নিজস্ব সংবাদদাতা: অভিমান করে ঘর ছেড়ে আসা স্বামীকে ফেরাতে এসে গণধর্ষণের শিকার হলেন এক গৃহবধূ। টোটো তে তুলে নিয়ে গিয়ে একাধিক জায়গায় রাতভর ধর্ষণ করা হল ওই তরুণীকে। বর্ধমান শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে একাধিকবার তাঁকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ। গণধর্ষণের শিকার হওয়া ওই তরুণীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনায় দু’জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা তৃনমূলের কর্মী এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় মোট ৬জন যুক্ত ছিল বলে জানা গেছে। পুলিশ অবশ্য এখনও অবধি অভিযুক্তদের পরিচয় স্পষ্ট করেনি। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে তদন্তের স্বার্থে ধৃত বা অভিযুক্তদের নাম জানাতে অস্বীকার করলেও অনেকের অভিযোগ শাসকদলের কর্মী বলেই পুলিশের এই লুকোচুরি।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার গলসি থেকে বর্ধমানে গিয়েছিলেন নির্যাতিতা মহিলা। তাঁর স্বামী একটি বেসরকারি কারখানায় কাজ করেন। কয়েকদিন আগে বাড়ি ফিরিচিক ওই তরুণীর স্বামী। সেখানে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। রাগ করেই কাজের জায়গায় চলে আসেন তিনি। এরপরই স্বামীর সঙ্গে দেখা করতেই বর্ধমানে আসেন ওই তরুণী গৃহবধূ। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁকে কারখানায় ঢুকতে দেননি। দেখা হয়নি স্বামীর সাথে। ফিরে আসেন রেল স্টেশনে। ইতিমধ্যে রাত হয়ে যায়। যানবাহন না মেলায় রাত্রে বাড়ি ফিরতে পারেননি তিনি। বাধ্য হয়ে বর্ধমান স্টেশন সংলগ্ন ফ্লাইওভার লাগোয়া এলাকায় শুয়েছিলেন তিনি। কাছাকাছি আরও কয়েকজন মহিলা থাকায় ভরসা পেয়েছিলেন।
অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন তাঁকে জোর করে একটি টোটোতে তুলে নিয়ে যায়। পাশে থাকা এক মহিলা বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। এরপর শহরের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তারপর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় ফেলে দিয়ে যায় তাঁকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নির্যাতিতাকে অসুস্থ অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানেই ভরতি রয়েছেন তিনি। ওই তরুণীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান পুলিশের এক আধিকারিক বলেন , “তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মহিলার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই সমস্ত বিষয় জানানো সম্ভব নয়।” এদিকে উৎসবের মধ্যে এই ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত চার মাসে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১০টি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার মাত্র ২দিন আগেই মন্তেশ্বরে গণধর্ষণের শিকার হন এক মহিলা।