নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুর আর শুভেন্দু অধিকারী তৃনমূল কংগ্রেসের কতটা জ্বালা তা ফের করে দিলেন দলের বর্ষীয়ান নেতা মদন মিত্র। আর সেই কারণে যেমন করেই হোক খড়গপুর পুরসভা দখলের ডাক দিয়ে গেলেন প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী। আর কিছুদিন পরেই পৌর নির্বাচন আর সেই পৌর নির্বাচনে সব বোর্ডই দখল করবে তৃনমূল। কি ভাবে দখল করবে সেই ম্যাজিক অবশ্য গোপন রাখলেন কামারহাটির বিধায়ক। মঙ্গলবার খড়গপুর শহরে হাজির থেকে এমনি জানালেন রাজ্যের নব নির্বাচিত পরিবহন চেয়ারম্যান মদন মিত্র। বর্ষীয়ান এই নেতা বলেছেন ‘পৌরসভার প্রতিটি আসন, সারা পশ্চিমবঙ্গ তৃনমূল কংগ্রেস দখল করবে। কী করে দখল করব সেই ম্যাজিকটা অবশ্য বলবনা।’
তবে বাংলার সমস্ত পৌরসভার মধ্যে মদন মিত্র খড়গপুরকে এতটাই প্রাধান্য দিয়েছেন যে তিনি ৩ বার খড়গপুর দখলের কথা বলেছেন। খড়গপুর বিধানসভায় পরাজয় যে দল মানতে পারেনি আর পৌরসভা যে যেকোনও মূল্যে জিততে হবে এই কথা বুঝিয়ে দিয়ে মদন মিত্র বলেছেন, আমি একটা কথা বলতে চাই, জো জিতা ওহি সিকান্দর। যে কোনও মূল্যেই খড়গপুর আমাদের চাই। কুছ ভি হো যায়, লেকিন খড়গপুর চাহিয়ে। মমতা ব্যানার্জী আমাকে যদি এখানে একমাস মাটি কামড়ে থাকতে বলে আমি তাই থাকব কিন্তু খড়গপুর আমাদের চাই।
তিনি আরও বলেছেন , অনেকে এখানে আমাকে মালা পরাতে এসেছিলেন আমি তাঁদের বলেছি আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬টি পুরসভা জিতে দেখাও তবেই আমি মালা পরব। আমাদের প্রতিটি পুরসভা চাই আর খড়গপুর তো চাই-ই। তিনি দলীয় কর্মীদের কাছে বলেন, আমি দরকার হলে সপ্তাহে তিনবার খড়গপুরে আসব কিন্তু আপনাদের কথা দিতে হবে খড়গপুরে বিজেপিকে হারিয়ে। এমন ভাবে বিজেপিকে হারাতে হবে যাতে আগামী ২৫বছর ওদের পতাকা ধরার লোক না থাকে।
খড়গপুরের মতই শুভেন্দু অধিকারীও তাঁর কতটা জ্বালা তা প্রকাশ পেয়েছে তাঁর আরও একটি উক্তিতে। সম্প্রতি কলকাতা কর্পোরেশনে বিপুল জয়কে ব্যঙ্গ করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিৎ ফিরাদ হাকিমকে ছাপ্পাশ্রী পুরস্কার দেওয়া। এই প্রসঙ্গে মিত্র বলেন, শুভেন্দু অধিকারী বলছি আপনি নন্দীগ্রাম ছেড়ে দিন আর আমি কামারহাটি ছেড়ে দিচ্ছি। চ্যালেঞ্জ করছি পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪টি আসনের যে কোনও জায়গায় দাঁড়ান আপনাকে হারাবো। যা শুনে খড়গপুরের এক বিজেপি নেতা বলেন, শুভেন্দু তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত পরাজিত হননি যে অন্য জায়গায় দাঁড়াতে যাবেন।
সারদাকাণ্ডে ২৩মাস জেলে থাকা মদন মিত্র
শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র কটাক্ষ করে বলেছেন, উনি এতবড় দুর্নীতিবাজ যে ওকে ধরতে হলে ভারতের আইনে হবেনা দরকার ইন্টারপোলের আইন। এদিন দলীয় কর্মীদের অনুরোধ মেনে তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে গেয়েছেন রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে আধুনিকগীতি গেয়েছেন কিন্তু সেই গানে থামতেই ফের ফিরে এসেছেন খড়গপুর আর শুভেন্দু প্রসঙ্গেই। শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন তাঁর কানের কাছে ফিসফিস করে কেউ বলে যাবে, আমি শুভেন্দুর কাছে হেরেছি।’ এখন দেখা যাচ্ছে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, গোটা তৃনমূলের কানে কানে বাজছে সেই ফিসফিসানি।
উল্লেখ্য পরিবহন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার জন্যই তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আইএনটিটিইউসি থেকে সংবর্ধনা জানানোর যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল তাতেই খড়গপুর ও খাকুড়দায় হাজির হয়েছিলেন তিনি। হাজির ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি শৈবাল গিরি, খড়গপুরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জহরলাল পাল সহ শহরের নেতারা।