নিজস্ব সংবাদদাতা: স্কুল কলেজের পঠন পাঠন একেবারেই বন্ধ না করে দিয়ে ৫০% পড়ুয়াকে নিয়ে পঠন পাঠন চালু রাখা হোক, না’হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে ভবিষ্যত প্রজন্মের। সরকারের কাছে এমনই আবেদন জানালেন রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধানদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসস’ এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি। মাইতি বলেছেন যেখানে সরকার গনপরিবহন, শপিং মল, সামাজিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি ৫০% উপস্থিতি নিয়ে চালানোর অনুমতি দিয়েছেন তখন বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রেও সেই অনুমতি দেওয়া হোক। তিনি আরও বলেছেন, বিদ্যালয়ে দীর্ঘ অনুপস্থিতি পড়ুয়াদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কু-অভ্যাস গড়ে তুলছে। পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্য ভীষন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে মারাত্মক সঙ্কট তৈরি হবে। সেই সমস্ত দিকও বিচার করুন সরকার।
সংগঠনের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, করোনা সংক্রমনের এই বাড়বাড়ন্ত তো একদিনের নয়, বর্ষ বিদায়, বর্ষ বরণ, তার আগে পুজো, নির্বাচন – এসবের লাগাম ছাড়া বিনোদন উদযাপনের পর করোনা আর তার তুতো ভাই দের ডেকে এনে এবার সামাল দেবে কে? তার মাশুল দেবে ছাত্র ছাত্রীরা! তাই স্কুল কলেজ সবার আগে বন্ধ হলো। যেখানে সিনেমা হল, থিয়েটার, শপিং মল, বিয়ে বাড়ি,যাবতীয় সামাজিক অনুষ্ঠান, গণ পরিবহণ, ইত্যাদি ৫০%শতাংশ মানুষ নিয়ে চলতে পারে। সেখানে ওই পদ্ধতিতে আর পঠন পাঠন চালানো যাবেনা কেন?
সংগঠনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।গত দু বছর প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ।সব কিছু স্বাভাবিক হলেও ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষা থেকে দূরে রেখে শিক্ষার অন্তর্জলী যাত্রাকে নিশ্চিত করা হচ্ছে।সাধারণের শিক্ষার দরজা বন্ধ থাকছেই।কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর এভাবে চলতে পারে না।আই সি এম আরের নির্দেশ অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচের কিশোর কিশোরীদের মধ্যে করোনা এবং তার ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ওমিক্রণ এর আক্রমণের প্রবণতা কম। সেখানে একেবারে কলেজ বিদ্যালয় বন্ধ না করে পরিকল্পনা মাফিক পঠন পাঠন চালানো যেত।
WHO র সাবধান বাণী অনুযায়ী আগামী ১০ বছর এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কাজের মাধ্যমে করোনার প্রকৃত চিকিৎসার ভ্যাকসিন মিলতে পারে। তাই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বিদ্যালয় শিক্ষাদপ্তরকেই নিতে হবে। পরিকল্পনাহীনতায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর ভুগছে। শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষা কর্মী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনো আলোচনায় তাঁরা বসছেন না। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘ সরকারের সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের ভুল ধারণার শিকার হচ্ছেন শিক্ষক শিক্ষিকারাও। মানুষের একটি অংশের মধ্যে ধারণা হচ্ছে যে শিক্ষক শিক্ষিকারা না পড়িয়েই বেতন নিচ্ছেন। কার্যত শিক্ষক শিক্ষিকারা অসহায়।আমাদের বিকল্প প্রস্তাব ৫০% ছাত্র ছাত্রী ও ৫০% শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়ে যাতে স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় চালানো হয়- এই মর্মে শিক্ষা দপ্তরে নির্দেশ জারি করুক অবিলম্বে।’