নিজস্ব সংবাদদাতা: অঘটন ঘটলেও শেষ অবধি দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেল 02704 সেকেন্দ্রাবাদ হাওড়া সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস (SECUNDERABAD JN HOWRAH JN SPECIAL – 02704,)। কাপলিং খুলে তিন বগিকে ফেলেই এগিয়ে গেল বেশ কিছুটা। শনিবার বেলা ৩ টা নাগাদ এমনই ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা স্টেশনের অনতি দুরে। জানা গেছে রেলের খড়গপুর-ভদ্রক শাখার সুসিন্দা লেবেল ক্রসিংয়ের কাছাকাছি ঘটনাটি ঘটেছিল। নিজেদের বগি মূল গাড়ি থেকে আলাদা হয়ে রয়ে গেছে জানার পরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ওই তিনটি বগিতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে। কিছুক্ষনের মধ্যেই অবশ্য ট্রেনের চালক ও গার্ডের নজরে আসার পরই ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে দেয়। পরে মূল ট্রেনকে পিছিয়ে নিয়ে ফের কাপলিং জোড়ার পর খড়গপুর হয়ে হাওড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ট্রেনটি।
যদিও এই ঘটনায় কোনও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন ঘটনাটি ঘটেছে বেলদা স্টেশনে ট্রেনটি ঢোকার কিছুটা আগে। সুসিন্দা লেবেল ক্রসিংয়ের কাছাকাছি। স্টেশনে ঢুকছিল বলেই হয়ত ট্রেনটির গতিবেগ কিছুটা কম ছিল। স্টেশনে ঢোকার আনুমানিক ১০০ মিটার আগে ছুটন্ত অবস্থাতেই ট্রেনের ল্যাজের দিক থেকে ৩ নম্বর কামরার কাপলিং খুলে যায় অথবা কেটে যায়। মোট ২৫টি বগির ২২ টি বগিকে নিয়ে ট্রেনটি নিজস্ব ছন্দে এগিয়ে যায়। গতিতে থাকায় পেছনে পেছনে এগিয়ে ছিল ফেলে যাওয়া ৩টি বগিও। মুল ট্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় গতি হারিয়ে সেই ৩টি বগি স্টেশন থেকে প্রায় ৫০ মিটার দুরে দাঁড়িয়ে পড়ে।
ওদিকে ২২টি বগি নিয়ে ইঞ্জিন তখন বেলদা স্টেশনে ঢুকে পড়ে এবং চালক ও গার্ড বুঝতে পারে যে এক বা একাধিক বগি ট্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রেলের এক কর্তা জানিয়েছেন, যে পদ্ধতি গাড়ির চেন টানলে চালক ও গার্ড বুঝতে পারে ঠিক একই পদ্ধতিতে কোনও ট্রেনের কাপলিং বিচ্ছিন্ন হলেও বোঝা যায়। এরপরই মূল ট্রেনটিকে পেছন দিকে চালিয়ে নিয়ে এসে ফের কাপলিং জুড়ে দেওয়া হয় এবং ট্রেনটি ফের হাওড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তবে এই ঘটনাই বড়সড় দুর্ঘটনায় পর্যবসিত হতে পারত যদি ট্রেনটির গতিবেগ বেশি থাকত। সেক্ষেত্রে প্রচন্ড গতিতে থাকা কাপলিং চ্যূত বগিগুলি লাইনচ্যূত হয়ে ছিটকে পড়তে পারত। ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও শেষ অবধি আশ্বস্ত হন তাঁরা।
রেলের দক্ষিণ-পূর্ব জোনের খড়গপুর রেল ডিভিশনের বরিষ্ঠ বিভাগীয় বাণিজ্যিক অধিকর্তা তথা মুখপাত্র রাজেশ কুমার জানিয়েছেন, বেলদা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে ডি-কাপলিং হওয়ার ৩টি কামরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও ট্রেনের বা যাত্রীদের কোনও ক্ষতি হয়নি। শুধু কামরাগুলিকে ফের জোড়ার জন্য সময় লাগায় আধঘন্টা দেরিতে চলছে ট্রেনটি। কেন এই ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে।