নিজস্ব সংবাদদাতা: খড়গপুরের সালুয়ায় রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণ শিবিরে রাইফেল প্রশিক্ষণ চলাকালীন গুলি ছিটকে এসে জখম হল এক স্কুলছাত্রী। সালুয়ায় ইএফআর ক্যাম্প থেকে বেশকিছুটা দুরে প্রশিক্ষণের জায়গায় ঘটনাটি ঘটে দুপুর ১টা নাগাদ।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/10/Screenshot_20211030-035813_Public.jpg)
তড়িঘড়ি ওই ছাত্রীকে প্রথমে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত ওই ছাত্রীর নাম সন্ধ্যারানী মাহাত বলে জানা গেছে। স্থানীয় টাঙাশোল গ্রামের বাসিন্দা ক্লাশ এইটের ছাত্রী জল আনার জন্য একটি সাবমার্সিবল পাম্পে যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/10/Screenshot_20211030-035652_Public.jpg)
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সন্ধ্যায় চিকিৎসকরা সেই গুলি বের করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে ঘটনায় খুবই বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছে ১৪বছরের ওই বালিকা। গুলিটি তার ডান হাতের ওপরের দিকে কাঁধের কাছে লাগে। বুকে কিংবা মাথায় অথবা পেটে লাগলে মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত ছিল বলেই চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। এই ধরনের ঘটনা আগেও একাধিকবার হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় মানুষেরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলে জানিয়ে বলেছেন, ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের প্রশিক্ষণ চলার সময় এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে। বালিকা এখন স্থিতিশীল। পুলিশ সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে এই চিকিৎসা করাচ্ছে। সন্ধ্যা ১০০শতাংশ সুস্থ না হওয়া অবধি পুলিশ পরিবারের পাশে সমস্ত রকম সাহায্য নিয়ে হাজির থাকবে।
ঘটনাসূত্রে জানা গেছে ঘটনাটি ঘটেছে
খড়গপুর গ্রামীণের টাঙাশোল গ্রামের কাছেই। এই গ্রাম লাগোয়াই জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের বন্ধুক প্রশিক্ষণ বা রাইফেল স্যুটিং রেঞ্জটি। এই জায়গা থেকে ২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ইএফআরের সদর দপ্তর। সেখানেই এদিন চলছিল ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের জওয়ানদের বন্দুক প্রশিক্ষণ । সেসময়ই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। বাড়ি থেকে সামান্য দুরেই পানীয়জল আনতে যাচ্ছিল সন্ধ্যা।
![](http://kgpbangla.in/wp-content/uploads/2021/10/Screenshot_20211030-035730_Public.jpg)
আচমকাই একটি গুলি ছিটকে লাগে তার ডান বাহুর ওপরে। সেসময় জল আনতে গিয়েছিল বাড়ির বাইরে। সঙ্গে সঙ্গে আহত ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে তার গুলিটি বের করা যায়নি। ডাক্তাররা ছাত্রীকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন। সেখানেই সফল হয়েছে তার অস্ত্রপচার।
শুধু টাঙাশোল নয়। আশেপাশে তেলিঘানা, পালঝারি, কেঁউদিশোল, খয়রাচাটির অধিবাসীরাও অভিযোগ করেছেন এর আগেও একাধিকবার সালুয়ার ইএফআর ক্যাম্পে সশস্ত্র পুলিশের ট্রেনিংয়ের সময় দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কখনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, কখনও বয়স্ক ব্যক্তির গায়ে এভাবে গুলি ছিটকে এসে লাগার মতো ঘটনার সাক্ষী তাঁরা। জঙ্গলে গবাদিপশু চরাতে গিয়ে, জ্বালানি কাঠ পাতা সংগ্ৰহ করতে গিয়ে কিংবা এক গ্রাম থেকে অন্যগ্রামে যাওয়ার পথে গুলিতে আহত হয়েছেন পথচলতি মানুষ। তাঁদের দাবি বিষয়টি নিয়ে বহুবার পুলিশকে জানানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মানুষের দাবি প্রশিক্ষনের জায়গা উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হোক যাতে এলাকার বাইরে গুলি না যেতে পারে।