নিজস্ব সংবাদদাতা: শ্রাবণ মাস পড়েছে, শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য উপচে পড়েছে। কেউ যাচ্ছেন হেঁটে মাইলের পর মাইল। কেউ আবার গাড়িতে। কেউ সামনে পেছনে ম্যাটাডোর কিংবা পিকআপ ভ্যানে আলোকসজ্জা আর মাইক লাগিয়ে চলেছে। আর সেটা করতে গিয়েই জেনারেটে শর্ট সার্কিটের জেরে মৃত্যু হল ১০ পুণ্যার্থীর। রবিবার গভীর রাতে উত্তরবঙ্গের চ্যাংরাবান্ধা এলাকার এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া পুণ্যার্থীদের এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন কোচবিহারের শীতলকুচি থেকে ২৭ জন পুণ্যার্থী একটি ম্যাটাডোর ভ্যানে চেপে জল্পেশের দিকে যাচ্ছিলেন। চ্যাংরাবান্ধার ধরলা সেতু পার হওয়ার পর জেনারেটর থেকে সেই গাড়িতে শর্ট সার্কিট হয় বলে জানিয়েছেন কয়েকজন পুণ্যার্থী। এরপরই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। চালক অসুস্থদের চ্যাংরাবান্ধা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ১০ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃতদের বাড়ি শীতলকুচিতে। ৬ জনকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পূন্যার্থীদের গাড়িতে ছিলে আলোর সমাহার, বাজানো হচ্ছিল বিশেষ ধরনের সাউন্ড বক্স। আর সেই কারণেই তৈরি জেনারেটরের ইলেকট্রিক লাইনে সর্ট-সার্কিট হয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনাটি ঘটেছিল রাত ১২টার পর। সেই সময় বাড়িতে অনেকেই শুয়েছিলেন গাড়ির মধ্যে । কয়েকজন ছিলেন গাড়িতে দাঁড়িয়ে। খবর, যাঁরা শুয়ে ছিলেন গাড়িতে, তাঁদের মধ্যেই মৃতের সংখ্যা অত্যাধিক পরিমাণে বেশি। আর যাঁরা দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁরা গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের কোমরের কাছে একটি করে কালো দাগ দেখতে পেয়েছেন তাঁরা। সেই কারণেই পুলিশ মনে করছে, শর্ট-সার্কিট হওয়ার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের বাড়ি শীতলকুচি এলাকায়। আহত হয়েছেন আরও ১৬ জন পূণ্যার্থী। তাঁদের জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই পিকাপভ্যানের চালক পলাতক বলেন জানান পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। তিনি জানান, মাথাভাঙ্গা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হবে মৃতদের। জানা গিয়েছে প্রায় ২৭ জন পূণ্যার্থীকে নিয়ে পিকাপভ্যানটি শীতলকুচি থেকে জলপাইগুড়ি জেলায় জল্পেশের পথে রওনা হয়েছিল৷ রাত ১২ টা নাগাদ পিকাপভ্যানটি যখন চ্যাংড়াবান্ধার ধরলা সেতু পার করছিল তখন জেনারেটরে শটসার্কিট হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের পরিবারকে ইতিমধ্যে খবর দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছেন তাঁরা।