Saturday, July 27, 2024

Rampurhat Massacre:ওরা আমাদের ঘরে ঢুকিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, পুলিশ পাঠা! রামপুরহাটে নববধুকে পাশে নিয়ে শেষ ফোন সাজিদুরের

- Advertisement -spot_imgspot_img

নিজস্ব সংবাদদাতা: সোমবার রাত ১২টা নাগাদ বন্ধুর ফোন পেয়েছিল নানুরের কাজি মহিম। বন্ধুর নাম সাজিদুর রহমান। ফোনে সাজিদুর বলেছিল, “ওরা আমাদের একটা ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে চারদিকে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। পুলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা কর।” ফোনটা পেয়ে হকচকিয়ে যায় মহিম। সকালেই নতুন বিয়ে করা বউকে শ্বশুরবাড়ি রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে গিয়েছিল। এরইমধ্যে কী ঘটে গেল? তখনও রামপুরহাটের দাপুটে নেতা ভাদু শেখের খুন হওয়ার ঘটনা নানুরে রাষ্ট্র হয়নি। তাই মহিমও জানতে পারেনি কী হচ্ছে বগটুই গ্রামে। বন্ধুর ফোন পেয়ে রাতেই সে যায় পাশেই বন্ধুর বাড়িতে। বিষয়টা জানান সাজিদুরের বাবাকে। সাজিদুরের বাবা নুরুল জামাল সাথে সাথে ফোন করেন ছেলেকে কিন্তু ফোনে পাননি। সম্ভবতঃ তখন আগুনে বউয়ের সাথে পুড়ছিলেন সাজিদুর।

আরো খবর আপডেট মোবাইলে পেতে ক্লিক করুন এখানে

জানুয়ারি মাসে নানুরের সাজিদুর রহমানের বিয়ে হয়েছিল বগটুই গ্রামের মিজারুল শেখের মেয়ে লিলি খাতুনের। সবেবরাতের ছুটিতে নববধু লিলিকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন সোমবারই। সকালে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। দুপুরে তাঁরা বাড়িতে ফোন করে জানায়, পৌঁছে গিয়েছে। তখনও পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। পরিকল্পনা ছিল দু’টো দিন কাটিয়ে ফেরার কথা ছিল কিন্তু, আর বাড়ি ফেরা হল না সাজিদুর-লিলির। বগটুই গ্রামের বাড়িতেই বাকিদের সাথে জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল নবদম্পত্তির। ঘটনায় রামপুরহাট থানার বগটুই গ্রামের পাশাপাশি শোকের ছায়া নেমে এসেছে নানুরেও। নানুরের মানুষের বক্তব্য যে পুলিশ পাঠানোর আর্তি জানিয়ে সাজিদুর ফোন করেছিলেন সেই পুলিশ তো তিনঘন্টা ধরে ঘটনাস্থলেই মোতায়েন ছিল। তা’হলে পুলিশ গেলনা কেন? এই একই প্রশ্ন বুধবার বগটুই গ্রাম পরিদর্শনে গিয়ে উত্থাপন করেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পদক মহম্মদ সেলিম।

সেলিম জানিয়েছেন, তৃনমূলের ‘গ্যাংস্টার’ ভাদু শেখ তাঁদেরই দলের অন্য ‘গ্যাংস্টার’দের হাতে খুন হয়েছে সাড়ে আটটা নাগাদ। তারপরই এলাকায় পৌঁছে গেছিল পুলিশ। পুলিশ নাকি উত্তেজনা দমনের জন্য এলাকায় টহল দিচ্ছিল। তাই যদি হয় তবে পুলিশের সামনে নিহত ভাদু শেখের দলবল একের পর এক বাড়িতে আগুন লাগালো কী করে? আমার তো মনে হচ্ছে পুলিশ ভাদু শেখের কাছ থেকে টাকা পেত। পুলিশ পুষত ভাদু শেখ। আর তাই পুলিশকে দাঁড় করিয়েই একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল ভাদু শেখের লোকেরাই।” ঘটনায় যে পুলিশি গাফিলতি ছিল তা একরকম স্বীকার করে নিয়েই অবশ্য রামপুরহাট থানার ওসিকে ক্লোজ করার পাশাপাশি স্থানীয় এসডিপিওকেও সরিয়ে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

নিহত সাজিদুরের বাবা কাজি নুরুল জামাল বলেন, ‘সোমবার রাত ১২ টা নাগাদ আমার ছেলে ওর বন্ধু কাজি মহিমকে ফোন করে বলে, আমাদের একটি ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে চারিদিকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তুই পুলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা কর। মহিম সেকথা আমাকে জানাতে আসে। আমি ফোন করে ছেলে-বউমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু ততক্ষণে বোধহয় সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। ফলে, আর যোগাযোগ করতে পারিনি। মঙ্গলবার সকালে ছেলে-বউমার পুড়ে মরার খবর পাই। কিন্তু এখন জানতে পারছি যে আমার ছেলে যে পুলিশ পাঠানোর কথা বলেছিল সেই পুলিশতো ওখানে ছিলই। তারপরও এতবড় ঘটনা ঘটে গেল কী করে?

- Advertisement -
Latest news
Related news