নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০২২-২৩ অর্থ বর্ষের মাত্র ৬ মাসেই রেকর্ড পরিমান আয় করল দক্ষিনপূর্ব রেলের(South Eastern Railway) খড়গপুর ডিভিশনের (Kharagpur Railway Division) আয় দু’হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। করোনা (Covid -19) কালে রেলের ব্যবসার যা ঘাটতি দেখা গিয়েছিল তার অনেকটাই পূরন করল চলতি আর্থিক বর্ষ এমনটাই মনে করছেন রেলের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। পরিসংখ্যান দিয়ে রেলের খড়গপুর ডিভিশনের তরফে দাবি করা হয়েছে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস অবধি যাত্রী পরিবহনে রেল মোট ৭৯৭.৯৪ কোটি টাকা আয় করেছে যা বিগত সমগ্র আর্থিক বছরে ছিল মাত্র ৪৩৬.৭৮কোটি টাকা। পন্য পরিবহনেও গত ছমাসের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে বিগত অর্থ বর্ষ কে। গত আর্থিক বছরে যেখানে আয় ছিল ৯৫৫.৬৪ কোটি টাকা আর গত মাত্র ছ’মাসে খড়গপুর ডিভিশন এই খাতে আয় করেছে ১১৬৩.৭০লক্ষ টাকা। রেলের তরফে আরও জানানো হয়েছে এছাড়াও রেলের বিভিন্ন খাতে আয় হয়েছে ৮৪.৭৮কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গত ৬মাসে খড়গপুর রেলের আয় ২০৪৬.৪২ কোটি টাকা যা গত আর্থিক বছরের চাইতে ৪১.৬% বেশি।
রেলের এই আয় যে মূলত যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রেই সর্বাধিক তাও প্রতিফলিত হয়েছে এই পরিসংখ্যানে। বিগত ছ’মাসের ওই তথ্য বলছে রেল যাত্রী পরিবহনে গত আর্থিক বছরের চাইতে যেখানে ৮২.৭% এগিয়ে সেখানে ওই হিসাব অনুযায়ী পন্য পরিবহনে এগিয়ে মাত্র ২১.৮ শতাংশে। কারন হিসাবে এটা বলাই যে করোনা কালে রেলের পন্য পরিবহনে তেমন বাধা সৃষ্টি হয়নি যা কিনা যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে হয়েছিল। গত ছ’মাসে অন্যান্য ডিভিশনের মত খড়গপুর ডিভিশনও একাধিক ট্রেনের পুনঃস্থাপন করেছে বিশেষ করে লোকাল এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনের যা রেলের আয় বাড়াতে দ্রুত সহায়ক হয়েছে।
যদিও রেলের এই অস্বাভাবিক আয় বৃদ্ধির পেছনে টিকিটের দাম বৃদ্ধিকেও বড় কারণ বলে মনে করছেন রেল যাত্রী সংগঠনগুলি। তাঁদের মতে, করোনার এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকে স্পেশাল ট্রেন হিসাবে চালু করে প্রায় ৪০% ভাড়া বাড়িয়েছিল রেল যা এখনও বহাল আছে। উদহারন হিসাবে তাঁরা বলেছেন, খড়গপুর থেকে হলদিয়া ভাড়া ছিল ৫০টাকা যা বাড়িয়ে ৭০টাকা করা হয়। এখনও সেই ভাড়া রাখা হয়েছে। তাছাড়া একাধিক লোকাল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে ফার্স্ট প্যাসেঞ্জারে রূপান্তরিত করে ভাড়া বাড়িয়ে মানুষকে তা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে কারণ মানুষের কাছে অন্য বিকল্প নেই।
খড়গপুর ডিভিশনের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে শহরতলি এলাকায় যাত্রী পরিবহন বেড়েছে প্রায় ৫৩৭% আর শহরতলি ছাড়ানো যাত্রীদের পরিবহন বেড়েছে ৬৬৩% অন্যদিকে সংরক্ষিত আসনে যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে ৬১.৫%। যাত্রী সংগঠনগুলির বক্তব্য রেলের এই আয়ের অধিকাংশটাই উঠে আসছে সাধারন ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী ও শ্রমজীবী মানুষদের কাছ থেকে। রেলের তরফে আরও জানানো হয়েছে বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে খড়গপুর রেল জরিমানা বাবদ প্রায় ৩৬কোটি টাকা আদায় করেছে।