নিজস্ব সংবাদদাতা: ৩মাসে ৪ বার বন্যা! ২মাস পেরিয়ে এখনও জলমগ্ন বহু এলাকা। পুজোর ১৫ দিন আগেও নির্ধারিত জায়গা থেকে মন্ডপ সরিয়ে নিয়ে অন্য জায়গায় মন্ডপ করতে হয়েছে বহু পূজা কমিটিকে। যদি তা না করতে হত তবে এবার জেলার ২০টি পুরস্কারের বেশিরভাগই হয়ত তুলে নিয়ে আসত ঘাটাল।
সোমবার মহাষষ্টির দিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান-২০২১ ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসন। জেলার ৩টি মহকুমার জন্য ঘোষণা করা হয়েছে মোট ২০টি পুরস্কার যার মধ্যে ঘাটাল মহকুমাই পেয়েছে ৭টি পুরস্কার।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/10/Screenshot_20211012-005316_Facebook.jpg)
আর এই সাতটি পুরস্কারের ৪টি এসেছে সেরা প্রতিমা বিভাগ থেকে। পুরস্কার দেওয়া হয়েছে মোট ৪টি বিভাগে। আর প্রতিটি বিভাগে রয়েছে ৫টি পুরস্কার। যার অর্থ সেরা প্রতিমা বিভাগে মোট ৫টি পুরস্কারের মধ্যে ঘাটাল একাই ৪টি পুরস্কার পেয়েছে।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/10/Screenshot_20211012-005226_Facebook.jpg)
ঘাটাল মহকুমার সার্বজনীন দুর্গা পূজা কমিটি গুলির আফসোস প্রকৃতির মার না থাকলে এবার জেলার সিংহভাগ পুরস্কার ছিনিয়ে আনতেন তাঁরাই। একটি পূজা কমিটির এক কর্মকর্তা জানালেন, “আমাদের লড়াইয়ের কোনও জায়গাই ছিলনা ওই প্রতিমা বিভাগটি ছাড়া। কারন সেরামন্ডপ বানানোর রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিল প্রকৃতিই। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মন্ডপ বানানোর ঝুঁকি নিতেই পারিনি আমরা। কখন কোথায় জল ঢুকে পড়ে। দ্বিতীয় ঘন ঘন বন্যায় নরমমাটিতে প্যান্ডেল ভেঙে পড়তে পারে। ফলে সেরা মন্ডপের পাশাপাশি আমরা শুরু থেকেই পিছিয়ে পড়েছিলাম সেরা পূজো বিভাগে। কারন সবটা মিলিয়েই তো সেরা পুজোর পরিবেশ তৈরি হয়। আমাদের লড়াইয়ের একটাই জায়গা ছিল সেরা প্রতিমা। সেখান থেকেই ৫টার ৪টি পুরস্কার ছিনিয়ে আনতে পেরেছি। আর মন্ডপ তৈরির প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও ২টি সেরা মন্ডপ পুরস্কার পেয়েছি আমরা।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/10/Screenshot_20211012-003125_Facebook.jpg)
জেলার সেরা প্রতিমা বিভাগের ৪ টি পুরস্কার পেয়েছে ন্যাশনাল বয়েজ ক্লাব, দাসপুরের সোনাখালি স্কুল পাড়া সার্বজনীন, কুশপাতা পঞ্চমপল্লী, নাড়াজোল দুর্গোৎসব কমিটি, ২টি পুরস্কার এসেছে সেরা মন্ডপ বিভাগ থেকে। রাধাকান্তপুর সার্বজনীন ও কুশপাতা সতেরো পল্লী সার্বজনীন। এছাড়া আরও ১টি পুরস্কার এসেছে কোভিড বিধি মান্যতা থেকে, পেয়েছে বারুনীঘাট সার্বজনীন।
এবছর জেলার মোট ২০টি পুরস্কারের মধ্যে মেদিনীপুর সদর মহকুমা ৯টি পুরস্কার পেয়ে মহকুমার বিচারে জেলার মধ্যে এগিয়ে আছে। সেরা পুজো রাঙামাটি সার্বজনীন, হুমগড় সার্বজনীন, কিসমৎ জগন্নাথপুর, সেরা প্রতিমা রবীন্দ্রনগর সার্বজনীন, সেরা মন্ডপ আমলাশুলি সার্বজনীন, সংযুক্তপল্লী দুর্গাপূজা, ছোটবাজার সার্বজনীন। সেরা কোভিড বিধি মান্যতায় ঐক্যসম্মিলনী সার্বজনীন, অশোকনগর সার্বজনীন। সদর মহকুমার পুরস্কারগুলির মধ্যে ৫টি পুরস্কারই পেয়েছে মেদিনীপুর শহরের পূজা কমিটি গুলি। যেমন রাঙামাটি, রবীন্দ্রনগর, অশোকনগর, ছোটবাজার ও সংযুক্তপল্লী।
মহকুমার বিচারে এবার সবচেয়ে পিছিয়ে খড়গপুর মহকুমা। এই মহকুমা পেয়েছে ৪টি পুরস্কার। এই চারটির মধ্যে ৩টি পুরস্কার এসেছে খড়গপুর শহর থেকে। সেরা পূজো পেয়েছে খড়গপুর শহরের সবুজ সঙ্ঘ, সেরা কোভিড বিধির মান্যতায় ২টি পুরস্কার পেয়েছে আদি পূজা কমিটি এবং প্রেমবাজার সার্বজনীন। গ্রামীন এলাকায় একটি মাত্র পুরস্কার পেয়েছে সবংয়ের তেমাথানি পল্লীশ্রী। সেরা পূজোর পুরস্কার পেয়েছে তারা। খড়গপুর মহকুমার ভালো ভালো পূজো হয়ে থাকে এমন ডেবরা, বালিচক, বেলদা, কেশিয়াড়ী ইত্যাদি জায়গা থেকে কোনও পুরস্কার না আসায় বেশ পিছিয়ে পড়ছে খড়গপুর।