নিজস্ব সংবাদদাতা: কর্ত্রীর মুখে মুখে চোপা করার জন্য শাস্তি জুটেছিল কপালে। ক্লোজড করা থেকে শুরু করে পাহাড়ে বদলি সবই করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু মাথা নত করেননি, বিক্রিও করে দেননি শাসকের কাছে। প্রায় এক দশক আগে পার্কস্ট্রিটে এক মহিলার গনধর্ষিতা হওয়ার ঘটনায় ‘কিছু তো একটা হয়েই ছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর রোষানলে পড়ে গেছিলেন তিনি কারন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ওটা সাজানো ঘটনা। বর্তমানে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল কমিশনার সেই দময়ন্তী সেনের হাতেই রাজ্যের চারটি ধর্ষণ মামলার তদন্তভার তুলে দিলেন কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘বিগত দিনের অভিজ্ঞতা বলছে, দময়ন্তী নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করেছেন। তাই দেগঙ্গা, মাটিয়া, ইংরেজবাজার, বাঁশদ্রোনিতে ধর্ষণ মামলায় আইপিএস দময়ন্তী সেনের নজরদারিতে তদন্ত হবে।’ মনে করা হচ্ছে
এক দশক আগে সেই পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তের প্রেক্ষিতেই এধরনের মন্তব্য করেছেন বিচারপতিদ্বয়।
উল্লেখ্য ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস।বাম সরকারের জামানা চলে গিয়ে তখন সদ্য ক্ষমতায় এসেছে বর্তমান তৃনমূল কংগ্রেসের সরকার দময়ন্তী সেন তখন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান। পার্কস্ট্রিটের একটি পাঁচতারা হোটেলের বাইরে থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় এক মহিলাকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল শুরু হয় মহানগরের বুকে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে নাসির খান, রহমান খান, সুমিত বাজাজ নামে তিনজনের নাম। পরে ওই মহিলা প্রকাশ্যেই আসেন। টিভিতে বলেন কী হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। মামলার তদন্তভার নেন দময়ন্তী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ঘটনাকে ‘সাজানো ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। দময়ন্তী যদিও তাঁর তদন্তের প্রেক্ষিতে ধর্ষণ হয়েছে বলেই রিপোর্ট দিয়েছিলেন। তিনি তা সর্বসমক্ষে জানিয়েও ছিলেন।
মঙ্গলবার শুনানির সময় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব সরাসরি বলেন, ‘‘দু থেকে তিনটি ঘটনা পর পর ঘটল। কী হচ্ছে? কেন এমন ঘটনা? আমি বাকরুদ্ধ!’’ গত বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ধর্ষণ এবং গণধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। যদিও প্রধান বিচারপতির নির্দেশের মধ্যে নদিয়ার হাঁসখালির ঘটনা নেই। যা নিয়ে আপাতত রাজ্য-রাজনীতি উত্তাল। কিন্তু দময়ন্তীকে দায়িত্ব দেওয়ার পর আরও একবার পার্ক স্ট্রিটের ঘটনার স্মৃতি ফিরে আসছে তেমনই অনেকের আশা হয়ত হাঁসখালির ১৪ বছরের কিশোরীর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তও যাবে দময়ন্তীর হাতে। তবে বিষয়টি একেবারেই ঐচ্ছিক। আদালত বলেছে, দময়ন্তী এই নজরদারির দায়িত্ব নাও নিতে পারেন। যদি না নেন তবে তিনি তা সরাসরি আদালতকে জানাতে পারেন।