্দচক, বেরাবেড়া, মহিষাগেড়া, দক্ষিণ কেঁওসা, দৌলতচক, লক্ষণচক, উত্তর কেঁওসা,শশাগেড়িয়া, রতনহাটি, সেকাটি
চন্দ্রকোনা ২– ভুতাখালি, বন্দিপুর, ব্রাহ্মণকোলা, আগরপাড়া, ঘনরামপুর, পাডুয়া, সাওড়া, ঝাঁকরা, শ্যামগঞ্জ, মদনমোহনপুর. আরাজিপিরচক, গোপীনাথপুর, জয়ন্তিপুর, জদুপুর, কলাকারী, গোপালপুর, মুইদে
চন্দ্রকোনা ১ পীরচক, জগন্নাথপুর, জাড়া, কোচগেড়িয়া রামচক,রেজনা, সানপুর, রণকাঙ্কি, বাসুলিয়া, রামচক, দৌলতপুর, শ্রীনগর, শোলা ১, বানপুর, পাণ্ডুয়া, ঠাকুরহাটি, কল্যাণচক, বাহাদুরপুর, শশাগেড়া, ঘোলা।